আপনি যদি সময় নয়। আপনি জেগে ছিলেন তাই দরজা তাহলে অন্য সময় আসব।
হােক আসুন, ভেতরে আসুন। দরজার হুক লাগালেন । ভউ হলে দরজার দুক জন্যে এত ঝামেলা একটা পেরেক উচু হয়ে সম্পন্ন কাউকে দেখলে অবশ্যই বিশ্বাস কর । “আপনি কী দেখতে চান?”
“জি না। আমার কৌতূহল কম। নানান ঝামেলা করে কোনাে এক পীর মাহেবের কাছে যাব, তার কেরামতি দেখব, সেই ইচ্ছা আমার নেই।
“কেউ যদি আপনার সামনে এসে আপনাকে কোনাে কেরামতি দেখাতে চায়। আপনি দেখবেন?‘ ” মিসির আলি চায়ের মগ নামিয়ে রাখলেন। এদিক–ওদিক তাকাচ্ছেন সবত সিগারেট খুঁজছেন। এই ঘরে সিগারেট নেই। আমি ঘরটা খুব ভালমতাে। দেখেছি। মিসির আলি সাহেবের কাছে যেহেতু এসেছি স্বভাবটাও তার মতাে করার চেষ্টা করছি। পর্যবেক্ষণ–ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবার চেষ্টা। আমি লক্ষ্য করলাম, মিসির আলি সাহেবের চেহারায় সুক্ষ হতাশার ছাপ পড়ল —অর্থাৎ শােবার ঘরেও সিগারেট নেই। নিকোটিনের অভাবে তিনি খানিকটা কাতর বােধ।
ন। আমি বসে বসে ঘরের কিছই চোখে পড়ছে না। লে। টেবিলের উপরে বাংলা
– “আমি বললাম, স্যার, আমার কাছে সিগারেট নেই।‘
মনি জেগেছিলাম না। ঘুমুচ্ছিলাম। যাই হােক আসুন,আমি ভেতরে ঢুকলাম। মিসির আলি সাহেব দার . নেহার লুকটা বেশ শতি, লাগাত তার কষ্ট হল। অন্য কেউ হলে। জানত না। যে অতিথি কিছুক্ষণের মধ্যে চলে যাবে তার জন্যে । করে দরজা বন্ধ করার দরকারটা কি।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
বসুন। ঐ চেয়ারটায় বসুন। হাতলের কাছে একটা পেরেক s. আছে। পাঞ্জাবিতে লাগলে পাঞ্জাবি ছিড়বে।‘
মিসির আলি সাহেব পাশের ঘরে ঢুকে গেলেন। আমি বসে । সাজসজ্জা দেখতে লাগলাম। উFেশ করার মতাে কিছুই চোখে প কয়েকটা বেতের চেয়ার। গােল একটা বেতের টেবিল। টেবিলের উপর ম্যাগাজিন। উপরের পাতা ছিড়ে গেছে বলে ম্যাগাজিনের নাম পড়া যায়। এক কোনায় একটা চৌকি। চোকিতে বিছানা পাতা। এই বিছানায় কে দলে মিসির আলি সাহেব মানে হয় না। এই ঘরে আলো কম । বিছানায় শুয়ে পড়া যাবে না। মিসির আলি সাহেবের নিশ্চয়ই বিছানায় শুয়ে বই a অভ্যাস। তাঁর শােবার ঘরটা দেখাতে পারলে হত ।
মিসির আলি ঢুকলেন। তার দুহাতে দুটা মগ । মগভরতি চা ।নিন চা নিন। দু‘চামচ চিনি দিয়েছি—আপনি কী চিনি আরও বেশি মানায় “জি না। যে যতটুকু চিনি দেয় আমি ততটুকুই খাই।‘
“তিনি আমার সামনের চেয়ারটায় বসালেন। এরকম বিশেষত্বহীন চেহার। মানুষ আমি কম দেখেছি। কে জানে বিশেষত্বহীনতাই হয়তাে তার বিশেষত। চা। খাচ্ছেন শব্দ করে। নিজের চায়ের স্বাদে মনে হয় নিজেই মুগ্ধ । আমি এত আরাম। করে অনেক দিন কাউকে চা খেতে দেখিনি।
তারপর হিমু সাহেব, বলুন আমার কাছে কেন এসেছেন। “আপনাকে দেখতে এসেছি স্যার। | ‘ও আচ্ছা। এর আগে বলেছিলেন— কথা বলতে এসেছেন। আসলে। কোনটা
ঠোঁটে সূক্ষ্ম একটা হাসির ছায়া দেখলাম । হাসিটা কী ব্যঙ্গের? কিংবা আমার ছেলেমানুষীতে তার হাসি পাচ্ছে। না মনে হয় ।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
‘স্যার, আমি নিজেও সামান্য ভবিষ্যৎ বলতে পারি। ঠিক আড়াইটার সময় কেউ একজন এসে আপনাকে এক প্যাকেট সিগারেট দেবে।’ ” মিসির আলি এবারে সহজ ভঙ্গিতে হাসলেন। চায়ের মগে চুমুক দিতে দিতে বললেন, সেই কেউ একজনটা কী আপনি?”
‘জি স্যার। আড়াইটার সময় আমি আপনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আপনাকে এক প্যাকেট সিগারেট কিনে দিয়ে যাব।‘
“দোকান খােলা পাবেন? ‘ঢাকা শহরে কিছু দোকান আছে খােলেই রাত একটার পর।‘
দুটাই । চোখ বন্ধ করে তাে আর কথা বলব না—আপনার দিকে তাকিয়েই।
‘তাও তাে ঠিক। বলুন কথা বলুন। আমি শুনছি।‘
“মানুষের যে নানান ধরনের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার কথা শােনা যায় আপনি কী। তা বিশ্বাস করেন?”
‘আমি যে রকম অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ এখনও কাউকে দেখিনি কাজেই বিশ্বাস–অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসে না। আমার মন খেলা, তেমনি তা
“আমি মিসির আলি সাহেবের দিকে একটু ঝুঁকে এসে বললাম, আমি কিন্তু স্যার মাঝে মাঝে ভবিষ্যৎ বলতে পারি। সব সময় পারি না—হঠাৎ হঠাৎ পারি।’
ভালতাে!” “আপনি কী আমার মতাে কাউকে পেয়েছেন যে মাঝে মাঝে ভবিষ্যৎ বলতে। পারে।‘
সব মানুষই তাে মাঝে মাঝে ভবিষ্যৎ বলতে পারে। এটা আলাদা কোনো ব্যাপার না। ইনটিউটিভ একটা বিষয়। মাঝে মাঝে ইনটিউশন কাজে লাগে মাঝে মাঝে লাগে না। মস্তিষ্ক ভবিষ্যৎ বলে যুক্রিম দিয়ে । সেইসব যুক্তির পুরােটা। আমরা বুঝতে পারিনা বলে আমাদের কাছে মনে হয় আমরা আপনা আপনি ভবিষ্যৎ বলছি।
ওয়ার্কের চেয়েও সামান্য পনার ভাল লাগে, টা ম্যাজিক দেখাবার পর “হ্যা, তা করবে। মানুষ খুব যুক্তিবাদী প্রাণী হলেও তার মধ্যে অনেকখানি অংশ আছে যুক্তিহীন । মানুষ যুক্তি ছাড়াই বিশ্বাস করতে ভালবাসে। প্রাণী। হিসেবে মানুষ সব সময় অসহায় বােধ করে। সে সারাক্ষণ চেষ্টা করে অসহায়ত থেকে মুক্তি পেতে । পীর–ফকির, সাধু–সন্নাসী হস্তরেখা, অ্যাস্ট্রলজি, নিউমালোলজির প্রতি এইসব কারণেই মানুষের বিশ্বাস।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
‘আপনার ধারণা মানুষ কোনাে বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে নি?“। | ‘অবশ্যই মানুষ বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। একদিন যে মানুষ সমগ্র নক্ষত্রমল জয় করবে তার ক্ষমতা অসাধারণ । তবে তার মানে এই না সে। ভবিষ্যৎ বলবে। দুটা বেজে গেছে— আপনার কথা ছিল না আমার জন্যে এক প্যাকেট সিগারেট এনে দেয়া”
আমি উঠে দাড়ালাম । মিসির আলি বললেন, চলুন আপনার সঙ্গে যাই। কোন দোকানটা রাত দুটার সময় খােলা থাকে আমাকে দেখিয়ে দিন। মাঝে মাঝে সিগারেটের জন্যে খুব সমস্যায় পড়ি।
মিসির আলি তার ঘরের দরজায় তালা লাগালেন না। তালা খুঁজে পাচ্ছেন। । ঘর খােলা রেখে গভীর রাতে বের হচ্ছেন তার জন্যেও তার মধ্যে কোনাে অস্বস্তি লক্ষ্য করলাম না। ‘ঘর খােলা রেখে বাইরে যাবার অভ্যাস তাঁর নতুন না এটা বােঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, তার মধ্যেও খানিকটা হিমু ভাব আছে।ডিলিউশন হচ্ছে ল খিনি,
আমার ভবিষ্যৎ বলার ক্ষমতা ‘ইনটিউটিভ (গে ওয়ানে এ লেনি। আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না বলে আপনার কাছে এসেছি “আপনার ভবিষ্যৎ বলার ক্ষমতা সম্পর্কে অন্যরা জানে?
অন স্লাভাছি থাকে, যারা আমাকে ভালমতাে চেনে তালা , “আপনার আশেপাশের মানুষদের এই ক্ষমতা দেখাতে আপনার লে তাই না?‘
ভালই লাগে। একজন মা ডশিয়ান সুন্দর একটা ম্যাজিক দেন যেমন আনন্দ পায়—আমিও সে রকম আনন্দ পাই ।।
হিমু সাহেব!‘ “মি স্যার?
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
আমার ধারণা আপনি একধরনের ডিলিউশনে ভুগছেন। ডিলিউশন নিজের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা। যে কোনাে কারণেই হােক আপনার ভেতর এ ধারণা জলেছ আপনি সাধুসন্ত টাইশের মানুষ । আপনার খালি পা। পাবি এইসব দেখে তাই মনে হচ্ছে। যে কোনাে ডিলিউশন মানুষের একবার ঢুকে গেলে তা বাড়তে থাকে। আপনারও বাড়ছে।
আপনি আপনার ভবিষ্যৎ বলার ক্ষমতা নিয়ে একধরনের অহংকার বােধ করছেন আপনাকে যতই লােকজন বিশ্বাস করছে আপনার ততই ভাল লাগছে। এ রাত দু‘টায় আপনি আমার কাছে এসেছেন বিশ্বাসীর তালিকাবুদ্ধির উদনে। রাত দুটার সময় না এলে আপনি সকাল দশটায় আসতে পারতেন । আসেন নি। কারণ যে সাধু সেজে আছে সে যদি সকাল দশটায় আসে তা হলে তার প্রহসন থাকে না। রহস্য বজায় রাখার জন্যেই আসতে হবে রাত দুটার দিকে । হিম। সাহেল।
জ্বি স্যার?”
আপনার সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আপনি আমাকে নিজের সম্পর্কে কিছু বলেন নি। তবে আমি মােটামুটি নিশ্চিত নিজেকে অন্যের চেয়ে আলাদা। প্রমাণ করার জন্যে আপনি অদ্ভুত আচার–আচরণ করেন। যেমন আপনার পায়ের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আপনি প্রচুর হাটেন। মনে হচ্ছে রাতেই হাঁটেন।
কারণ দিনে হাঁটা তাে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে পরে। যেহেতু আপনি রাতে হাটেন— বিচিত্র সব মানুষের সঙ্গে আপনার পরিচয় আছে। আপনার ডিলিউশনকে পােক্ত করতে এরাও সাহায্য করে। এদের কেউ কেউ আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করে।। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা মানেই আপনাকে সাহায্য করা। আমার ধারণা এদের কেউ কেউ আপনাকে সাধুও ভাবে। আপনার পদধুলি নেয়।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
মানুষ কোনাে কারণ ছাড়াই একজনকে সাধু হিসেবে বিশ্বাস করতে শুরু
“জি স্যার? ‘আপনি আমার কথায় আপসেট হবেন না। আমি আপনাকে হার্ট করার ন্যে কিছু বলিনি।
“আপনি যে এ ধরণের কথা বলবেন তা আমি জানতাম । “সব জেনেশুনেই আমার কাছে এসেছেন?‘ “জি স্যার।‘
‘আমার ধারণা আপনি আমার কাছে এসেছেন অন্য কোন সমস্যা নিয়ে যা আপনি বলছেন না।”
স্যার আমি আপনাকে একটা জিনিস দেখাতে চাই।‘ ‘কি জিনিস?”
“আমি কিছুদিন আগে প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলাম। যা দেখে ভয় পেয়েছিলাম, সেই জিনিসটা আপনাকে দেখাতে চাই।‘
কেন? আপনি চান যে আমিও ভয় পাই?‘
‘আমার কাছে শুনে আপনি ব্যাপারটা সম্পর্কে ধারণা করতে পারবেন না।‘
তবু শুনি।” আমি ভয় পাবার গল্পটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বললাম। মিসির আলি
গরের মাঝখানে একবারও কিছু আনতে চাইলেন না। হ্যা ই পর্যন্ত বললেন না। সিগারেট কিনলাম। তিনি একটা সিগারেট ধরালেন। তারপর বললেন, আপনি একটা কাজ করুন। গল্পটা আবার বলুন।
“ আর বলব?‘ “হ্যা আবার।
তা অসীনের অনুসন্ধান করেন সামার ভেতর থেকে। মাসে ফিরে যেতে ইচ্ছা করছে না। মনে হচ্ছে, বাতটা হেঁটে হেঁটেই কাটিয়ে আনি ও ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসছে । পা ভারি হয়েছে। ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে লত। বস্তা ভাইয়ের পাশে গিয়ে কি শুয়ে থাকব? স্লিপিং ব্যাগে তাদের ডালি কেমন কাটছে সেটাও দেখতে ইচ্ছা করছে।
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
ছেলেটার নাম যেন কি? গাবুল না আনল না। অন্য কিছু। নামটা কি সে আমাকে বলে? “আচ্ছা প্রতিটি পাছিল নিল আনষের মত নাম আছে? গাছ মা‘কি তার গাছ শিশুদের নাম রাখেন। আন্না। যেমন গাছের নামে নাম রাখি শিমুল, পলাশ, বাবলা, এক্সা ও কি পছন্দের মানষের নামে তাদের পুত্র কন্যাদের নাম রাখে । যেমন একজনের নাম রাখল। হিমু, আরেকজনের সােলায়মান ।
ও হ্যা মনে পড়েছে—বস্তা ভাইয়ের পুত্রের নাম সুলায়মান । সুলায়মানকে
*দ্বিতীয় বার শুনে দেখি কেমন লাগে। আমি আবারাে গল্প শুরু করলাম। মিসির আলি সিগারেট টানতে টানতে তার বাসার দিকে যাচ্ছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছি এবং গল্প বলছি । তিনি নিঃশব্দে শুনে যাচ্ছেন। আমি তাঁর মুখে চাপা। হাসিও লক্ষ্য করছি ।
হিমু সাহেব।” ‘হি স্যালি।
“আপনার গল্পটা ইন্টারেস্টিং, আমি আপনার সঙ্গে পরে এই নিয়ে কথা
“আপনি যদি চান–যে জায়গাটায় আমি ভয় পেয়েছিলাম। সেখানে নিয়ে যেতে পারি।
‘আমি চাচ্ছি না।‘ “তাহলে স্যার আমি যাই।‘
“আচ্ছা । আবার দেখা হবে–ভাল কথা যে গলিতে আপনি ভয় পেয়েছিলেন আপাতত সেই গলিতে না ঢুকা ভাল হবে।‘
এই কথা কেন বলছেন? ‘হঠাৎ ব্রেইনে চাপ সৃষ্টি না করাই ভাল। মানুষের একটা অসুখের নাম। এরিকনােফোরিয়া‘ মাকড়সা ভীতি। এই অসুখ থেকে মানুষকে মুক্ত করার একটা পদ্ধতি হচ্ছে তার গায়ে মাকড়সা ছেড়ে দেয়া। মাকড়সা তার গায়ে কিলবিল করে হাটিৰে এবং রােগি বুঝতে পারবে যে মাকড়সা অতি নিরীহ প্রাণী। তাকে ভয় পাবার কিছু নেই। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে মাঝে মাঝে রােগ ভাল হয়— তবে কিছু ক্ষেত্রে খুব খারাপ ফল হয়–রােগি তখন চারদিকে মাকড়সা দেখতে পায় । আমি চাইনা আপনার ক্ষেত্রে এই ঘটনা না ঘটুক।‘
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
স্যার যাই?“।
স্লিপিং ব্যাগের ভেতর পিতাপুত্র দু‘জনই ঘুমুচ্ছিল। আমি তাদের ঘুম ভাঙ্গালাম না। তাদের পাশে শুয়ে পড়লাম । এরা মনে হচ্ছে, আমার জন্যে তাগ রেখেছে। পাশের জায়গাটায় খবরের কাগজ বিছিয়ে রেখেছে। শুধু যে খবরের কাগজ তা না । বরের কাগজের উপর বড় পলিথিনের চাদর । আমি শােনামাত্র শিপিং ব্যাগের মুখ খুলে গেল। সােলায়মান—তার মাথা বের করল।
“কি খবর সুলায়মান ? সুলায়মান হাসল । তার সামনের দুটা দাঁত পড়ে গেছে ।
দাত পড়া সুলায়মানকে সুন্দর দেখাচ্ছে । সুলায়মান লাজুক গলায় বলল, আফনের জন্যে বাপজান জায়গা রাখছে।
“ভাল করেছে। ‘এখন থাইক্যা আফনের এই জাগা রিজাভ“।’
বাচা গেল। সব মানুষেরই কিছু না কিছু রিজার্ভ জায়গা দরকার। তুই কি পড়তে পারিস?
আমি চলে আসছি। রাস্তার শেষ মাথায় গিয়ে ফিরে তাকালাম। মিসির আলি। ঘরে ঢুকেন নি। এখনাে বাইরে দাড়িয়ে সিগারেট টানছেন। তাকিয়ে আছেন। আকাশের দিকে কি দেখছেন তারা। আমি একটু বিস্মিত হলাম– মিসির আলি। ধরনের মানুষরা মাইক্রোসকোপ টাইপ । কাছের জিনিসকে তারা সাবধানে। দেখতে ভালবাসেন। ধরা ছোঁয়ার বাইরের ভগতের প্রতি তাদের আগ্রহ থাকার পড়াশােনাতাে করা দরকাররে ব্যাটা।” “গরীব মানুষের পড়ালেখা লাগে না।‘‘কে বলেছে?” কেউ বলে নাই— আমি জানি।‘
হিমুর দ্বিতীয় প্রহর খন্ড-১৮
এখন থেকেই নিজে নিজে জানা শুরু করেছিস?‘ সুলায়মান দাঁত বের করে হাসল । চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে বলল, আফনেরে। কি ড্রাকুম । ‘যা ডাকতে ইচ্ছা হয় ডাক । কি ডাকতে ইচ্ছা করে?” মামা।
বেশতাে মামা ভাকবি।” মামা আফনে কিছু ব্র্যানেন? জানি–এনবি?”
বল চামুলত সে তার বাবার মুমী জালাতে চাচ্ছে না। সুলায়মান পড়ল আমার পাশে। আমি গল্প শুরু করলাম— মন ভেতর অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন দে ঘুমিয়ে থাকে। তাৰ ,
জানা যায় তাহলে সে অসাধ্য সাধন করতে পারে। সৰ মানমত করে আলাউদ্দিনের চেরাগ নিয়ে পৃথিবীতে পাঠানাে হয়। অল্প কি হেয়াগে ঘুমিয়ে থাকা দৈত্যকে জাগাতে পারে।
সুলায়মান।‘ ডি মামা। ‘তাের মনের যে কোন একটা ইচ্ছার কথা বলতো দেখি । তোৰ ম একটা ইচ্ছা পূর্ণ হবে।‘
‘আমার কোন ইচ্ছা নাই মামা।
শপিং ব্যাগ থেকে বের সুলায়মান এসে শুয়ে
চেরাগের গল্প। যে কে। তার যদি ঘুম |
Read More