হুমায়ূন আহমেদের লেখা হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪

সেই অ্যাস্ট্রলজি থেকে জন্ম নিয়েছে আধুনিক অ্যাস্ট্রনমি। এক সময় আলকেমিও ছিল আধিভৌতিকসেই আলকেমি থেকে আমরা পেয়েছি আধুনিক রসায়নবিদ্যাহিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম 

জামিল সাহেব বললেন, মিস্টার এভারেস্ট, এই নিয়ে আমি আপনার সঙ্গে 

তর্ক করতে চাচ্ছি না। আমি একটা কাজ করছি। যদি কখনাে সুযােহয় পরে কথা বে। 

তুমি নিশ্চিন্ত ?  নিশ্চিন্তআসাদুল্লাহ সাহেব আগ্রহ নিয়ে বললেন, প্রেম সম্পর্কে তােমার ধারণাটা কি বল 

‘জি আচ্ছা, স্যার। আমি আসাদুল্লাহ সাহেবের ঘরে ঢুকে পড়লাম।। 

এই ঘর আগের মতই আছে। একটুও বদলায়নি। খাটে শুয়ে থাকা মানুষটা শুধু বদলেছে। ভরাস্বাস্থ্যের সেই মানুষ নেই। রােগাভােগা একজন মানুষ। মাথাভর্তি চুল ছিল, চুকমে গেছে। চোখের তীব্র জ্যোতিও ম্লান। নিজের তৈরি বেহেশতে জীবনযাপন করতে করতে তিনি সম্ভবত ক্লান্ত। 

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

আসাদুল্লাহ সাহেব বললেন, কেমআছ হিমু? ‘ভাল। ‘তােমাকে দেখে আমার ভাল লাগছে। ‘আপনাকে দেখে আমার তেমন ভাল লাগছে না। মনে হচ্ছে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। 

‘স্বর্গে বাস করা ক্লান্তিকর ব্যাপার হিমু। আমি আসলেই ক্লান্তসময় কাটছে । 

সময় কাটছে না কেন?” ‘কিভাবে সময় কাটাব সেটা বুঝতে পারছি না। এখন বই পড়তে পারি না। 

বই পড়তে পারেন না? ‘নাবই পড়তে ভালাগে না, গান শুনতে ভাল লাগে না, শুয়ে থাকতে ভাল। লাগে না। যা ভালাগে না, তা করি নাবই পড়ি না, গান শুনি না। কিন্তু শুয়ে থাকতে ভানা লাগলেও শুয়ে থাকতে হচ্ছে। আই হ্যাভ নাে চয়েস। তুমি দাড়িয়ে আছ কেন হিমু, বােসমার বিছানায় বােস| আমি বলাম। আসাদুল্লাহ সাহেব মুখ টিপে খানিকক্ষণ মিট মিট করে হাসলেন। কেন হাসলেন ঠিক বােঝা গেল না। হঠামুথেকে হাসি মুছে ফেলে গম্ভীর গলায় বললেন – এখন আমি কি করছি জান?

‘জ্বি না, জানি না। আপনি বলুন, আমি খুব আগ্রহ নিয়ে শুনছি। ‘আমি যা করছি তা হচ্ছে মানসিক গবেষণা ‘সেটা কি? 

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

‘মনে মনে গবেষণা। কোন একটা বিষয় নিয়ে জটিব চিন্তা করছি কিন্তু সবই মনে মনেআমার সাম্প্রতিক গবেষণার বিষয় হল – নারী-পুরুষ সম্পর্ক। 

আমি হাসতে হাসতে বললাম, আমি তাে এইসব নিয়ে গবেষণা করছি না। কাজেই বলতে পারছি না। আপনি বরং বলুন গবেষণা করে কি পেয়েছেন। 

‘শুনতে চাও?” ‘হা চাই।। 

আসাদুল্লাহ সাহেব বুকের নিচে বালিশ দিয়ে একটু উচু হলেন। কথা বলা শুরু করলেন শান্ত ভঙ্গিতে এবং খুব উৎসাহেসঙ্গে। 

‘হিমু শােন, গবেষণা না – একজন শয্যাশায়ী মানুষের ব্যক্তিগত চিন্তা। চিন্তাও ঠিক না – ফ্যান্টাসি। আমার মনে হয় কি জান? সৃষ্টিকর্তা বা প্রকৃতি প্রতিটি ছেলেমেয়েকে পাঁচটি অদৃশ্য নীলপদ্ম দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান। এই নীলপদ্মগুলি হল – প্রেমভালবাসা। যেমন ধর তুমিতােমাকে পাচটি নীলপদ্ম দিয়ে পাঠানাে হয়েছে। এখন পর্যন্ত তুমি কাউকে পাওনি যাকে পদ্ম দিতে ইচ্ছে করেছে।

কাজেই তুমি কারাের প্রেমে পড়নি। আবার ধর, একটা সতেরাে বছরের তরুণীর সঙ্গে তােমার পরিচয় হল। মেয়েটির তােমাকে এতই ভালাগলাে যে, সে কোনদিকে না তাকিয়ে ভবিষ্যৎ চিন্তা না করে তার সবকটি নীলপদ্ম তােমাকে দিয়ে দিল। তুমি পদ্মগুলি নিলে কিন্তু তাকে গ্রহণ করলে না। পরে এই মেয়েটি কিন্তু আর কারাে প্রেমে পড়তে পারবে না। সে হয়ত এক সময় বিয়ে করবে, তার স্বামীসঙ্গে ঘর সংসার করবে কিন্তু স্বামীর প্রতি প্রেম তার থাকবে না। 

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

আমি বললাম, আর আমাকি হবে? আমার নিজের পাঁচটি নীলপদ্ম ছিল, তার সঙ্গে আরাে পাচটি যুক্ত হয়ে পদ্মের সংখ্যা বেড়ে গেল না?” 

খা, বাড়ল। ‘তাহলে আমি কি ইচ্ছা করলে এখন কাউকে পাচটির জায়গায় দশটি পদ্ম দিতে 

পারি? ‘তা পার না। অন্যের পদ্ম দেয়া যাবে না। তােমাকে যে পাচটি দেয়া হয়েছে শুধু সেই পাচটি দেয়া যাবে। 

‘পাচটি কেন বলেছেন? পাচের চেয়ে বেশি নয় কেন? 

পাচ হচ্ছে একটা ম্যাজিক সংখ্যা। এই জন্যেই বলছি পাঁচ। আমাদের ইন্দ্রিয় পাচটি। বেশিরভাগ ফুলের পাপড়ি থাকে পাচটি। পাচ হচ্ছে একটি মৌলিক সংখ্যা তবে পাচের ব্যাপারটা আমার কল্পনা, পঁচের জায়গায় সাতও হতে পারে। আমার হাইপােথেসিস তােমার কাছে কেমন লাগছে

‘হ্যা প্রেম। হিমু, তুমি কখনাে কোন মেয়ের প্রেমে পড়েছ? ‘না।‘মেয়েরা তােমার প্রেমে পড়েছে? 

আসাদুল্লাহ সাহেব হাসলেনপুরানো দিনের সেই চমৎকায় আসিআমি চমক 

অকাল আমি দিনরাত্র টা নিয়েই ভারিমার কাছে মনে হয় পৃথিবীর বেলিয়াস আনুষ নীলপদ্ম নিয়ে ঘুরে দােয়ায়, সেয়ার মানুপায় না। 

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

অলকে হত্র নিতে চায় নালাহু মুত পারিঅলােক পাল মুদ্রা করুত চুায় নাবার এখনীপ্ত হতে পার, পদুখুলি দেয়া হয় স্কুল মানুষকেদয়া স্কুল সে পাই সুলাই সুঝল নাএই হচ্ছে আমার নীলপদ্ম বিশ্বায়তোমাকে বললাম, তুমি  তানন্দন জায়গায় ঘুরে জােড়াও, অনেকের সঙ্গে মেশ, আমায় হিন্দুলিটা পরীক্ষা করে। 

 জি আচ্ছতরে আমার কি মনে হয় জানে? আমার মনে হয়, কিছু কিছু রহস্যময় আপার সম্পর্কে কাল থিরি না নেয়াই ভালজিৱি বা হুইস্পাথেসিস সুস্য নষ্ট করে। থাকুক না কিছু বহুসাসন্ধ্যাবেলা সূর্য খে, সকালে খঠেকত রহস্যময় একটা ব্যাপারকিন্তু পৃথিবীস্মৃহিক গতির দুনি এটা হঞ্জুে জানার পর আন্ত রহস্য থাকে না

আমি আমার নীলপদ ঘিরি মারিয়াকে দেখে দেখেই তরি করেছিমারিয়া জার জীবনের প্রথম প্রেমপৱটি (মাক্ষ লাখখুব অল্প বয়সে লেখেকাজেই আমার থিরি অনুযায়ী তার বণ্টী নীলপদ্ম সোমার কাছে। 

চিঠি লেখার ব্যাপারটি আপনি জানেন

জানিআমার মেম্বের অন আমার চুক্তি ছিল, সে ক্লার ঈীবনের প্রথম প্রেমপত্রটি আমাকে দেখিয়ে লিখবেমারিয়া চুক্তি রক্ষা করছেআমাকে চিঠিটি দেখিয়েছে, তবে আমি যেবুঝতে না পারি সে জন্য ছেলেমানুখী এক সাংস্কৃতিক সত্য বাহান্থ কােছ। 

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

আপনি সেই সামুকেতিক চিঠিন অর্থ সঙ্গে সন্দে বুঝে ক্ষেলেছেন ? মশাইসুর প্লান করেছি বৃক্ষতে পারেনিআধিয়া সেই চিঠি ফাক লিখেছিল সুকি আপনাকে বলেছে

নাএবে আমি অনুমান করছিআমার অনুমানক্তি খারাপ নাহিম শােন, আমার অল্পেটা পড়াশােনার জান ল্যে চাল যাচ্ছেআমি নিক্কেই জোর করে পাঠিয়ে নিচ্ছিমলের মে শক্তি মানুষকে চালিত কার আমার মেয়েটার মনের মেই শক্তি নষ্ট হয়ে গেছেএক্ষে সেই শক্তি ফেলে দেয়া আমার পক্ষে সন্ত্র হচ্ছে নাকাজটা আমি জামাক নিয় করতে চাইএই জানাতোমাক এত ব্যস্থ হয়ে খুঁজছি।’ 

মনের শক্তি অানাের কাজটা আপনি করতে পারছেন না কেন ? আমার উপর মেয়েটির যে বিশ্বাস ছিল সেই বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেছে। 

ত্তিকাল এক ধরনের বাধ্যএক ধরনেয় অন্ধকারকোন বিষয় সম্পর্কে পঞ্চাশ সেই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের দূরত্ব তৈরি করিয়ে দেয়। 

‘বুঝতে পাছি না‘ 

যেমন ধরুন, আপনার নীলপদ্ম শিরিটা জানার পর থেকে আমার কি হৰে ? কান মেয়ের সঙ্গে লেখা মুলে আমি প্রস্থ, স্বচ্ছ, এই মেলেটিকে কি নীলপ দেয়া যায় ! দেয়া গেলে কা দেয়া যায় মেয়েটি তার নিজের নীলপদ্রপুলি কি করছে?

হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৪ 

কটকে দিয়ে ফেলেছে? আমার হাইপোথেসিম তুমি এক সিরিয়াসলি নি কেন? কোমাকে তাে জ্বাই আসাদুল্লাহ, সহ আকিটা সিগারেট ধরালেনসিগারেট লম্বা টাদিয়ে অললেন তুমি কি লক্ষ্য করে মারিয়ার মার নামে দালা নিল পলিশ 

আসাদুল্লাহ সাহেব হাত বাড়িয়ে সিগারেট নিলেনসিরটি ধরিয়ে চিন্তিত মুখে টানতে লাগলেআমি বললাম, আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়ছেনঅদ্ধি আমি জ্বাসি

আসাদুল্লাহ সাম্বে বলল, তোমার কি মারিয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছেছি না। 

মাহিয়া বাসায় আছিনিজের বস্তু বসে আছে শাল্লা সাগই দেয়া কারনাকথা বলে নাএমকি স্বামীর সঙ্গে না। 

লক্ষ্য করেছি নেল পলিশের এই এক্সপেরিমেন্ট অনেকদিধরেই করা হচ্ছেমারিয়ার মা প্রলােকের শ্রমে পড়েছেতারা শিগশিৱই বিয়ে করায়আর্মি সব জেলথ কিছু বলছি নামারিয়া এতে আহুত জুয়াইজীবনে সে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। 

আমাকে কি করতে বললএতে জীবনের জটিলঙ্কার অংশটার কথা বুছিয়ে বল

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম খন্ড-২৫

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *