সিগারেট খায় ?
‘তুমি নিশ্চিত যে খায় না ?”। রেহানা হাসিমুখে বললেন, ও কি করে না করে আমি জানব না? ইয়াজউদ্দিন বিরক্ত গলায় বললেন, না, ও কি করে না করে তুমি জান না।
গলির ভেতর গাড়ি ঢােকে না।
শুভ্র গাড়ি রেখে হেঁটে হেঁটে জাহেদের বাসার সামনে এল। জাহেদের বাসায় কোন কলিংবেল নেই। অনেকক্ষণ দরজার কড়া নাড়তে হয়। আজ কড়া নাড়তে হল বাড়ির বারান্দায় কাঠের চেয়ারে জাহেদ বসে আছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তার উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেছে। সে এখনাে ঝড় কটিয়ে উঠতে পারে নি।
ঝড়ের সূত্রপাত হয় গত রাতে। বিয়ের পর রাত এগারােটার দিকে কেয়াকে নিয়ে ছােটমামার বাড়িতে এসে উঠল। তার আশা ছিল – নতুন বৌ, কেউ কিছু বলবে না। নিতান্ত হৃদয়হীন মানুষও নতুন বৌয়ের সামনে হৃদয়হীনতা দেখাবে না। তাছাড়া মিজান সাহেব হৃদয়হীন নন। হৃদয়হীন হলে দীর্ঘদিন জাহেদকে পুষতেন না।
কেয়াকে গাড়ি থেকে নামানাের পর মিজান সাহেব যে কাজটা করলেন, তাকে কোন রকম নিয়মের মধ্যে ফেলা যায় না। তিনি শীতল গলায় বললেন, জাহেদ, তােকে বউ নিয়ে এ বাড়িতে উঠতে নিষেধ করেছিলাম। তুই কি মনে করে উঠলি ?
জাহেদ বলল, কাল চলে যাব, মামা।। ‘কালের কথা তাে হয় নি। তুই এখন যাবি। এই মুহূর্তে যাবি। মনােয়ারা বললেন, আচ্ছা, তুমি চুপ কর তাে। ও বউ নিয়ে ঘরে বসুক।
মেঘের ছায়া খন্ড-১৮
মিজান সাহেব স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, শাট আপ। কোন কথা বললে খুন করে ফেলব। জাহেদ, তুই এক্ষুণি বউ নিয়ে বিদেয় হ। এক্ষুণি।।
তিনি তাকাচ্ছেন অদ্ভুত ভঙ্গিতে। তাঁর চোখ লাল, ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে। তিনি থু করে একদলা থুথু ফেললেন।
জাহেদ বলল, গাড়ি চলে গেছে, মামা। রাতও অনেক হয়েছে। বারােটার মত বাজে।
মিজান সাহেব হুংকার দিয়ে বললেন, গাড়ি ছাড়া তুই নড়তে পারিস না। কবে থেকে নবাব হয়েছিস? নবাবী কবে থেকে শিখেছিস? গাড়ি না থাকে রিকশায় যাবি। রিকশা না থাকলে হেঁটে যাবি। হারামজাদা কোথাকার!
মনােয়ারা কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, কি হয়েছে তােমার ! এরকম করছ | কেন? ঘরে এসে বস তাে। তিনি এসে স্বামীর হাত ধরলেন।
মিজান সাহেব ঝটকা মেরে হাত সরিয়ে দিলেন। হুংকার দিয়ে বললেন – চুপ কর মাগী। তুই কোন কথা বলবি না। আমি তাের সাথে বাহাস করছি না।
জাহেদ পুরােপুরি হকচকিয়ে গেল। কেয়া অবাক হয়ে তাকাচ্ছে। তার ভয়–ভয় করছে। এ কী ভয়ংকর অবস্থা ! জাহেদ বলল, কেয়া, তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি একটা বেবীটেক্সি নিয়ে আসি।| মিজান সাহেব সহজ গলায় বললেন, দাঁড়িয়ে থাকবে কেন? একটা চেয়ার এনে দে, বসুক। তুই গিয়ে বেবীটেক্সি নিয়ে আয়।
মেঘের ছায়া খন্ড-১৮
কেয়া বারান্দায় কাঠের চেয়ারে জড়সড় হয়ে বসে রইল। জাহেদ গেল বেবীটেক্সি আনতে। এই অবস্থা হবে জানলে শুভ্রের মাইক্রোবাসটা রেখে দিত। কেয়াকে নিয়ে সে এতরাতে যাবে কোথায় বুঝতে পারছে না। কোন একটা হােটেলে নিয়ে তুলবে? তুললেও মােটামুটি ভাল হােটেলে তুলতে হবে। ভাল হােটেলগুলি কোথায়? ভাড়াইবা কত?
আপার বাসায় যাওয়া যাবে না। আপা বিয়েতে আসে নি। জাহেদ শুভ্রের মাইক্রোবাস নিয়ে তাদের আনতে গিয়েছিল – সে চোখ–মুখ লাল করে বলেছে, তুই আমাকে নিতে এসেছিস? তাের এত বড় সাহস? তুই তাের দুলাভাইকে বলে গেছিস – আমি তাের গলার হার চুরি করেছি। তারপরেও আমাকে নিতে এসেছিস।
জাহেদ বলল, আমি তাে এমন কথা কখনাে বলিনি, আপা? | ‘তাহলে তাের দুলাভাই মিথ্যা কথা বলছে? আমি হলাম চোর, আর তাের দুলাভাই মিথ্যাবাদী? বের হ বাড়ি থেকে বের হ বললাম।
বেবীটেক্সিতে উঠার সময় কেয়া বলল, কোথায় যাবে কিছু ঠিক করেছ? জাহেদ অস্পষ্ট একটা শব্দ করল। কেয়া ক্লান্ত গলায় বলল, আমাকে বড় আপার বাসাতেই রেখে এসাে। পরে একটা কোন ব্যবস্থা হবে। প্রচন্ড মাথা ধরেছে।
জাহেদ বলল,
Read More