বাংলাদেশের অতি পরিচিত একটি ফল হলো তাল। শহরে কোন কোন বাসায় আর গ্রামের সর্বত্র তাল গাছ দেখা যায়।সবুজ রঙ্গের পাতাগুলো বড় হাত পাখার মত দেখতো। এটার কোন শাখা প্রশাখা নেই, একবীজ পত্রী উদ্ভিদ এটি। এর বীজ বেশ বড় হয়। তাল ফল কাঁচা ও পাঁকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে পাওয়া যায় কাঁচা তালের সাস, যা খেতে খুবই রসালো ও সুস্বাদ। এতে রয়েছে ভিটামিন – এ ও সি। আর ভাদ্র আশ্বিন মাসে পাঁকা গাঢ়ো হলুদ বা কমলা রঙ্গের তাল। পাকা তালের রসের পিঠা, পায়েস, ক্ষীর খুব জনপ্রিয় খাবার।
তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়াম সহ আরও অনেক খনিজ উপাদান।আরও আছে অ্যান্টি অক্সিজেন ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান।
বাংলাদেশ ছাড়াও এটি আরও বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। যেমন -ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন সহ আরও নানা দেশে।
★তালগাছের কাণ্ড, বাকল, ফল ও পাতা অনেক উপকারী। নিম্নে এর উপকারিতাগুলো দেয়া হলো-
১/ তাল গাছের পাতা হতে পাতাপাখা, ঝুড়ি, মাদুর, ঘরের ছাউনি এবং বাকল হতে রশি, ব্রাশ তৈরি হয়।তাল পাতার পাখা খুবই জনপ্রিয়।
২/ এর পুষ্পমঞ্জুরীর মাথা কেটে রস বের করা হয়। রস ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ। রস হতে মিছরি, গুড়, চিনি ইত্যাদি তৈরি হয়।
৩/ তাল গাছের কাঠ খুব শক্ত, মজবুত ও টেকসই। ঘরের খুঁটি, আসবাবপত্র, বিভিন্ন গৃহস্থালী সামগ্রী ও নৌকা তৈরিতে তাল কাঠের ব্যবহার করা হয়।
৪/ তালে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা আমাদের হাড়ের ক্ষয়রোধে ও দাঁতের যত্নে খুবই উপকার।
৫/ তালে রয়েছে ভিটামিন – বি। যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৬/ তালে রয়েছে আশ। যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
৭/ গরমে ঘারাচির যন্ত্রণা দূর করতে তাল খুবই উপকার। তালের উপরের পাতলা স্তরটি সরিয়ে নিয়ে তালের শাঁসের ভিতরের রস ঘামাচি আক্রান্ত জায়গায় লাগালে ঘামাচির ও চুলকানি নিমিশেই দূর হয়।
লোকজ চিকিৎসায় তাল ও তাল গাছের অনেক ব্যবহার হয়।মৌসুমি ও সুস্বাদু ফল হিসাবে সকলেরই এই ফল খাওয়া উচিত । পাখি তাল গাছের পাতায় বাসা বাঁধে যা দেখতে বেশ আকর্ষণীয়।
লিখেছেন – ত্রোপা চক্রবর্তী