ঢাকা জেলার সংক্ষিপ্ত তথ্যাবলী
ঢাকা জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল । বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর এই জেলায় অবস্থিত । আয়তন : ১৬৮৩.২৭ বর্গ কিঃ মিঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মোঘল পূর্ব যুগে কিছু গুরুত্বধারণ করলেও শহরটি ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করে মোঘল যুগে । ১৬১০ খ্রিষ্টিাব্দে ইসলাম খান চিশতি সুবাহ বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং সম্রাটের নামানুসারে এর নামকরণ করেন জাহাঙ্গীরনগর । প্রশাসনিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর নামকরণ হলেও সাধারণ মানুষের মুখে ঢাকা নামটিই থেকে যায় । নদীপথের পাশে অবস্থানের কারণে ঢাকা প্রাক মোঘল যুগেই স্থানীয় বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল । এখানে উচ্চমান সম্পন্ন সূতিবস্ত্র উৎপাদিত হত যা মসলিন নামে পরিচিত । ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২,১৯৬৬,১৯৭০ সংগ্রামের ফসল হিসেবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং পরিচিতি লাভ করে । একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্টের রাজধানী হিসেবে ঢাকা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কার্যাকলাপ এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্ররূপে মর্যাদা লাভ করে । ঢাকা বিভাগের মোট ১৭টি জেলা রয়েছে । যেমন-
ঢাকা
ফরিদপুর
গাজীপুর
গোপালগঞ্জ
জামালপুর
কিশোরগঞ্জ
মাদারীপুর
মুন্সিগঞ্জ
ময়মনসিংহ
নারায়ণগঞ্জ
নরসিংদী
নেত্রকোনা
রাজবাড়ী
শরিয়তপুর
শেরপুর
টাঙ্গাইল
পরবর্তীতে ঢাকা বিভাগের জেলাওয়ারী দর্শনীয় স্থানগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হচ্ছে ।
ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
ঐতিহাসিক স্থানসমূহ :
ঢাকেশ্বরী মন্দির, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, হোসেনী দালান, ছোট কাটরা, বড় কাটরা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (লেক, জাবি বোটানিক্যাল গার্ডেন, সংশপ্তক), কার্জন হল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভবন (পুরাতন ঢাকা বিশ্যাবিদ্যালয় কলা ভবন), সাত গম্বুজ মসজিদ, তারা মসজিদ, ঢাকা গেইট, পরীবিবির মাজার পার্ক ।
বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থান :
রমনা পার্ক, সোহরওয়ার্দী উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঢাকা শিশু পার্ক, বুড়িগঙ্গা নদী, ঢাকা চিড়িয়াখানা, বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, নন্দন পার্ক, ফ্যান্টাসী কিংডম ।
স্মৃতিসৌধ ও স্মারক :
জাতীয় শহীদ মিনার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ (রায়ের বাজার), শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ (মিরপুর), অপরাজেয় বাংলা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), আসাদ গেইট, জাতীয় স্মতিসৌধ (সাভার), তিন নেতার মাজার (টিএসসি, ঢাকা) গুরুদুয়ারা নানকশাহী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ।
আধুনিক স্থাপত্য :
জাতীয় সংসদ ভবন, বাংলদেশ ব্যাংক ভবন, ভাসানী নভো থিয়েটার, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক ।
ঢাকার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বেড়ানোর জায়গা
রাজধানী শহর ঢাকা । এখানে একদিকে রয়েছে যান্ত্রিক জীবনের চিরাচরিত ঝক্কি আর ঝামেলা । অপরদিকে রয়েছে মন শান্ত করার মতো উদার প্রাকৃতিক পরিবেশ । খোলা চোখে দেখলে মনে হবে ঢাকা শহরে বেড়ানোর তেমন কোন জায়গা নেই । কিন্তু একটু খুঁজে দেখুন, আপনার মনের প্রশান্তি মিলতে পারে এরকম জায়গা অনেক । তেমনই কিছু জায়গা নিয়ে এবারের আয়োজন ।
রমনা পার্ক
নগরের যান্ত্রিক জীবনের রকমারি ব্যস্ততার মধ্যে গাঢ় সবুজের হাতছানি । পাখির কলকাকলিতে মুখরিত পরিবেশে কিছুটা সময় কাটাতে হলে চলে যান রমনা পার্কে । একসময় এর নাম ছিল রমনা গ্রীন পার্ক । ঢাকার শাহবাগের একেবারে গা ঘেঁষে রমনা পার্কের সীমানা শুরু । এর একদিকে মৎস্য ভবন অপরদিকে কাকরাইল মসজিদ এবং হোটেল শেরাটন । সবুজ শ্যামলীমায় ঘেরা এই পার্কে যাতায়াতের জন্য বাড়তি কোন বাহুল্য নেই । বাসে করে ঢাকার যে কোন প্রান্ত থেকে শাহবাগে নেমে বাকি পথটুকু হেটেই চলে যেতে পারবেন পরিবারের সদস্যদের সহ ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুবিশাল একটি নগর উদ্যান হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান । আগে এ উদ্যানটি ‘রমনা রেস কোর্স ময়দান’ নামে পরিচিত ছিল । ব্রিটিশ আমলে এখানে প্রতি রবিবার ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো । ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এ দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয় । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামে উদ্যানটির নাম রাখা হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান । এ উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষাণ দিয়েছিলেন । এখানেই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে আত্মসমর্প করেছিল ।
বলধা গার্ডেন
ষড়ঋতুর এ দেশে বিভিন্ন সময় গড়ে উঠেছে পার্ক, উদ্যান আর স্থাপত্যসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান । বলধা গার্ডেন তাদেরই একটি । বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে (১৯০৫ সালে) সাহিত্যমোদী ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী আপন সৌন্দর্যে গড়ে তোলেন এ উদ্যান ।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে তিনি নানা রকম ফুল, উদ্ভিদ আর গাছ-গাছড়া এনে রোপণ করেন এ গার্ডেনে । বলধা গার্ডেনকে অভিহিত করা হয় ফুল ও উদ্ভিদের মিউজিয়াম বা যাদুঘর হিসেবে । তবে এখানে গার্ডেন নির্মাণের পূর্বে একটি সত্যিকারের মিউজিয়াম ছিল । তাতে কয়েকটি ধাতব মূর্তিও ছির । উনিশ শতকের শেষের দিকে (বর্তমান) বলধা গার্ডেন ছিল উচ্চবিত্তদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র । সেখানে প্রতিদিনই গান-বাজনার আসর বসত ।
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ
বৈচিত্র্য পিয়াসী মানুষ কর্মক্লান্ত জীবনের কোনো মুহূর্তে মনের অজান্তেই খুঁজে বেড়ায় কোলাহলমুক্ত একটি পরিবেশ । যেখানে সে অতি সহজেই খুঁজে পাবে একটু আলাদা অনুভূতি এবং এই অনুভূতি ক্ষণিকের জন্য হলেও নিয়ে যাবে অন্য কোনো ভুবনে । তেমিন একটি প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত ও নগরীর কোলাহলমুক্ত দর্শনীয় স্থানের নাম ‘সাভার জতীয় সৃতিসৌধ’ । ঢাকা আরিচা হাইওয়ের রাস্তা দিয়ে যাবার সময় নবীনগর নামক স্থানে গাড়ি থেকে হাতের বাম দিকে তাকালে সহজেই নজরে পড়ে লাল সিরামিক ইটের বিশাল চত্বর । সবুজ গাছপালা, সুন্দর ফুলের বাগান, পানিতে পরিপূর্ণ লেক ও ফোয়ারা সব মিলিয়ে আকষর্ণ করে দৃষ্টিকে ।
হাতিরঝিল, ঢাকা
২০০৭ সালে গ্রহণ করা প্রায় ১৮শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর । হাতিরঝিলের লেকে ঢাকাবাসী পালতোলা নৌকায় ভেসে বেড়াতে পারবে । মনোরম লেকের এপার ওপারে যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনে ব্রিজ । মাত্র কয়েক মিনিটেই রামপুরা কারওয়ানবাজার থেকে অল্প সময়ে পৌছে যাওয়া যায় গুলশান হয়ে বাড্ডা । একদিকে মানুষের যেমন বিনোদনের জায়গা হয়েছে তেমনি কমেছে যানজট থেকে মুক্তি মিলেছে । এ প্রকল্পের জন্য জন্য সরকার ৩০০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে । এর মধ্যে রয়েছে সাতটি সেতু, ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১৬ কিলোমিটার সড়ক, দুটি ওভারপাস ।
হোসনি দালান, পুরান ঢাকা
হোসনি দালান পুরান ঢাকায় অবস্থিত ইসলাম ধর্মাবলম্বী শিয়া সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয় এবং কবরস্থান । প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো এ স্থাপনা মোগল আমলের ঐতিহ্যের নিদর্শন । ১৭ শ শতকে এই দালানটি নির্মিত হয় । মুসলমানদের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর পৌত্র হোসেন (রা) এর কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন । ইমাম হোসেন (রা) এর স্মৃতির স্মরণে হোসেনি দালান নির্মাণ করা হয়েছে । দালানটির নির্মাণকাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে । তবে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত মত হলো, শাহ সুজার সুবেদারির সময় তাঁর এক নৌ সেনাপতি মীর মুরাদ এটি হিজরি ১০৫২ সনে নির্মাণ করেন । বলা হয়ে থাকে, তিনিই ভবনটির নাম দেন ‘হোসনি দালান’ । একটি উঁচু মঞ্চের ওপর ভবনটি নির্মিত ।
জাতীয় সংসদ ভবন, বাংলাদেশ
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের স্থাপতি লুই আই কান (এস্তেনীয় বংশোদ্ভত মার্কিন নাগরিক) জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজের ব্যয় হয়েছিল ১৯৭ কোটি টাকা । ২০৮ একর জমির ওপর নির্মিত এই সংসদ ভবনটি তিনতলাবিশিষ্ট । এর উচ্চতা হচ্ছে ১৫৫ ফুট ৮ ইঞ্চি । বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন উদ্বোধন করা হয় ২৮ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে ।
তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার এর উদ্বোধন করেন । বাংলাদেশের আইন সাভার নাম হচ্ছে জাতীয় সংসদ । জাতীয় সংসদের ইংরেজি নাম ‘হাউস অব দ্য নেশন অব বাংলাদেশ’, জাতীয় সংসদ ভবনের প্রতীক হচ্ছে শাপলাফুল । এটি এক কক্ষবিশিষ্ট । বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মোট সদস্যসংখ্যা হচ্ছে ৩৫০টি ।
জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত দেশের প্রধান জাদুঘর । এখানে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং বিশ্বসভ্যতার নানা বিষয়াবলি সংরক্ষিত আছে । ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ তৎকালীন সচিবালয়ে (বর্তমান ঢাকা মেডিক্যাল) জাদুঘররের কার্যক্রম শুরু হয় । বাংলার তৎকালীন গভর্নর লর্ড কারমাইকেল তৎকালীন সচিবালয়ের একটি কক্ষে ঢাকা জাদুঘরটির উদ্বোধন করেন । ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট ঢাকা জাদুঘরের যাত্র শুরু হয় । ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ আগস্ট সর্বসাধারণের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় । ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর শাহবাগে । ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দিয়ে অত্যাধুনিক বৃহদায়তনের বর্তমান ভবনের উদ্বোধন করা হয় । আট একর জমির ওপর নির্মিত চারতলা ভবনটির তিনটি তলাজুড়ে রয়েছে ৪৩টি গ্যালারি । যেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
লালবাগের কেল্লা
তিন শতকের পুরান ঐতিহাসিক স্থান লালবাগের কেল্লা, যাকে দুর্গও বলা হয় । মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহজাদা আজম ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে এই কেল্লা নির্মাণ শুরু করেন । তবে বছর না ঘুরতেই তাঁকে রাজধানী দিল্লিতে তলব করায় কেল্লার কাজ অসমাপ্ত থেকে যায় । এরপর সুবাদার হিসাবে শায়েস্তা খাঁন এখানে এসে পুনরায় কেল্লার নির্মাণ কজে হাত দেন । তবে পরবর্তীতে দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মোঘল সম্রাটগণ সাম্রাজ্যের উন্নয়নমূলক অনেক কাজই বন্ধ করে দিলে এই কেল্লার নির্মাণ কাজও অসমাপ্ত থেকে যায় বলে অনেক ইতিহাসবিদ উল্লিখ করেছেন । তবুও এ কেল্লা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে ।
কেল্লার অভ্যন্তরে তিনটি পুরাকীর্তি রয়েছে । একটি হল পরী বিবির মাজার, একটি দরবার হল ও হাম্মাম এবং তৃতীয়টি হল তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ । এ কেল্লার চারটি ফটকের মধ্যে প্রধান ফটক, যেটি একশ’ টাকার নোট মুদ্রিত, সেটি এখন বন্ধ । তার বিপরীত দিকের চারটি ফটকের মাঝখানের ইট এখন প্রধান ফটক হিসাবে স্বীকৃত । এ ফটকটির দর্শনার্থীদের জন্য ব্যবহৃত হয় ।
আহসান মঞ্জিল
বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত আহসান মঞ্জিল এক ঐতিহাসিক ভবন । এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের স্মৃতি । আহসান মঞ্জিল এক সময় ব্রিটিশ ভারতীয় উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাবদের বাসগৃহ ছিল । অষ্টাদশ শতাব্দঅর মাঝামাঝি নাগাদ জালালপুর পরগনার (বর্তমান ফরিদপুর বরিশাল) জমিদার শেখ ইনায়েতউল্লাহ আহসান মঞ্জিলের বর্তমান স্থানে রঙমহল নামে একটি প্রমোদ ভবন নির্মাণ করেন । তাঁর মৃত্যুর পর রঙমহলটি ফরাসি বণিকদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয় । ফরাবিরা এখানে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে । পরবর্তীতে নবাব আবদুল গণির পিতা খাজা আলীমুল্লাহ ১৮৩৫ সালে ফরাসিদের কাছ থেকে এই বাণিজ্য কুঠির কিনে নেন । তিনি এই কুঠিকে সংস্কার করে বাসভবনে রূপান্তরিত করেন । নবাব আবদুল গনি ১৮৭২ সালে প্রাসাদটি পুনর্নিমাণ করেন । নবাব আবদুল গণি তাঁর আদরের পুত্র খাজা আহসানউল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন ‘আহসান মঞ্জিল’ ।
ভাষাণী নভোথিয়েটার
ঢাকার বিজয় সরণিতে সামরিক জাদুঘরের পাশেই তৈরি হয়েছে এই নভোথিয়েটার । শো শুরু হওয়ার এক ঘন্টা আগে থেকে টিকিট পাওয়া যায় টিকিট কাউন্টারে । টিকিটের দাম তুলনামূলক অনেক কম । একজন একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি টিকিট নিতে পারবেন । প্রতিদিন শো হয় চারটা । বেলা ১১টায়, দুপুর ১টায়, বিকাল ৩টায় ও ৫টায় । শুক্রবার রুটিন খানিকটা বদলায় । সকাল ১০টায় শো হবে একটা । এরপর বিকাল ৩টা, ৫টা ও ৭টায় । বুধবার বন্ধ ।
বিজ্ঞান জাদুঘর
দেশের একমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক জাদুঘরের যাত্র শুরু হয়েছিল ১৯৬৬ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরিতে । ছিল অল্প কিছু সংগ্রহ । কিন্তু আজ আগারগাঁওয়ের জাতীয় ও প্রযুক্তি জাদুঘরে রয়েছে বেশ সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা । তবে তা বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের তৃষ্ণার কাছে নগণ্য । ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ করতে শেরেবাংলা নগরে স্থাপিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ যাদুঘর “বিজ্ঞান যাদুঘর” । এই যাদুঘর বিজ্ঞানের জানা অজানা বিষয় সম্পর্কে আগ্রহী দর্শকদের মনের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে সদা প্রস্তুত ।
শিশু পার্ক
ঢাকার শাহবাগে শিশু পার্ক অবস্থিত । শিশু পার্ক প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে । রবিবার বন্ধ । উল্লেখ্য যে, বৃহস্পতিবার শুধু ছিন্নমূল শিশুদের জন্য খোলা রাখা হয় ।
শ্যামলী শিশুমেলা
এটি ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত । বেসরকারী সংস্থা পরিচালিত শিশুদের পার্ক । প্রতিদিন সকাল ৩ টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে । সাপ্তাহিক কোনো বন্ধ নেই । যেকোন স্থান থেকে এসে শ্যামলীতে নেমে রাস্তার পাশেই দেখতে পাবেন শ্যামলী শিশুমেলা । শিশুদের জন্য এখানে বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর আইটেম আছে ।
সাতগম্বুজ মসজিদ, মোহাম্মাদপুর
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের কিছুটা পশ্চিমেই রয়েছে মুঘল আমলের সাতগম্বুজ মসজিদ । ১৭শ শতকের শেষ দিকে নির্মিত এ মসজিদে শায়েস্তা খাঁর আমলের স্থাপত্যিক নিদর্শন সুষ্পষ্ট । মসজিদের চারকোণে চারটি এবং মাঝখানের তিনটি গম্বুজসহ এ মসজিদে মোট সাতটি গম্বুজ রয়েছে । এর বৈশিষ্ট হলো, চারকোণে চারটি দ্বিতল অষ্টভুজ মিনার, সে সবের ওপর ছোট আকারের গম্বুজ । এ মিনারগুলো প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র কাঠামোর ওপর নির্মিত । এক সময় মসজিদের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যেত বুড়িগঙ্গা নদী । আদিতে জায়গাটির নাম ছিল জাফরাবাদ । এখন স্থানটি মোহাম্মদপুর নামে পরিচিত । কারুকার্য মন্ডিত তিনটি প্রবিশপথ রয়েছে মসজিদটিতে । মাঝখানের প্রবেশপথটি দুইপাশের প্রবেশপথ থেকে কিছুটা বড় । এ মসজিদের নামে ধানমন্ডির সর্ববহৎ প্রধান সড়ক সাত মসজিদ সড়কের নামকরণ হয়েছে ।