হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-২৮

জলিল সাহেব চেঁচিয়ে বললেনআরে নাছাদে যাবে কেনজ্বর নিয়ে ছাদে যাবার কোন দরকার নেই গল্পগুজব যা করার এখানে বসেই করস্বামীস্ত্রীর গল্প বলার তাে কিছু নাইহা হা হা

মেঘের ছায়া   কেয়া কিছুই বলল নাদরজা খুলে রওনা হলতার গায়ে পাতলা একটা চাদরচাদরে বােধহয় শীত মানছে নাসে অল্প অল্প কাঁপছেসিড়ি দিয়ে উঠার সময় সে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেতে ধরলজাহেদ তাকে ধরে ফেললজাহেদ বলল, শরীর এত খারাপ করেছে কি ভাবে? কেয়া বলল, বুঝতে পারছি নাকাল রাতে অনেকক্ষণ ধরে গােসল করেছিমনে হয় ঠাণ্ডা লেগেছে। 

কাশি আছে?আছেশুনতে চাও? কেয়া হাসছেজাহেদ বলল, ছাদের হাওয়ায় বসা বোধহয় ঠিক হবে নাঠিকই হবেচুপ করে বসতােমার মামা কেমন আছেন

বুঝতে পারছি নাখুব ভাল মনে হচ্ছে নামাথা বােধহয় খারাপ হয়ে গেছে কিংবা হতে যাচ্ছে। 

ডাক্তার দেখিয়েছ

মেঘের ছায়া খন্ড-২৮

ডাক্তার কি বললেন

অষুধপত্র দিয়েছেনগ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলছেনপরিবেশ বদলাতে বললেন। 

নিয়ে যাচ্ছ গ্রামের বাড়িতে?” 

কবে?আজ রাতের ট্রেনেই যেতে চাচ্ছেনএখনাে বুঝতে পারছি না। 

নিয়ে যাওনিয়ে যেতে বলছ!” 

বলছিতােমার নিজের উপর দিয়েও মনে হয় ঝড় যাচ্ছেতােমারও চেঞ্জ দরকারনয়ত পরে দেখা যাবে মামা যে পথে যাচ্ছে ভাগ্নেও সেই পথে যাচ্ছেদুজনই আইল্যান্ডে নেংটো হয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কনট্রোল করছে। 

কেয়া হাসছেকি সুন্দর লাগছে কেয়াকে ! জাহেদ মনে মনে বলল, আমার সৌভাগ্যের শেষ নেইকি চমৎকার একটি তরুণীকে আমি পাশে পেয়েছি। 

কেয়া বলল, গম্ভীর হয়ে আছ কেন? আমার কথায় রাগ করেছ? না, রাগ করব কেন?আজ শেভ করনি কেন ? তাড়াহুড়ায় সময় পাইনি। 

কেয়া নিচু গলায় বলল বাসর রাতে তােমাকে বলার জন্যে সুন্দর একটা গল্প রেডি করে রেখেছিলামমনে হচ্ছে বাসর হতে অনেক দেরিগল্পটা এখন বলব

না, থাক। এখন শুনব না। 

তােমাকে যে নীল একটা হাফশার্ট আর ধবধবে শাদা প্যান্ট কিনতে বলেছিলাম, কিনেছ?‘ 

নানেক্সট টাইম যখন আসবে শাদা প্যান্ট এবং নীল শার্ট যেন গায়ে থাকেআচ্ছা থাকবে। 

মেঘের ছায়া খন্ড-২৮

জাহেদ বলল, আমি বরং আজ যাইমামাকে যদি দেশে নিয়ে যেতে হয় তাহলে গোছগাছ করতে হবে। 

আচ্ছা যাওতুমিও নিচে চলজ্বর নিয়ে ছাদে বসে থাকবে না। 

কেয়া বলল, আমি আরাে কিছুক্ষণ থাকবতুমি যাওঠাণ্ডা লাগবে তাে! লাগুককালও অনেক রাত পর্যন্ত ছাদে ছিলাম‘ 

কেয়া ক্লান্ত গলায় বলল, কি করব বলকিছু ভাল লাগছে নাকাল ছাদে বসে কি ভাবছিলাম জান? ভাবছিলাম যদি আমাদের কখনাে একসঙ্গে থাকার সুযােগ হয়তাহলে পুরাে এক রাত এবং একদিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকবএকটা সেকেন্ডের জন্যেও তােমাকে কোথাও যেতে দেব না‘ 

জাহেদ বলল, কয়েকটা দিনের ব্যাপারআমি একটা ফ্ল্যাটের জন্যে সবাইকে বলেছিদুরুমের ফ্ল্যাট। 

ফ্ল্যাটের ভাড়া কিভাবে দেবে?” 

একটা ব্যবস্থা হবেইযাই কেয়াআচ্ছা। 

আচ্ছা বলেও জাহেদ গেল নাদাঁড়িয়ে রইলকেয়া বলল, কিছু বলবে? বাসায় তােমার আপাকে কি বলেছ?বলেছি একটা কিছু তােমার শােনার দরকার নেইকি যে বিপদে পড়েছি কেয়াকোন বিপদ নাতুমি চলে যাও। 

জাহেদ চলে গেলকেয়া বসে আছে চুপচাপবাতাসে তার মাথার

 

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-২৯

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *