ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩১৫ রানের পাহাড় ডিঙিয়ে জয় পেল স্বাগতিক ভারত। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে ব্যাক ফুটে চলে যাওয়া ভারত পরপর দুই খেলায় জিতে ট্রফি নিজেদের করে নেয়।
আগের ম্যাচে ভিশাখাপত্তনমেতে ৩৮৭ রান করে ১০৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পাওয়া বিরট কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি রোববার কটকে জিতে ৪ উইকেটে। টানা দুই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল ভারত।
রোববার প্রথমে ব্যাট করে নিকোলাস পুরান ও কায়রান পোলার্ডের ঝড়ো ইনিংসে ৩১৫ রানের পাহাড় গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। উদ্বোধনীতে তারা ২১.২ ওভারে গড়েন ১২২ রানের জুটি। ৬৩ রান করে ফেরেন রোহিত। দলীয় ১৬৭ রানে আউট হওয়ার আগে ৭৭ রান করেন রাহুল।
এরপর রবিন্দ্র জাদেজার সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যান বিরাট কোহলি। জয় থেকে ৩০ রান দূরে থাকতেই কিমো পাওয়েলের বলে স্ট্যাম্প ভেঙে যায় ভারতীয় অধিনায়কের। সাজঘরে ফেরার আগে ৮১ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৮৫ রান করেন কোহলি।
টানা দুই জয়ে
এরপর ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজা। ভারতীয় এ তারকা ক্রিকেটার ৩১ বলে ৪টি চারের সাহায্যে অপরাজিত ৩৯ রান করেন। শেষ দিকে তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ওভারের ৮ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক ভারত।
রোববার ভারতের কটকের বড়বাতি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে স্লোথমোশনে ব্যাটিং করেন ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস। উদ্বোধনীতে শাই হোপের সঙ্গে ১৫ ওভার ব্যাটিং করে মাত্র ৫৭ রানের জুটি গড়েন লুইস। ৫০ বল খেলে তিনটি চারের সাহায্যে ২১ রান করে ফেরেন লুইস।
এরপর মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে ফেরেন অন্য ওপেনার শাই হোপ। সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে ১০২* ও ৭৮ রান করা হোপ রোববার তৃতীয় ম্যাচে ৫০ বলে ৫টি চারের সাহায্যে করেন ৪০ রান।
তৃতীয় উইকেটে সিমরন হিতমারকে সঙ্গে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন রোস্টন চেজ। প্রথম ওয়ানডেতে চেন্নাইয়ে ১৩৯ রান করা হিতমার এ দিন দলের স্কোর বাড়াতে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে বিপদে পড়ে যান। ৩৩ বলে দুটি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৭ রান করতেই বিপদে পড়েন হিতমার। ৪৮ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন রোস্টন চেজ।
টানা দুই জয়ে
৩১.৩ ওভারে ১৪৪ রানে প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কায়রন পোলার্ড ও নিকোলাস পুরান। পঞ্চম উইকেটে তারা ৯২ বল খেলে ১৩৫ রানের জুটি গড়েন। তাদের এই জুটিতেই চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পুঁজি পায় ক্যারিবীয়রা।
একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন নিকোলাস পুরান। শারদুল ঠাকুরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরার আগে ৬৪ বল খেলে ১০টি চার ও তিন ছক্কায় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন পুরান। তার বিদায়ের পর দলের স্কোর বাড়াতে ইনিংসের শেষ দিকে তাণ্ডব চালান পোলার্ড। ৫১ বল খেলে তিনটি চার ও দৃষ্টিনন্দন ৭টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৪ রান করেন ক্যারিবীয় এ অধিনায়ক। পুরান-পোলার্ডের ঝড়ে ৫ উইকেটে ৩১৫ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে উইন্ডিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩১৫/৫ (নিকোলাস পুরান ৮৯, কায়রন পোলার্ড ৭৪*, শাই হোপ ৪২, রোস্টন চেজ ৩৮, সিমরন হিতমার ৩৭, এভিন লুইস ২১)।
ভারত: ৪৮.৪ ওভারে ৩১৬/৬ (কোহলি ৮৫, রাহুর ৭৭, রোহিত, ৬৩, জাদেজা ৩৯*)। ফল: ভারত ৪ উইকেটে জয়ী।
তিন ম্যাচের সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে জয়ী।