জানি মামলা তাে তেমন
“সাদেক সাহেব গীর গলায় বললেন, শুধু মানহানি মামলা জোলালাে হয় না। সাথে আরাে কিছু অ্যাড করেছি।‘
‘আমি কৌতুহলী হয়ে বললাম, কী আড্র করেছেন।
সাদেক সাহেব ভারী গলায় বললেন, ‘অ্যাড করেছি—শনে গুন্ডার সহায়তায় কোনােরকম পূর্ব উসকানি ছাড়া ধারাল অস্ত্র–শনিক লােহার রড, কিরিচসহ বরযাত্রীদের উপর আচমকা চড়াও হয় । দ্রব্যসামগ্রী যেমন মানিব্যাগ, রিস্টওয়াচ লুণ্ঠন করে। মহিলাদের ১৯, লাহিত করে। পূর্বপরিকল্পিত এই আক্রমণে বরসহ তিনজন গুরুতর তা তাহারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে। বরযাত্রীদের দু‘টি গাডি ক্ষতিসাধন করা হয়। একটি গাড়িতে অগ্নি সংযােগ করা হয় । এই আর। ডিটেল দেয়া হবে।
আমি হতভঙ্গ হয়ে বললাম, বলেন কী! সাদেক সাহেব তৃপ্তির হাসি হেসে বললেন, সাজানাে মামলা অনিশ্চিত চেয়েও কঠিন হয়। অরিজিন্যাল মামলায় আসামি প্রায়ই খালাস সে সাজানাে মামলায় কখনাে পায় না। কথা হল এভিডেন্স ঠিকমতো পেজ =”
চলতে লাগলেন। আমি “নকটা ঝেড়ে আমি কুলু” বলে বের হয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে উধাও হলাম। সালেক সাহেব ভয়াবহ ব্যক্তি আমি উপস্থিত থাকলে পা আজ ফরিয়াদী হিসেবে আমাকে ও হাসপাতালে ভরতি করিয়ে দিতে পারে। মামলা আরাে পােক্ত করার জন্যে মুগুর দিয়ে পা ভেঙ্গে ফেলাও বিচিত্র না ।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৫
পথে নেমেই মােফাজ্জল এবং হিরুলের সঙ্গে দেখা। ওরা ঘােরাঘুরি করছে। আমাকে দেখে অকূলে কূল পাওয়ার মতাে ছুটে এল= হিমু ভাইয়া না? রাল অস্ত্রশ যেমন ও হয়। বরযাত্রীদের শারীরিকভাবে গুরুতর আহত হয়। ন‘টি গাড়িরও প্রভূত হয়। এই আর কী! সব লা অরিজিন্যালের স্যারের বাসাটা ভুলে গেছি। স্যার আসতে বলেছিলেন।‘ এই বাড়ি । বাড়ির ভেতরে ঢুকবেন না। গেট দিয়ে সােজা ছাদে চলে যান। ‘স্যারের শরীর কেমন হিমু ভাইয়া? ‘শলীর ভাল।‘
ফেরেশতার মতাে আদমি । উনার মত মানুষ হয় না। স্যারের জন্যে একটা পাঞ্জাবি এনেছি।’
খুব ভাল করেছেন । দাড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করবেন না । চলে যান। তীর গেটের ভেতর ঢুকে পড়ল।
রাত দশটার মতাে বাজে। মীরাদের বাড়িতে একবার ঐকি দিয়ে যাব কি–না ভাবছি। মীরা ফিরেছে কি না দেখে যাওয়া দরকার।
মীরার বাবা ঘরে বাইরে বারান্দায় বসে আছেন। আমাকে দেখে উতে এলেন। আমি বললাম, মীরা এখনও ফেরেনি।
তিনি হাহাকার—মেশানো গলায় বললেন, জ্বি না ।
“চিন্তা করবেন না চলে আসবে। এখন মাত্র দশটা চল্লিশ। বােটা–সাড়ে বারােটার দিকে চলে আসবে।‘
ভদ্রলােক অদ্ভুত চোখে তাকাচ্ছেন। তিনি এখন পুরােপুরি বিভ্রান্ত“। আমি আবার ও পথে নামলাম। এভিডেন্স পাবেন কোথায়?‘
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৫
বাংলাদেশে এভিডেন্স কোনাে সমস্যা না। মার খেয়ে পা ভেঙেছে চান? পা ভাঙা লােক পাবেন। X–Ray রিপাের্ট পাবেন। রেডিওলজিস্টের সাটিফিকেট। পাবেন । টাকা খরচ করলে দুনম্বরি জিনিস সবই পাওয়া যায় ।
মেজো ফুপু বললেন, টাকা আমি খরচ করব। লোকের মুখে আমি নন ছেলে। দেব । সাদেক মামলা শক্ত করার জন্যে তোমার যা যা করা লাগে কারাে দরকার। হলে আমি আমার গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে বলব ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে।। ” তা লাগবে না। পুরানাে গাড়ির দোকান থেকে ভাঙ্গা একটা গাড়ি এনে আগুন লাগিয়ে দিলেই হবে। তবে গাড়ির বু বুক লাগবে। এটা অবশ্যি কোন ব্যাপার না।
ফুপু তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, তুমি থাকায় ভরসা পাচ্ছি। ওদের আমি তুর্কি নাচন নাচিয়ে ছাড়ব।। | ‘সাদেক সাহেব বললেন, বাদলকে একটু দরকার। ওকে ব্যাক ডেট দিয়ে একটা ভাল ক্লিনিকে ভরতি করিয়ে দিতে হবে। মার খাবার পর মাথায় আঘাত পেয়ে আন্ডার অবজারভেশনে আছে এটা প্রমাণ করার জন্যে দরকার। কিছু এক্সরে–টেক্সরে করা দরকার।‘
ফুপু উজ্জ্বল মুখে বললেন, তুমি অপেক্ষা করাে। বাদল আসুক। আজই। তাকে ক্লিনিকে ভরতি করিয়ে দিব । মাছ দেখেছে বরশি দেখেনি। সুরুপু প্রবল উৎসাহে মামলার সূন্ন বিষয় নিয়ে সাদেক সাহেবের সঙ্গে কথা পারব। এক কাজ করলে কেমন হয় ভীড়ের ব্লাস্তা ছেড়ে কাকা রাস্তায় চলে যাই। উঠাই নিয়ম।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৫
শুধু গা ঘেসে কোন গাড়ি যদি হার্ড ব্রেক করে তাহলে চমকে উঠাই নিয়ম চমকে উঠা না, চমকে পেছনে ফিরতে হবে। এ রকম পরিস্থিতির মুখোক মাঝে মধ্যেই হই। রূপা এই কাণ্ডটা সবচে বেশী করে । গাড়ি নিয়ে হুট করে ঘেসে নাভাবে, এবং বিকট শব্দে হর্ণ দেবে। ভেতরে ভেতরে চমকালেও নাই। প্রকাশ করি না। কিছুই ঘটে নি ভঙ্গিতে হাটতে থাকি যতক্ষণ না গাডিল থেকে চেঁচিয়ে কেউ না ডাকে।
এবারও তাই করলাম। ঘসি করে গা ঘেসে গাড়ি থেমেছে। হর্ণ নয়। হচ্ছে। আমি নির্বিকার ভঙ্গিতে সামনে এগুচ্ছি।
“হিমু সাহেব! এই যে হিমু সাহেব!‘
আমি তাকালাম। স্টিয়ারিং হুইল ধরে অপরিচিত একটা মেয়ে বসে আছে । মেয়েটার মাথায় ইরানী মেয়েদের মত রঙ্গিন ঝলমলে স্কার্ফ । মেয়েটিকে। দেখাচ্ছে ও ইরানীলের মত ।
আমাকে চিনতে পারছেন না?” ‘ছি না।‘ ‘সেকি । ভাল করে দেখুনতাে।”
আমি ভাল করে দেখেও চিনতে পারলাম না। বাংলায় কথা বলে কোন। ইরানী তরুণীর সঙ্গে আমার পরিচয় নেই।
“আমি ফারজানা ।”
“ও বলছেন তার মানে এখনাে চিনতে পারেন নি। আমি ডাক্তার। আপনার চিকিৎসা করেছিলাম । ঐ যে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন।‘
এখন চিনতে পেরেছি। আপনি ড্রেস এজ য়্য লাইক প্রতিযােগিতা করছেন। নাকি? ইরানী মেয়ে সেজেছেন।‘
“ডাক্তাররা সাজতে পারবেনা এমন কোন আইন আছে?‘
না আইন নেই।‘ “আপনার যদি তেমন কোন কাজ না থাকে তাহলে উঠে আসুন।‘
আমি গাড়িতে উঠলাম। ফারজানা বলল, আমি খুবই আনাড়ি ধরনের। ড্রাইভার। আজই প্রথম সাহস করে একা একা বের হয়েছি।।
আপনার কাজ হল সামনের দিকে লক্ষ্য করা, যথাসময়ে আমাকে ওয়ানিং ‘ঢাকা শহরে ফাকা ব্রাত্যা কোথায়?
Read More