জলিল সাহেব চেঁচিয়ে বললেন, আরে না, ছাদে যাবে কেন? জ্বর নিয়ে ছাদে যাবার কোন দরকার নেই। গল্প–গুজব যা করার এখানে বসেই কর। স্বামী–স্ত্রীর গল্প বলার তাে কিছু নাই। হা হা হা।
কেয়া কিছুই বলল না। দরজা খুলে রওনা হল। তার গায়ে পাতলা একটা চাদর। চাদরে বােধহয় শীত মানছে না। সে অল্প অল্প কাঁপছে। সিড়ি দিয়ে উঠার সময় সে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেতে ধরল। জাহেদ তাকে ধরে ফেলল। জাহেদ বলল, শরীর এত খারাপ করেছে কি ভাবে? কেয়া বলল, বুঝতে পারছি না। কাল রাতে অনেকক্ষণ ধরে গােসল করেছি। মনে হয় ঠাণ্ডা লেগেছে।
‘কাশি আছে?” ‘আছে। শুনতে চাও? কেয়া হাসছে। জাহেদ বলল, ছাদের হাওয়ায় বসা বোধহয় ঠিক হবে না। ঠিকই হবে। চুপ করে বস। তােমার মামা কেমন আছেন?
বুঝতে পারছি না। খুব ভাল মনে হচ্ছে না। মাথা বােধহয় খারাপ হয়ে গেছে কিংবা হতে যাচ্ছে।
‘ডাক্তার দেখিয়েছ?
মেঘের ছায়া খন্ড-২৮
‘ডাক্তার কি বললেন ?
‘অষুধপত্র দিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলছেন। পরিবেশ বদলাতে বললেন।
‘নিয়ে যাচ্ছ গ্রামের বাড়িতে?”
‘কবে?” ‘আজ রাতের ট্রেনেই যেতে চাচ্ছেন। এখনাে বুঝতে পারছি না।
নিয়ে যাও। ‘নিয়ে যেতে বলছ!”
“ বলছি। তােমার নিজের উপর দিয়েও মনে হয় ঝড় যাচ্ছে। তােমারও চেঞ্জ দরকার। নয়ত পরে দেখা যাবে মামা যে পথে যাচ্ছে – ভাগ্নেও সেই পথে যাচ্ছে। দুজনই আইল্যান্ডে নেংটো হয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কনট্রোল করছে।
কেয়া হাসছে। কি সুন্দর লাগছে কেয়াকে ! জাহেদ মনে মনে বলল, আমার সৌভাগ্যের শেষ নেই। কি চমৎকার একটি তরুণীকে আমি পাশে পেয়েছি।
কেয়া বলল, গম্ভীর হয়ে আছ কেন? আমার কথায় রাগ করেছ? “না, রাগ করব কেন?” ‘আজ শেভ করনি কেন ? ‘তাড়াহুড়ায় সময় পাইনি।
কেয়া নিচু গলায় বলল – বাসর রাতে তােমাকে বলার জন্যে সুন্দর একটা গল্প রেডি করে রেখেছিলাম। মনে হচ্ছে বাসর হতে অনেক দেরি। গল্পটা এখন বলব?
“না, থাক। এখন শুনব না।
তােমাকে যে নীল একটা হাফশার্ট আর ধবধবে শাদা প্যান্ট কিনতে বলেছিলাম, কিনেছ?‘
‘না। ‘নেক্সট টাইম যখন আসবে শাদা প্যান্ট এবং নীল শার্ট যেন গায়ে থাকে। “আচ্ছা থাকবে।
মেঘের ছায়া খন্ড-২৮
জাহেদ বলল, আমি বরং আজ যাই। মামাকে যদি দেশে নিয়ে যেতে হয় তাহলে গোছগাছ করতে হবে।
“আচ্ছা যাও। ‘তুমিও নিচে চল। জ্বর নিয়ে ছাদে বসে থাকবে না।
‘কেয়া বলল, আমি আরাে কিছুক্ষণ থাকব। তুমি যাও। ‘ঠাণ্ডা লাগবে তাে! “লাগুক। কালও অনেক রাত পর্যন্ত ছাদে ছিলাম।‘
কেয়া ক্লান্ত গলায় বলল, কি করব বল। কিছু ভাল লাগছে না। কাল ছাদে বসে কি ভাবছিলাম জান? ভাবছিলাম যদি আমাদের কখনাে একসঙ্গে থাকার সুযােগ হয়। তাহলে পুরাে এক রাত এবং একদিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকব। একটা সেকেন্ডের জন্যেও তােমাকে কোথাও যেতে দেব না।‘
জাহেদ বলল, কয়েকটা দিনের ব্যাপার। আমি একটা ফ্ল্যাটের জন্যে সবাইকে বলেছি। দু‘রুমের ফ্ল্যাট।
‘ফ্ল্যাটের ভাড়া কিভাবে দেবে?”
একটা ব্যবস্থা হবেই। যাই কেয়া। ‘আচ্ছা।
আচ্ছা বলেও জাহেদ গেল না। দাঁড়িয়ে রইল। কেয়া বলল, কিছু বলবে? বাসায় তােমার আপাকে কি বলেছ?” “বলেছি একটা কিছু তােমার শােনার দরকার নেই।” ‘কি যে বিপদে পড়েছি কেয়া। ‘কোন বিপদ না। তুমি চলে যাও।
জাহেদ চলে গেল। কেয়া বসে আছে চুপচাপ। বাতাসে তার মাথার
Read More