‘আমি জানি না তবে আমি নিশ্চিত উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা জানেন।
‘কাচকলা। কেউ কিছু জানে না।‘মারা সাহায্য করতে পারি।‘ এজী এটেনা। এই ক্ষের সঙ্গে যোগাযােগ ‘বিরক্ত করবে নামুমুতে দাও।‘ সমি লম্য বােঝার ব্যাপারে তোমরা গাছের কাছে সাহায্য প্রাণ কেন আমাদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেইতাে আমরা সাহায্য কক
তােমার সাহায্য করতে পার?‘ “অবশ্যই পারি। আমাদের পাতাগুলি অসম্ভন শক্তিশালী এক এন্টেনার সাহায্যে আমরা এই বিপুল সৃষ্টি জগতের সব বৃক্ষের সঙ্গে যে ব্ৰক্ষা করি।‘
“তাই নাকি?
মনে কর সিরাস নক্ষত্রপুঞ্জের একটা গ্রহে গাছ আছে। আমরা সেই s সঙ্গে যােগাযােগ করতে পারি। আমরা সেই গাছ থেকে তােমাদের বৈজ্ঞানিক তথ্য এনে দিতে পারি।‘ বাহ ভাল তাে।
পথিবীর মানুষরা অমর হতে চায়। কিন্তু অমরত্বের কৌশল জানে না। ৯ এলােমিছা নক্ষত্রপুঞ্জেই একটা গ্রহ আছে যার অতি উন্নত প্রাণীরী আমানত কৌশল জেনে গেছে। তােমরা চাইলেই আমরা তােমাদের তা দিতে পারি।‘
“শুনে অত্যন্ত প্রীত হলাম।‘ তুমি কি চাও”
না। আমি চাই না। আমি যথাসময়ে মারে যেতে চাই। হাজার হাজার বছর বেছে থেকে কি হবে।‘
“তুমি চাইলে আমি তােমাকে বলতে পারি।’
না আমি চাচ্ছি না। স্বাণে প্রাপ্ত কোন ঔষধের আমার প্রয়ােজন নেই। তুমি। যথেষ্ট বিরক্ত করেছ। এখন বিদেয় হও। ভাল কথা তােমার নাম কি?
“আমার নাম টানমেনালিয়া বেলেরিকা।‘ এমন অদ্ভুত নাম?
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৭
তর এক কাপ চা খাওয়া দরকার। বনের ভেতর কে আমাকে চা মাওয়াবে। আমি গলা উচিয়ে বললাম, আমার চারদিকে যে সব গাছ ভাইরা আছেন তাদের বলছি। আমার খুব চায়ের তৃষ্ণা হচ্ছে– আমি আপনাদের অতিথি । আপনারা কি আমাকে এক কাপ চা খাওয়াতে পাবেন।
প্রশ্নটা করেই আমি চুপ করে গেলাম । উত্তরের জন্যে কান পেতে রইলাম । উত্তর পাওয়া গেল না তবে কয়েক মুহূর্তের জন্যে আমার মনে হচ্ছিল গাছ উত্তর দেবে।
দরজায় কোনাে কলিংবেল নেই।
পুরানাে স্টাইলে কড়া নাড়তে হল। প্রথমবার কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে শ্ৰেহ্মা জড়ানাে গলায় জবাব এল– কে? আমি চুপ করে রইলাম। প্রথমবারের “কে“–তে জবাব দিতে নেই। দ্বিতীয়বারে জবাব দিতে হয়। এই তথ্য আমার মামার বাড়িতে শেখা । ছােট মামা বলেছিলেন—
| ‘বুঝলি হিমু, প্রথম ডাকে কখনাে জবাব দিবি না। অর্পার না! তুই হয়তাে ঘুমচ্ছিস, নিশুতি রাতে বাইরে থেকে কেউ ডাকল— হিমু! তুই বললি, জ্বি। তা হলেই সর্বনাশ! মানুষ ডাকলে সর্বনাশ না। মানুষ ছাড়া অন্য কেউ ডাকলে সর্বনাশ । বাধা পড়ে যাবি। তােকে ডেকে বাইরে নিয়ে যাবে। এর নাম নিশির ডাক। কাজেই সহজ বুদ্ধি হচ্ছে— যে–ই ডাকুক প্রথমবারে সাড়া দিবি না। চল করে থাকবি । দ্বিতীয় বারে সাড়া দিবি । মনে থাকবে?”
আমার মনে আছে বলেই প্রথমবারে জবাব না দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্যে আপেক্ষা করতে লাগলাম। আবার কড়া নাড়লাম যাতে মিসির আলি সাহেব দ্বিতীয়বার বলেন— কে? আমি আমার পরিচয় দিতে পারি। | মিসির আলি দ্বিতীয়বার ‘কে’ বললেন না। দরজা খুলে বাইরে তাকালেন। খুব যে কৌতুহলী হয়ে তাকালেন তাও না।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৭
রাত একটার আগমুকের দিকে যতটুকু কৌতুহল নিয়ে তাকাতে হয় সে কৌতুহলও তার চোখে নেই। পরনে লুঙ্গি । খালি গায়ে শাদা চাদর জড়ানাে । ভদ্রলােকের মাথা ভরতি কাচাপাকা চুল ।। আমি ভেবেছিলাম টেকো মাথার কাউকে দেখব। আইনষ্টাইন মার্কা এত চুল । ভাবিনি। আমি বললাম, স্যার মালিকুম ।
‘ওয়ালাইকুম সালাম।‘ “আমার নাম হিমু। “আচ্ছা।‘ ‘আপনার সঙ্গে কী কথা বলতে পারি?
মিসির আলি দরজা ধরে দাড়িয়ে আছেন। তার দৃষ্টি আগের মতাে কৌতূহল শূন্য। তিনি কী বিরক্ত? বুঝা যাচ্ছে না। ভদ্রলােক কি ঘুম থেকে উঠে এসেছেন? বােধ হয় । ঘুমন্ত মানুষ প্রথম বার কড়া নাড়তেই কে বলে সাড়া দেবে না।
আমি বিনীত ভঙ্গিতে বললাম, কথা বলার জন্যে রাত দুটা খুব উপযুক্ত
‘এটা বৈজ্ঞানিক নাম– সহজ নাম বহেরা। আমরা কিন্তু অদ্ভুত গাছ ।। শালবনের ফঁাকে গজাই এবং লম্বায় শালগাছকেও ছাড়িয়ে যাই। আমাদের বাকলের রঙ কি বলতাে? বলতে পারলে না। আমাদের বাকলের রঙ নীল। আচ্ছা যাও আর বিরক্ত করব না। এখন ঘুমাও।
আমার ঘুম ভাঙ্গল সন্ধ্যার আগে আগে। জেগে উঠে দেখি সত্যি সত্যি। একটা বহেরা গাছের নিচেই শুয়ে আছি। গাছ ভর্তি ডিমের মত ফুল। আমি খানিকটা ধাধায় পড়ে গেলাম। আমার পরিস্কার মনে আছে আমি শুয়েছিলাম, শাল গাছের নিচে। শালের মুল দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
ঢাকায় যেতে হবে পায়ে হেঁটে। সেটা খুব খারাপ হবে না। শীতকাল হাটার আলাদা আনন্দ। তবে ঢাকায় কতক্ষণে পৌছাৰ কে জানে। মিসির আলি। সাহেবের সঙ্গে আমার দেখা করা দরকার । দেখাটা আজ রাতেও হতে পারে। আপনি যদি বলেন পনি জেগে ছিলেন তাই দরজার কড়া নেড়েছি।
Read More