ড.নীলিমা ইব্রাহিম এর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

Nilima Ibrahim

ড.নীলিমা ইব্রাহিম  তিনি বাংলার নারীজাগরণের পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, ও সমাজকর্মী। নানা প্রতিকূলতা আত্মোন্নয়নে কাজ করেছেন। সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর অনমনীয় দৃঢ়তা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ ও নারী-উন্নয়সংস্থা এবং বৃদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমীর ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি, বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতি ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির জীবন সদস্য ছিলেন।

ড.নীলিমা ইব্রাহিম বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভানেত্রী এবং কনসার্নড উইমেন ফর ফ্যামিলি প্ল্যানিং-এর বোর্ড অব গবর্নরসের চেয়ারপার্সন হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব উইমেন-এর সভানেত্রী এবং অ্যাসোসিয়েটেড কান্ট্রি উইমেন অব দি ওয়ার্লাল্ড-এর সাউথ ও সেন্টাল এশিয়ার এরিয়া প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি আমৃত্যু মানুষের শুভ ও কল্যাণী চেতনায় আস্থাশীল ছিলেন। মুক্তবুদ্ধি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও উদার মানবিকতাবোধই ছিল তাঁর জীবনদর্শন।

  • বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ জন্মগ্রহণ করেন – ১১ অক্টোবর, ১৯২১ সালে।
  • এই সাহিত্যিকের পৈত্রিক নিবাস – বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রাম।
  • বিশিষ্ট এই সাহিত্যিকের পিতার নাম – প্রফুল্লকুমার রায়চৌধুরী এবং মাতা কুসুমকুমারী দেবী।
  • এই সাহিত্যিকের শিক্ষাজীবন – তিনি খুলনা করোনেশন বালিকা বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরিক্ষায় পাস করেন ১৯৩৫ সালে। কলকাতা ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন থেকে আইএ (১৯৩৭) এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএবিটি (১৯৩৯) পাস করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয়ে এম.এ (১৯৪৩) পাস করেন। 
  • মেয়েদের মধ্যে প্রথম ‘বিহারীলাল মিত্র গবেষণা’ বৃত্তি লাভ করেন – নীলিমা ইব্রাহিম।
  • তিনি ‘বিহারীলাল মিত্র গবেষণা’ বৃত্তি লাভ করেন – ১৯৪৫ সালে।
  • তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন – ১৯৫৯ সালে।
  • তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল – ‘সামাজিক ও রাজনৈতিক পটভূমিকায় ঊনবিংথশ শতাব্দীর বাংলা নাটক’।
  • তিনি ঢাকার আলিয়াঁসে ফ্রাঁসেস থেকে ইন্টারমিডিয়েট ইন ফ্রেন্স-এ ডিপ্লোমা লাভ করেন – ১৯৫৯ সালে।
  • কলকাতার লরেটো হাউজে লেকচারার হিসেবে চাকরি করেন – ১৯৪৩-৪৪ সাল পর্যন্ত।
  • তিনি ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের লেকচারার ছিলেন – ১৯৪৪-৪৫ সাল পর্যন্ত।

ড.নীলিমা ইব্রাহিম এর জীবনী

  • তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে যোগদান করেন – ১৯৫৬ সালে।
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর পদে উন্নীত হন – ১৯৭২ সালে।
  • তিনি বাংলা বিভাগের প্রধনের দ্বায়িত্ব পালন করেন – (১৯৭১-৭৫) সাল পর্যন্ত।
  • বাংলা একাডেমীর অবৈতনিক মহাপরিচলকের দ্বায়িত্ব পালন করেন – (১৯৭৪-৭৫) সাল পর্যন্ত।
  • তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন – (১৯৭১-৭৭) পর্যন্ত।
  • তিনি বার্লিন, মিউনিক ও ফ্রাংফুর্টে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক বিশ্বসমবায় সম্মেলন’-এ পূর্বপাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন – ১৯৬৮ সালে।
  • নায়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক ওয়ান এশীয় সম্মেলন’-এ অংশগ্রহণ করেন – ১৯৭৩ সালে।
  • তিনি মস্কোয় অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বশান্তি কংগ্রেস’, হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বনারী বর্ষ’-এ যোগ দেন – ১৯৭৪ সালে।
  • মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বনারী সম্মেলন’-এ যোগ দেন – ১৯৭৫ সালে।
  • তাঁর পুরো নাম – নীলিমা রায় চৌধুরী।
  • ’আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ কোন জাতীয় রচনা – মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ।
  • নীলিমা ইব্রাহিম- ’আমি বীরাঙ্গনা বলছি ’ গ্রন্থের রচয়িতা ।
  • ’আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ গ্রন্থেটি প্রকাশিত হয় – প্রথম খন্ড ১৯৯৬ এবং ২য় খন্ড ১৯৯৭ সালে।
  • পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত নারীদের নিয়ে লেখা মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর গ্রন্থ – ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’।
  • ’বিশ শতকের মেয়ে’ কোন জাতীয় রচনা – উপন্যাস।
  • ’বিশ শতকের মেয়ে’ উপন্যাসটির রচয়িতা – নীলিমা ইব্রাহিম
  • তাঁর রচিত ‘বিশ শতকের মেয়ে’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় – ১৯৫৮ সালে।
  • ’রমনা পার্কে’ কোন জাতীয় রচনা – ছোটগল্প।
  • ’রমনা পার্কে’ ছোটগল্পটি রচনা করেন – নীলিমা ইব্রাহিম।
  • তাঁর রচিত ‘রমনা পার্কে’ ছোটগল্পটি প্রকাশিত হয় – ১৯৬৪ সালে।
  • তাঁর রচিত গবেষণা প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে – ‘শরৎ-প্রতিভা’ (১৯৬০), ‘বাংলার কবি মধুসূদন’ (১৯৬১), ‘ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি সমাজ ও বাংলা নাটক’ (১৯৬৪), ‘বাংলা নাটক : উৎস ও ধারা’ (১৯৭২), ‘বেগম রোকেয়া’ (১৯৭৪),, ‘বাঙ্গালীমানস ও বাংলা সাহিত্য’ (১৯৮৭), ‘সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা প্রসঙ্গ’ (১৯৯১) প্রভৃতি।

ড.নীলিমা ইব্রাহিম এর জীবনী

  • তাঁর রচিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে – ‘এক পথ দুই বাক’ (১৯৫৮), ‘কেয়াবন সঞ্চারিনী’ (১৯৫৮), এবং ‘বহ্নিবলয়’ (১৯৮৫) প্রভৃতি।
  • ’ডার্ক ফরেস্ট’ কোন জাতীয় রচনা – নাটক।
  • ’ডার্ক ফরেস্ট’ নাটকটির রচনা করেন – নীলিমা ইব্রাহিম
  • তাঁর রচিত ‘ডার্ক ফরেস্ট’ নাটকটি প্রকাশিত হয় – ১৯৭৪ সালে।
  • তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে – ‘দুয়ে দুয়ে চার’ (১৯৬৪), ‘রৌদ্রদগ্ধ বিকেল’ (১৯৭৪), ‘সূর্যাস্তের পর’ (১৯৭৪) এবং ‘নব মেঘদূত’ প্রভৃতি।
  • ’শাহী এলাকার পথে পথে’ কোন জাতীয় রচনা – ভ্রমনকাহিনী।
  • ’শাহী এলাকার পথে পথে’ ভ্রমনকাহিনীটি রচনা করেছেন – নীলিমা ইব্রাহিম
  • ১৯৬৩ সালে-’শাহী এলাকার পথে পথে’ ভ্রমনকাহিনীটি প্রকাশিত হয় ।
  • ’বিন্দু-বিসর্গ’ কোন জাতীয় রচনা – আত্মজীবনী।
  • ’বিন্দু-বিসর্গ’ আত্মজীবনী গ্রন্থটি রচনা করেন – নীলিমা ইব্রাহিম।
  • ১৯৯১ সালে-’বিন্দু-বিসর্গ’ আত্মজীবনী গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ।
  • তাঁর রচিত অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে – ‘এলিনর রুজভেল্ট’ (১৯৫৫), ‘কথাশিল্পী জেমস ফেনিমোর কুপার’ (১৯৬৮), ‘বস্টনের পথে’ (১৯৬৯) ইত্যাদি।
  • বিশিষ্ট এই সাহিত্যিক ’একুশে পদক’ লাভ করেন – ২০০০ সালে।
  • তিনি ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ লাভ করেন – ১৯৬৯ সালে।
  • তিনি ’বেগম রোকেয়া পদক’ লাভ করেন – ১৯৯৬ সালে।
  • বিশিষ্ট এই সাহিত্যিক সমাজকর্ম ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বহু পুরস্কার ও পদকে ভুষিত হয়েছেন সেগুলি হলো – ‘জয়বাংলা পুরস্কার’ (১৯৭৩), ‘মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার’ (১৯৯৭), ‘লেখিকা সংঘ পুরস্কার’ (১৯৮৯), ’বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী স্মৃতিপদক’ (১৯৯০), ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ (১৯৯৬), ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার’ (১৯৯৭), ‘শের-ই-বাংলা পুরস্কার’ (১৯৯৭), ‘থিয়েটার সন্মাননা পদক (১৯৯৮) প্রভৃতি।
  • বিশিষ্ট এই অধ্যাপিকা মৃত্যুবরণ করেন – ১৮ জুন, ২০০২ সালে।

 

Read More

আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *