আয়ুর্বেদীক শাস্ত্রের মহৌষধ হরতকির নানা গুন ও উপকারিতা 

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হরতকি খুবই পরিচিত একটা নাম এবং এর নানা উপকারিতা ও গুনের বর্ণনা আছে। তেঁতো স্বাদের এই ফলটির নানা রকম গুনাগুন রয়েছে এবং এই গুন গুলো আমাদের শরীরের জন্য মহৌষধ হিসাবে কাজ করে। অনেক প্রচীনকাল থেকেই মাবন দেহের নানা সমস্যা সমাধানে হরতকির ব্যবহার হয়ে আসছে।হরতকির নানা গুন ও উপকারিতা  

এতে রয়েছে ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেবল সমৃদ্ধ উপাদান। 

 

হরতকি কেন খাওয়া উচিত , খেলে কী কী উপকার হবে? সেসব সম্পর্কেই আলোচনা করা হলো-

 

১/  হরতকি বদহজম, আমাশয়, এবং জন্ডিস নিরাময়ে ভিষন উপকারী।

 

২/ অনেকের ঋতুস্রাবের সময় পেটে প্রচন্ড ব্যথা হয়। এই সময় হরতকি ভেজানো পানি খেলে উপকার পাওয়া যায়।

 

৩/ মূত্রনালীর অসুখে ও বাত ব্যথায় হারতকির রসের  তুলনা হয় না।

 

৪/ এই ফলের রস জ্বর, কাশি, হাঁপানি, পেট ফাঁপা, ঢেকুর উঠা, বর্ধিত যকৃত ইত্যাদি সমস্যার মহৌষ। 

 

৫/  বার বার বমি হলে এবং ঘন ঘন পানির তৃষ্ণা পেলে হরতকি ভিজানো পানি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। 

 

৬/ ফুসফুস ও শ্বাসনালী ঘটিত যে কোন সমস্যা হরতকির ব্যবহার অতি প্রচীনকাল থেকে হয়ে আসছে । বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রে এই সব রেগের চিকিৎসায় হরতকির ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে । 

 

৭/ যাদের অশ্ব রোগ আছে এবং তাদের জন্য হরতকি গুড়া মহৌষধ। কারন প্রতিদিন ১ চামচ হরতকি গুড়া ঘোলের সাথে মিশিয়ে খেলে নিশ্চিত উপকার পাওয়া যায়।

 

৮/ হুট করে চোখে কোন সমস্যা দেখা দিলে হরতকি থেতো করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি দিয়ে বার বার চেক ধুয়ে নিলে চোকের সমস্যাও দূর হয়।

 

৯/  হঠাৎ গলার স্বর বসে গেলে মুথা ও হরিতকি গুড়া মধুর সঙ্গে বেটে অথবা যোয়ান ও হরতকি গুড়া পানির সাথে মিশিয়ে  পান করলে স্বর স্বাভাবিক হয়। 

 

১০/ পিত্তে হঠাৎ করে ব্যথা শুরু হলে সামান্য ঘিয়ের সাথে হরতকি গুড়া মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যা। 

 

১১/ ত্রিফলা বলতে বোঝায় আমলকি, হরতকি ও বহেরাকে।এগুলো গুড়া প্রতিদিন খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে । আধুনিক যে কোন এ্যালোপ্যাথিক ঔষধের তুলনায় ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমাবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর।

 

১২/ শুধু মাত্র কোলেস্টেরলই নয় প্রসার ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও হরতকি গুড়া খুবই উপকারী।

 

১৩/ হরতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

 

১৪/ গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন।

 

১৫/ দাঁতে ব্যথা হলে হরতকি গুঁড়া লাগান, ব্যথা দূর হবে।

 

এখন পর্যন্ত হরতকির তেমন কোন প্বার্শপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি। এটি পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক  স্নায়ুবিক শক্তিবর্ধক ইত্যাদি রোগের নিরাময়ে খুবই কার্যকর। যুগে যুগে বিভিন্ন চিকিৎসা শাস্ত্র হরতকির ব্যবহার হচ্ছে এবং কার্যকরী ভাবে উপকৃতও হচ্ছে মানুষেরা।

 

লিখেছেন –

ত্রোপা চক্রবর্তী 

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *