বর্তমান সময়ে ক্রিকেট দুনিয়ার আলোচিত নাম বল টেম্পারিং। যেটার জন্য এই বল টেম্পারিং করা তা হচ্ছে ‘রিভার্স সুইং’। ‘রিভার্স সুইং’ শব্দটির অর্থ উল্টো সুইং। যার হাত ধরে ‘রিভার্স সুইং’-এর জন্ম যাকে এই শিল্পের জনক বলা হয় তিনি হচ্ছেন পাকিস্তানি পেসার সরফরাজ নেওয়াজ। একটা সময় ছিল যখন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা ‘রিভার্স সুইং’ রপ্ত করতে পারতো না বলে তারা প্রায়ই ‘রিভার্স সুইং’-কে ‘অবৈধ’ বলতেন। ইংরেজরা রপ্ত করার পর এখন তাদের কাছেই ‘রিভার্স সুইং’শিল্পে পরিণত হয়েছে।
সরফরাজ নেওয়াজের হাত ধরে এই শিল্প যায় পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের হাতে। এরপর ইমারানের হাত ধরে ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনিস হাতে যায় এই শিল্প। এই তিনজনকে বলা হয় রিভার্স সুইংয়ের রাজা।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বল টেম্পারিংকে কেন্দ্র করে আবারো আলোচনায় ‘রিভার্স সুইং’। মুলত বল রিভার্স করানোর জন্যই টেম্পারিং করার মতো জঘন্য অপরাধ করে স্মিথ-ওয়ার্নাররা। তবে ৬৯ বছর বয়সী পাকিস্তানি কিংবদন্তি পেসার সরফরাজ নেওয়াজ বলছেন উল্টো কথা। বল বিকৃতি (টেম্পারিং) ছাড়াই রিভার্স সুইং পাওয়া যায় এমটা জানান এই পাকিস্তানি।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে সরফরাজ সোজাসাপটাই বলেছেন রিভার্স সুইং করতে কোনো প্রতারণার আশ্রয় নিতে হয় না, ‘রিভার্স সুইং হলো প্রতারণা, এটা বলাই হাস্যকর। বল বিকৃতি ছাড়াই রিভার্স সুইং পেতে পারেন। নতুন বলে প্রচলিত সুইং পাওয়া যায় আর পুরোনো বলে রিভার্স সুইং। ব্যাপারটা পরীক্ষাগারেই প্রমাণিত যে রিভার্স সুইং সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত।’
রিভার্স সুইং করতে টেম্পারিং লাগে না
পাকিস্তানের বোলাররা ক্রিকেট বিশ্বকে রিভার্স সুইংয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর ঝড় উঠেছিল। প্রায় সবাই ভেবেছিল এটা প্রতারণা। কিন্তু এখন এটিকে রীতিমতো শিল্প হিসেবেই ধরা হয়। সরফরাজের মতে, এটি হয়েছে ইংলিশ ফাস্ট বোলাররা রিভার্স সুইং শিখে ফেলার পর থেকেই, ‘এই শিল্পটা আমি ইমরান খানের হাতে তুলে দেওয়ার পর সে এটা আরও উন্নত করে ওয়াসিম আর ওয়াকারকে শেখায়। সেই সময় সবাই বলেছে এটা প্রতারণা; কিন্তু ইংরেজরা রিভার্স সুইং পাওয়ার পর থেকেই তা শিল্প হয়ে গেল।’
স্মিথদের বল টেম্পারিং ঘটনা স্বীকার করে নেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধ্যমে একটা ‘ট্রল’ ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি ছবিতে ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম আর ওয়াকার ইউনিস হাসছেন। এই ট্রলের নিচে লেখা ছিল—‘অ্যামেচারস’ শব্দটি। ট্রলটার অর্থ ছিল, বল বিকৃতি ঘটিয়ে স্মিথদের ধরা খাওয়ায় তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছেন পাকিস্তানি গতি-তারকারা। ব্যাপারটা এমন যে ‘আমরা কত করলাম, ধরা খেলাম না, তোমরা একবার করেই ধরা খেয়ে গেলে। আনাড়িরা ধরা খায় এমনভাবেই।’
স্বদেশীদের নিয়ে এমন ট্রল দেখে অনেকটা ক্ষুদ্ধ হয়েই এসব বলেন ‘রিভার্স সুইং’ শিল্পের জনক।