“ক’ প্যাকেট কেছু? ‘চার প্যাকেট। চার প্যাকেট কিনলে পাইকারি রেট দেয়।’ ভালাে করছ।’
চাচীজীকে তার খুবই ভয় লাগছে। চাচীজীর উপর জ্বিনের আছর হয়নি তাে। হবিব নামে যে জিনটা এ বাড়িতে থাকে সে বড়ই দুষ্ট।
মনােয়ারা বললেন, মোতালেবকে চা খাইয়েছ? দেলােয়ার জবাব দেবার আগেই মােতালেব বলল, জ্বি আম্মা ।
“মােতালেব শােন । আমার শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। বুকে ব্যথা হচ্ছে । আমাকে ঢাকা যেতে হতে পারে। গাড়ির চাকা টাকা সব ঠিক আছে?
“স্পেয়ার চাকা কি আছে।’ ‘আমরা টেলিফোন করার ফাকে গাড়ির যা ঠিকঠাক করার করে ।
“জ্বি আচ্ছা।’
মা যে এই কাজটা করবে তা মীরা বুঝতে পারছে। মা গাড়ি নিয়ে বের হবার সময়ই তৈরী হয়ে এসেছে।
মাৱা বলল মা তােমাকে একটা কথা বলি।
‘তােমার ভাবভঙ্গি দেখে আমার ভয় লাগছে। তুমি একা টেনশানটা নিতে পারছ না। তুমি এক কাজ কর, বাবাকে সব জানা ও । যা করার বাবা করুক।
‘তুই আমাকে উপদেশ দিবি না। তার উপদেশগুলি তুই নিজের জন্যে জমা করে গ্রাম। তাের বাবাকে আমি কিছুই জাবি না। তাকে বিষ খাইয়ে যদি মেরে ফেলতে হয় তা জানা না। মরা মেয়ের জন্য সে নিট পেলে পাবে— তুই যে কত্ত করেছিল সেই ঘটনা জানার কষ্ট আমি তাকে দেব না।’
মীরার গ্রামের বাড়ি খন্ড-২৩
আই এস ডি লাইন হওয়ায় খুব সুবিধা হয়েছে। তিন বারের চেষ্টাতেই লাইন পাওয়া গেল। টেলিফোন ধরল সাবের। মীরার কথা ঠিক হয়নি। সাবের বাসাতেই ছিল। মীরা টেলিফোন রিসিভার মা’র দিকে বাড়িয়ে দিল। মনােয়ারা সহজ ভঙ্গিতে ব্রিসিভার হাতে নিলেন। স্বলের টেলিফোন অফিস কখনো নিরিবিলি থাকে না।
এখানেও নেই। ছোট্ট একটা ঘরের একদিকে মীরা এবং মনোয়ারা—অন্যদিকে টিবিল চেয়ার পেতে এক বুড়াে ভদ্রলােক বসে আছেন । মাথা নিচু করে ফাইল কী সব লিখছেন। মীরা নিচু গলায় বলল, মা আমি কি উনাকে কিছুক্ষণের জন্যে অন্য ঘরে যেতে বলব।
মনোয়ারা বললেন, না কিছু বলতে হবে না ।
ওপাশ থেকে সাবের বলল, হ্যালাে হ্যালাে। কে কথা বলছেন? মনোয়ার সহজ স্বাভাবিক গলায় বললেন, কে সাবের?
“আমি মীৱাৰ মা কথা বলছি।’ ANTIC LETAII) ইন্নামালিকম।” “ওয়ালাইকুম সালাম, তুমি ভালো আছ ?
কয় এদিকে মীরার শরীরটা হঠাৎ খারাপ করেছে, প্রচণ্ড জ্বর। কথা ছিল নেত্রকোনায় এসে সে তােমার সঙ্গে কথা বলবে। জ্বরের জন্যে আসতে পারেনি বলেই আমি কথা বলছি।’
‘হ্যালো শুনুন | গভিটাড়ি পাঠাবেন না । বিকাল সাড়ে তিনটার সময় আমি দেশে চলে যাচ্ছি। আমার মা খুব অসুস্থ। মাকে দেখতে যাব।’
মীরার গ্রামের বাড়ি খন্ড-২৩
‘আমি আমার কথা শেষ করে নেই তারপর তুমি যদি অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে চাও দেখতে যাবে। অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়াই তাে উচিত। আমি কী বলছি মন দিয়ে শােল। সন্ধ্যার মধ্যে তােমার কাছে গাড়ি যাবে। তুমি গাড়িতে করে চলে এসাে । তুমি যদি সঙ্গে কোনাে বন্ধু-বান্ধব আনতে চাও তাদেরও নিয়ে এসাে..
‘আমি শুধু শুধু বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গ্রামে আসব কেন? = “আমি মনে করছি তোমার এখানে আসা দরকার । এখানে এলে মঙ্গল ছাড়া তোমার কোনাে অমঙ্গল হবে না। না এলেই বরং অমঙ্গলের সম্ভাবনা।
“আপনি কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন? ‘শু শুধু তোমাকে কেন ভয় দেখাব । যারা ভয় পাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকে তারা সবকিছুতেই ভয় পায়। দড়ি দেখলে ভাবে সাপ। সুতা দেখলে ভাবে সুত্র সাপ। তবে বাবা শোন, তোমাকে ভয় দেখাতে চাইলে আমি অবশ্যই ভয় দেখাতে পারি। আমি যদি চাই রাত আটটার মধ্যে তুমি এখানে উপস্থিত থাকবে—তােমাকে থাকতেই হবে। তুমি মীরার সরলতা দেখবে, তার ক্ষমতা দেখবে না, তাতো হবে না।’
মীরার গ্রামের বাড়ি খন্ড-২৩
‘বালাম্মা আপনি রেগে যাচ্ছেন।
“বাবা আমি রাগছি না। যে মেয়ে সমস্যায় পড়েছে তার মা রাগতে পারেন না। আমি মােটেই রাগছি না । মীরার বাবা যখন সবকিছু শুনবেন তখন তিনি রাগ করবেন। তার রাগ চণ্ডাল রাগ। সেই রাগকে আমি প্রচন্দ্র ভয় করি। আমি চাই না তার কানে ব্যাপারটা যকি। তোমার এবং মীরার মলের জন্যেই এটা তুমি কি একটু আসতে পারবে ?”
মীরার গ্রামের বাড়ি। বেড়ানাের জন্যে জায়গাটা খুব সুন্দর, তােমার পছন্দ
“জ্বি না। ঢাকায় আমার অনেক কাজ।
মীরা বলছিল তোমার সঙ্গে তার কিছু জরুরি কথা আছে।’ ঢাকায় যখন আসবে তখন কথাবলব।’ “মীরাকে দেখে মনে হয় সে কোনাে ভয়াবহ সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। সমস্যাটা কী তা কি তুমি জানাে ?”
‘আমি জানি না।’
তুমি জানাে না, নাকি জেনেও দায়িত্ব অস্বীকার করতে চাচ্ছ ? ‘আপনি কী বলছেন আমি বুঝতেই পারছি না।’ তুমি বুঝতেই পারছ না?’ ‘জ্বি না। তা ছাড়া লাইনে ডিস্টার্ব হচ্ছে। কথা পত্রিকার শােনা যাচ্ছে না। ‘আমি অবশ্য তােমার কথা পরিষ্কার শুনতে পারছি। যাই হােক আমি কিছু কথা তােমাকে বলছি তুমি মন দিয়ে শোন। আমি তােমার জন্যে গাড়ি পাঠাচ্ছি। সন্ধ্যার দিকে গাড়ি পৌঁছে যাবে।
Read More