‘অনুস্বার বিসর্গ’ – জসীম উদ্দীন

'অনুস্বার বিসর্গ'

দুই জামাই। বড় জামাই সংস্কৃত পড়ে মস্তবড় পণ্ডিত! ছোট জামাই মোটেই লেখাপড়া জানে না। তাই বড় জামাই যখন শ্বশুর বাড়ি আসে, সে তখন আসে না। সেবার ঈদের সময় শ্বশুর ভাবলেন, দুই জামাইকে একত্র করে ভালোমতো খাওয়াই। তাছাড়া তাদের দুইজনের সঙ্গে তো আলাপ পরিচয় থাকা উচিত।



কিন্তু বড় জামাইর কথা শুনলে ছোট জামাই আসবে না। তাই বড় জামাইর আসার কথা গোপন করে সে ছোট জামাইকে নিমন্ত্রণ দিল। ছোট জামাই শ্বশুর বাড়ি এসে শুনল বড় জামাইও আসতেছে।হায়! হায়! কি করে সে বড় জামাইর সংগে কথাবার্তা বলবে! সে শুনেছে বড় জামাই সংস্কৃত ছাড়া কথাই বলে না।

বড় জামাই তখন বাড়ির সামনে এসে পড়েছে; শালা-শালীদের মুখে এই খবর শুনে ছোট জামাই ভয়ে খাটের তলায় গিয়ে লুকিয়ে রইল। বড় জামাই এসে শালা-শালীদের সঙ্গে সংস্কৃতে কথা বলতে লাগল। শালা-শালীরাও দুই এক কথায় সংস্কৃতেই তার উত্তর দিচ্ছিল। সংস্কৃত ভাষায় প্রায় প্রতি শব্দেই একটা অনুস্বার (ং) বা বিসর্গ (ঃ) থাকে।

বড় জামাইর মুখে সংস্কৃত শুনে সে ভাবল, অনুস্বার বিসর্গ দিলেই যদি সংস্কৃত হয় তবে সে খাটের নিচে বসে আছে কেন? সে খাটের তলা হতে বলে উঠল “অনুস্বরং দিলেং যদিং সংস্কৃতং হং, তবেং কেনং ছোটং জামাইয়ং খাটেরং তলেং রং?” শুনে শালা-শালীরা তাঁকে খাটের তলা হতে উঠিয়ে আনল। ছোট জামাইর সংস্কৃত শুনে বড় জামাইও মৃদু হাসল।

 

Read more

‘অচ্ছুৎ’ – জসীম উদ্দীন

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *