গতিময় জীবন, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন, কাজের চাপ, দুশ্চিন্তাজনিত কারণে আমরা সবাই কম বেশি লাইফ স্টাইল ডিজিজের শিকার। ঘুম না হওয়া, অবসাদ, বন্ধ্যাত্বের পাশাপাশি হালে নতুন সংযোজন হয়েছে অল্প বয়সেই গাঁটে ব্যথা, হাঁটুর সমস্যা, কিংবা কোমরের
এ তো গেল রোগীর সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে এ ছাড়া রয়েছে চিকিৎসকের সমস্যাও। কিছু হল চাই না হল, লিখে দিলেন গুচ্ছের ওষুধ। ব্যস, সকালে ঘুম থেকে উঠে, স্নানের আগে, খাওয়ার আগে, কিছু ক্ষেত্রে প্রথম গ্রাস মুখে তুলে, খাওয়ার পরে গিলতে থাকুন একটার পর একটা। কী, না ডাক্তার বলেছেন, আপনার শরীরে ঘাটতি রয়েছে ভিটামিন ডি-র। তারপর থেকেই সূর্য না ওঠা, দেরিতে ওঠা সব কারণের জন্যেই আপনি দায়ী করেন ওইটুকু ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিকেই।
সমস্যা অন্য জায়গায়। আপনার শরিরে ভিটামিন ডি কম কিনা, কম হলে কতটা কম, সে সবের কোনও পরীক্ষা হয়েছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা হয়না। কারণ সরকারি হাসপাতালে সাধারণত ভিটামিন ডি -এর পরীক্ষা হয় না। হলেও সেটি সময়সাপেক্ষ। আর বেসরকারি হাসপাতালে এই পরীক্ষার জন্য দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা লাগে, সবার সেই সামর্থ্য নেই। অতএব চিকিৎসক এবং রোগী আজীবন শুধু আন্দাজের বসে ধরে নিলেন সমস্যার উৎস ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। তার জন্য চলতে লাগল অনবরত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট।
প্রশ্ন হচ্ছে, ভিটামিন ডি আপনার শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়? চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রথম থেকেই বলে এসেছে আমাদের শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে ভিটামিন ডি সংশ্লেষ করে সূর্যালোক। এই উপাদান কম থাকলে হাড়ের সমস্যা, হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, বাতের ব্যথা, কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আপনার শরীরে ঠিক কী মাত্রায় এই উপাদান রয়েছে, পরীক্ষা না করে ওষুধ খাওয়া কখনওই উচিত না।
যেসমস্ত খাবার থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে পেতে পারেন ভিটামিন ডি
টুনা, স্যালমন এর মতো সামদ্রিক, ফ্যাটি মাছ
দুধ এবং দুধ জাতীয় প্রোডাক্ট
শস্যদানা
চিজ
ডিমের কুসুম
কমলা লেবুর রস
এতদিনে এও প্রমাণিত, সাপ্লিমেন্টস কখনই প্রাকৃতিক উৎসের বিকল্প হতে পারে না। ঘরে বসে দিনরাত ওষুধ না গিলে যান না, একটু রোদ লাগিয়ে আসুন। আফটার অল, ”সানশাইন অন মাই শোলডার মেকস মি হ্যাপি”!! তবে সকাল ১০ টা থেকে ৩ টের মধ্যে রোদে বেরোবেন না, তখন অতি বেগুনি রশ্মি ওজোন স্তর ভেদ করে বেশিটাই চলে আসে আমাদের শরীরে।