বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না।

ঠিক প্রধান কোচ নন। তবে প্রধান কোচের ভূমিকায় রয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রি-দেশীয় সিরিজ শুরুর আগে অনেক বড় গলায় বলেছিলেন, কোচ-টোচ কিছু না। আমাদের দলের খেলোয়াড়দের সামর্থ্য আছে। তারা নিজেরাই জানে কী করতে হবে। সিনিয়ররা দল পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এ কারণে তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।

সূচনাটাও ছিল উড়ন্ত। শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিতে থাকে বাংলাদেশ; কিন্তু এরপরই উল্টে গেলো দাবার গুটি। লঙ্কানদের কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা হাতছাড়া হলো। টেস্ট সিরিজে একেবারে তথৈবচ অবস্থা। চট্টগ্রাম টেস্টে কোনোমতে হারতে হারতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ঢাকায় তো পুরোপুরে ভরাডুবি।

ঢাকায় মাত্র আড়াইদিনে হারের কারণে সমালোচনার সব তির গিয়ে বিদ্ধ করতে থাকে দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা এত খোলাখুলি আঘাত করছিল যে, খালেদ মাহমুদ সুজন রাগে-অভিমানে, ক্ষোভে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকটে দলের সঙ্গে আর কখনও কাজ করতে আগ্রহী নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছেন।

নানা সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হওয়ার কারণে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ দলের কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অনেক কথাই বলেছেন খালেদ মাহমুদ। শুরুতেই তিনি জানিয়ে দিলেন, এবার অনেক ভালো কোচিং হয়েছে। এসব উইকেটে আগেও ভালো খেলেছে; কিন্তু এবার কেন ভালো খেলতে পারলো না? তিনি বলেন, ‘এটা কোচিং এর বিষয় না, মানসিকতার বিষয়। অনেক বেটার কোচিং হয়েছে এবার। আমরা পারি নাই, বলতে হবে কোচরা মাঠে খেলে না। এই ছেলেরাই আগে ভালো খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি। যদি বলি ফ্লাট উইকেটেও আমরা কি করতে পারতাম। আমরা তো চিটাগাংয়েও হারতে পারতাম। আমরা তো দুইটা উইকেট নিতে পারছিলাম না। সাকিব ছিল না দেখে, কাউকে ছোট করছি না।’

বাংলাদেশ ক্রিকেটের

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা যদি জিততে পারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এভাবেই পারতাম। সেই সুযোগ তৈরি করছিলাম। ৬ উইকেটে ১০৬ রান ছিল। দিলরুয়ান পেরেরার ক্যাচ ছাড়লাম। ওইভাবে চিন্তা করলে মিডিয়াতে আসা উচিত, ১৪০ তে অলআউট করলে। তারপর মুমিনুল যদি রান আউট না হত। তাহলে কিন্তু অন্যরকম হতো। সেটা কিন্তু উইকেটের দোষ, ক্যাচ ছাড়াটা উইকেটের দোষ না। মুমিনুলের রান আউট উইকেটের দোষ না। অন্যরা যেভাবে আউট হয়েছে…।’

শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে কী করবে বাংলাদেশ। কে কোচ থাকবে? এসব নিয়ে ভাবেন না সুজন। তিনি মনে করেন, এসব বোর্ডের কাজ। বোর্ড করবে। তিনি বলেন, ‘নিধাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে। কারণ পজিশনটা তো বোর্ড আমাকে দিয়েছে। কাজ করব না এই কথা কখনই বলতে চাই না; কিন্তু বাঙালি কেউ কাজ করলে সেটা আসলে সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমি এখনো আছি টিকে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পরও। চন্ডিকা যখন প্রথম আসল, অনেক বড় বড় কোচ আসছে খারাপ রেজাল্ট হয়েছে শুরুতে। খারাপ রেজাল্ট আমি নিতেই পারি। বাংলাদেশ খারাপ খেলছে এটা আমাদের প্লানিং এর ভুল হইতে পারে। বাট আরও স্টোরি তো আছে।’

নিজে আগ্রহী কি না এমন প্রশ্ন করা হলে সুজন জানিয়ে দেন, তিনি আগ্রহী নন। সুজন বলেন, ‘পারসোনালি আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে ওইভাবে। এতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই। আমি আর আগ্রহী না।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *