করোনাভাইরাস যুদ্ধটা করে মূলত ফুসফুসের সাথে । যার ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, প্রাথমিক ভাবে হালকা শ্বাসকষ্ট দিয়ে শুরু হলেও আস্তে আস্তে তা ফুসফুসে ক্ষত তৈরী করে । তাই ফুসফুসের ব্যায়াম করাটা খুবই জরুরি । নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুসকে সুস্থ রাখে ।
বিশেষত হাঁপানি বা ক্রোনিক ব্রংকাইটিসের রোগীদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে এই ব্যায়াম খুবই কার্যকরী।
১. মেডিটেশন বা ধ্যানঃ
প্রথমেই নিরিবিলি একটা স্থান নির্ধারণ করুন । মেরুদন্ড সোজা করে বসে চোখ বন্ধ করে পরপর কয়েকবার গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে এর গতি কমে আসবে ।প্রথমে প্রশ্বাস ছাড়ার সময় এক গুনবেন, তার পরেরবার দুই এভাবে পাঁচ পর্যন্ত । পুনরায় আবার এক দিয়ে শুরু করবেন । ব্যায়ামটি দিনে ১০ মিনিট করবেন ।
২.চক্রাসনঃ
সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন । আস্তে আস্তে হাঁটু দুটি ভাঁজ করে দুই হাতের জোরে নিতম্বসহ শরীরটি উপরে তুলুন । হাঁটু যতটা সম্ভব ভাঁজ করে গোড়ালি হাত দিয়ে স্পর্শ করুন । শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এইভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকুন । একই ভাবে ৫ বার করুন ।
৩.বেলো ব্রিদ্রিংঃ
মুখ বন্ধ করে নাক দিয়ে ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস নিন। প্রতি সেকেন্ডে তিনবার শ্বাস নেয়া ও ছাড়ার চেষ্টা করুন । শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময়টি একই রকম হবে ।
৪. ব্রিদ্রিং এক্সারসাইজঃ
বুক ভরে লম্বা নিঃশ্বাস নেয়া আর ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ার মাধ্যমে ফুসফুসকে মজবুত করা যায় । বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার ফলে পাঁজরের হাড় বা রিবস বাইরের দিকে সরে এসে ডায়াফ্রামের পেশি সংকুচিত হয়ে নিচে নেমে যায় । ফলে ফুসফুসের প্রসারণের জন্য যথেষ্ট জায়গা পায় । আবার নিঃশ্বাস ছেড়ে দিলে রিবস এবং ডায়াফ্রমের পেশি পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসে । এর ফলে শরীর অতিরিক্ত অক্সিজেন পায় বেশি শক্তি যোগায় ও ক্লান্তি দূর করে ।
৫.প্রোন পজিশনঃ
বুকে বালিশ দিয়ে উপুড় হয়ে শোন । জোরে শ্বাস নিন। ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন । এবার আস্তে আস্তে ছাড়ুন । বারবার এরকম করুন । এই পজিশন করোনা রোগীর জন্য বেশ উপকারী । এটি ফুসফুস থেকে রক্তে অক্সিজেন বিনিময়ে সহায়তা করে ।
৬. বাম নাক আঙ্গুল দিয়ে বন্ধ করে ডান নাক দিয়ে শ্বাস নিন। ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রেখে আস্তে আস্তে ডান নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন । আবার ডান নাক বন্ধ করে দিয়ে বাম নাক দিয়ে একইভাবে শ্বাস নিন আর ছাড়ুন । এটি শ্বাসযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
৭. সকাল-বিকাল লম্বা শ্বাস নিয়ে বেলুন ফোলান । এটি শ্বাস – প্রশ্বাসের অন্যান্য সহায়ক পেশীগুলোকে কর্মক্ষম রাখে ।