ইডেনে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে সহজেই পাঁচ উইকেটে হারিয়ে এবারের আইপিএল-এ টানা তৃতীয় জয় তুলে নিলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। জয়ের নায়ক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, কেন উইলিয়ামসনরা। সাকিব শনিবার ব্যাট-বলে দুর্দান্ত খেলে তার সাবেক দলকে হারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফলে চলতি আইপিএল-এ তিনটির মধ্যে দু’টি ম্যাচেই হারল কেকেআর।
এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দরাবাদের উইলিয়ামসন। ক্রিস লিন (৪৯) ও দীনেশ কার্তিক (২৯) ছাড়া কেকেআর-এর কোনো ব্যাটসম্যানই বড় রান পাননি। ভুবনেশ্বর কুমার তিনটি এবং বিলি স্ট্যানলেক ও সাকিব দু’টি করে উইকেট নেন। কেকেআর ৮ উইকেটে ১৩৮ রান করে। ১৯ ওভারেই সেই রান টপকে যায় হায়দরাবাদ।
হায়দরাবাদের বোলারদের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দুর্দান্ত ফিল্ডিংও কেকেআর-এর রান না বাড়ার একটা বড় কারণ। স্ট্যানলেকের বলে অসাধারণ ক্যাচ ধরে নীতীশ রানাকে (১৮) ফেরান মণীশ পাণ্ডে। সাকিবের বলে দারুণ তৎপরতার সঙ্গে ক্যাচ ধরে সুনীল নারিনকে (৯ ফেরান) উইলিয়ামসন। নিজের বলেই দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে লিনকে ফেরান সাকিব। আন্দ্রে রাসেলও (৯) এদিন রান পাননি। স্ট্যানলেকের বলে চমকপ্রদ ক্যাচ নিয়ে এই ক্যারিবিয়ান তারকাকে আউট করেন মণীশ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। জয়ের নায়ক অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (৫০)। ঋদ্ধিমান সাহা ২৪ ও সাকিব আল হাসান ২৭ রান করেন। উইলিয়ামসন আউট হয়ে যাওয়ার পর কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল হায়দরাবাদ। তবে পুরনো দলের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ইউসুফ পঠান (৭ বলে ১৭ অপরাজিত)।রানের পাহাড় গড়েও হলো না, হারের হ্যাটট্রিক মুম্বইয়ের
দুই দলই আইপিএলে জয়ের মুখ দেখেনি। একদিকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অপরদিকে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ২টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। মুম্বই তাও জয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। কিন্তু দিল্লির পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয়। এমন এক ম্যাচে প্রথম জয় পেল দিল্লি। আর রানের পাহাড় গড়েও হার এড়াতে পারল না মুম্বাই। হারের হ্যাটট্রিক মেনে নিতে হলো।
তৃতীয় জয়
দুই দলই শনিবার প্রথম জয়ের লক্ষ্যে। ওয়াংখেড়েতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। শুরু থেকেই অবশ্য মুম্বই ব্যাটসম্যানরা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটতে থাকেন। দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব, ও ইভিন লুইসের চওড়া ব্যাটে ভর করে তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকে মুম্বই। ৯ ওভারে সংগ্রহ করে ১০২ রান। এরপরেই ওই ওভারে সূর্যকুমার আউট হয়ে যান। এরপর থেকে নিয়মিত হারে উইকেট পড়তে থাকে মুম্বই দলের। রানের গতিও বেশ কিছুটা কমে যায়। ব্যাটহাতে রোহিত শর্মা বা পোলার্ড কেউই আর রানেত গতিকে প্রাথমিক উচ্চতায় ধরে রাখতে পারেননি। ট্রেন্ট বোল্ট ও রাহুল তেওয়াতিয়া দুটি করে উইকেট দখল করেন। মহম্মদ শামির সংগ্রহে আসে একটি উইকেট। মুম্বইয়ের ইনিংসের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিল ২০০ পেরিয়ে যেতে পারে রানসংখ্যা। কিন্তু শেষ ১১ ওভারে মাত্র ৯২ রান সংগ্রহ করে মুম্বই। মোট রানসংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৯৪ রানে। এরপর ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল দিল্লি শিবিরকে।
অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর ও জেসন রয় শুরুটা ভালোই করেছিলেন। প্রথম পাঁচ ওভারেই ৫০ রানের গণ্ডী পেরিয়ে যায় দিল্লি। কিন্তু সেই ওভারেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান গম্ভীর। মোস্তাফিজের শিকার হন তিনি।
তবে আগাগোড়ে শক্ত হাতে খেলা ধরে রেখেছিলেন অন্যপ্রান্তের ব্যাটসম্যান জেসন। অন্যদিকে রিষভ পন্থ, ম্যাক্সওয়েল ও সুরেশ আইয়াররা সঙ্গ দিলেও আসল কাজের কাজটি করেন জেসন। খেলা শেষ পর্যন্ত গড়ালেও দিল্লির জয় নিশ্চিত করেন তিনিই। ব্যাক্তিগত ৯১ রানে খেলা শেষে অপরাজিত থাকেন জেসন। এই নিয়ে পরপর তিনটি ম্যাচে পরাস্ত হলো মুম্বই। স্বাভাবিকভাবেই গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এর ফলে অনেকটাই চাপে পড়ে গেল।