হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-১৮

সিগারেট খায়

তুমি নিশ্চিত যে খায় না ?রেহানা হাসিমুখে বললেন, কি করে না করে আমি জানব না? ইয়াজউদ্দিন বিরক্ত গলায় বললেন, না, কি করে না করে তুমি জান না

মেঘের ছায়া   

গলির ভেতর গাড়ি ঢােকে না। 

শুভ্র গাড়ি রেখে হেঁটে হেঁটে জাহেদের বাসার সামনে এলজাহেদের বাসায় কোন কলিংবেল নেইঅনেকক্ষণ দরজার কড়া নাড়তে হয়আজ কড়া নাড়তে হল বাড়ির বারান্দায় কাঠের চেয়ারে জাহেদ বসে আছেতাকে দেখে মনে হচ্ছে তার উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছেসে এখনাে ঝড় কটিয়ে উঠতে পারে নি

ঝড়েসূত্রপাত হয় গত রাতেবিয়ের পর রাত এগারােটার দিকে কেয়াকে নিয়ে ছােটমামার বাড়িতে এসে উঠলতার আশা ছিল নতুন বৌ, কেউ কিছু বলবে নানিতান্ত হৃদয়হীন মানুষও নতুন বৌয়ের সামনে হৃদয়হীনতা দেখাবে নাতাছাড়া মিজান সাহেব হৃদয়হীন ননহৃদয়হীন হলে দীর্ঘদিন জাহেদকে পুষতেন না। 

কেয়াকে গাড়ি থেকে নামানাের পর মিজান সাহেব যে কাজটা করলেন, তাকে কোন রকম নিয়মের মধ্যে ফেলা যায় নাতিনি শীতল গলায় বললেন, জাহেদ, তােকে বউ নিয়ে বাড়িতে উঠতে নিষেধ করেছিলামতুই কি মনে করে উঠলি

জাহেদ বলল, কাল চলে যাব, মামাকালের কথা তাে হয় নিতুই এখন যাবিএই মুহূর্তে যাবিমনােয়ারা বললেন, আচ্ছা, তুমি চুপ কর তােবউ নিয়ে ঘরে বসুক। 

মেঘের ছায়া খন্ড-১৮

মিজান সাহেব স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, শাট আপকোন কথা বললে খুন করে ফেলবজাহেদ, তুই এক্ষুণি বউ নিয়ে বিদেয় এক্ষুণি। 

তিনি তাকাচ্ছেন অদ্ভুত ভঙ্গিতেতাঁর চোখ লাল, ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছেতিনি থু করে একদলা থুথু ফেললেন। 

জাহেদ বলল, গাড়ি চলে গেছে, মামারাতও অনেক হয়েছেবারােটার মত বাজে। 

মিজান সাহেব হুংকার দিয়ে বললেন, গাড়ি ছাড়া তুই নড়তে পারিস নাকবে থেকে নবাব হয়েছিস? নবাবী কবে থেকে শিখেছিস? গাড়ি না থাকে রিকশায় যাবিরিকশা না থাকলে হেঁটে যাবিহারামজাদা কোথাকার

মনােয়ারা কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, কি হয়েছে তােমার ! এরকম করছ | কেন? ঘরে এসে বস তােতিনি এসে স্বামীর হাত ধরলেন। 

মিজান সাহেব ঝটকা মেরে হাত সরিয়ে দিলেনহুংকার দিয়ে বললেন চুপ কর মাগীতুই কোন কথা বলবি নাআমি তাের সাথে বাহাস করছি না। 

জাহেদ পুরােপুরি হকচকিয়ে গেলকেয়া অবাক হয়ে তাকাচ্ছেতার ভয়ভয় করছেকী ভয়ংকর অবস্থা ! জাহেদ বলল, কেয়া, তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি একটা বেবীটেক্সি নিয়ে আসি| মিজান সাহেব সহজ গলায় বললেন, দাঁড়িয়ে থাকবে কেন? একটা চেয়ার এনে দে, বসুকতুই গিয়ে বেবীটেক্সি নিয়ে আয়। 

মেঘের ছায়া খন্ড-১৮

কেয়া বারান্দায় কাঠের চেয়ারে জড়সড় হয়ে বসে রইলজাহেদ গেল বেবীটেক্সি আনতেএই অবস্থা হবে জানলে শুভ্রের মাইক্রোবাসটা রেখে দিতকেয়াকে নিয়ে সে এতরাতে যাবে কোথায় বুঝতে পারছে নাকোন একটা হােটেলে নিয়ে তুলবে? তুললেও মােটামুটি ভাল হােটেলে তুলতে হবেভাল হােটেলগুলি কোথায়? ভাড়াইবা কত?

 আপার বাসায় যাওয়া যাবে নাআপা বিয়েতে আসে নিজাহেদ শুভ্রের মাইক্রোবাস নিয়ে তাদের আনতে গিয়েছিল সে চোখমুখ লাল করে বলেছে, তুই আমাকে নিতে এসেছিস? তাের এত বড় সাহস? তুই তাের দুলাভাইকে বলে গেছিস আমি তাের গলার হার চুরি করেছিতারপরেও আমাকে নিতে এসেছিস। 

জাহেদ বলল, আমি তাে এমন কথা কখনাে বলিনি, আপা? | তাহলে তাের দুলাভাই মিথ্যা কথা বলছে? আমি হলাম চোর, আর তাের দুলাভাই মিথ্যাবাদী? বের বাড়ি থেকে বের বললাম। 

বেবীটেক্সিতে উঠার সময় কেয়া বলল, কোথায় যাবে কিছু ঠিক করেছ? জাহেদ অস্পষ্ট একটা শব্দ করলকেয়া ক্লান্ত গলায় বলল, আমাকে বড় আপার বাসাতেই রেখে এসােপরে একটা কোন ব্যবস্থা হবেপ্রচন্ড মাথা ধরেছে। 

জাহেদ বলল,

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-১৯

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *