১১ বলে দরকার ১১ রান। উত্তেজনায় দাঁতে নখ কাটার মুহূর্ত যাকে বলে। আগের ৪০ বলে দারুণ ব্যাট করা সালাউদ্দিন শাকিল ভুল করে বসলেন ঠিক তখনই! রবিউল হকের বলে তাঁরই হাতে বলটা তুলে দিলেন। অবিশ্বাস্য এক জয়ের গল্পটা তাই লেখা হলো না একটুর জন্য। শেখ জামাল ধানমন্ডির কাছে ১০ রানে হেরে গেল প্রাইম দোলেশ্বর। দারুণ এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশাটা বেঁচে রইল শেখ জামালের।
রবিউলের আগের ওভারটাই জমিয়ে দিয়েছিল সব। ৪৭তম ওভারে ৭ রান তুলে ফেললেন আরাফাত সানি ও সালাউদ্দিন শাকিল। ক্রমেই নাগালের বাইরে যাওয়া লক্ষ্যটাও আবার চলে আসে প্রায় হাতের মুঠোয়। শেষ তিন ওভারে লাগবে ১৪ রান। আগের ১৩ ওভারে ৬৪ রান তোলা এক জুটির জন্য কাজটা কিন্তু খুব কঠিন নয়। কিন্তু তানবীর হায়দারের ওভারে মাত্র ৩ রান এল। শেষ দুই ওভারে জয় দাঁড়িয়েছিল ১১ রান দূরত্বে। সেটা ওই দূরত্বেই থাকল।
এক ঘণ্টা আগেও অবশ্য অমন কিছু কল্পনা করতে পারেনি কেউ। শেখ জামালের দেওয়া ১৮৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০৬ রানেই নবম উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দোলেশ্বর। তখনই ব্যাটসম্যান সত্তা জেগে উঠল সানি ও শাকিলের। দলের টপ অর্ডার যা করতে পারেনি, দুজন করলেন সেটিই। বুঝে শুনে জুটি গড়া। ৩৪তম ওভারে একসঙ্গে হয়ে ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করে গেলেন। শেষ দশ ওভারে ৪৮ রানের সমীকরণে দাঁড়িয়েও ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করেছেন সানি (৫২ বলে ৩১) ও শাকিল (৪১ বলে ৩১)। জয়ের চিত্রটা যখন প্রায় স্পষ্ট হয়ে উঠছিল, তখনই শুধু শেষের আঁচড়টা ঠিকভাবে দিতে পারলেন না।
হেরে গেল প্রাইম দোলেশ্বর
৩১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লেগ স্পিনার তানবীর দোলেশ্বরের মেরুদণ্ড ভেঙেছেন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তানবীর। তবে ৩৮ ওভারে অল আউট হওয়া শেখ জামালকে ১৮৩ রান এনে দেওয়ার পেছনে নুরুল হাসান (২১ বলে ২০ রান) ও জিয়াউর রহমানের (২৯ বলে ৩৯) ছোট দুই ইনিংসের ভূমিকাও ছিল।
দিনের অন্য দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে শিরোপাপ্রত্যাশী বাকি দুই দলও। ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজের সুবাদে খেলাঘরের বিপক্ষে ১২৭ রানে জিতেছে আবাহনী। আর গাজী গ্রুপকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে রূপগঞ্জ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শেখ জামাল ধানমন্ডি : ৩৮ ওভারে ১৮৩ (তানভীর ৪৩*, জিয়াউর ৩৯, চাঁদ ২৭, পিনাক ২৪; জাকারিয়া ৩/১০, ফরহাদ ২/২৪, শফিউল্লাহ ২/৫২)
প্রাইম দোলেশ্বর : ৪৮.২ ওভারে ১৭৩ (ফজলে ৩৫, সানি ৩৫*, শাকিল ৩১, মার্শাল ২৯; তানভীর ৪/৩১, নাজমুল ২/৩৭)
ফল : শেখ জামাল ১০ রানে জয়ী।
আবাহনী : ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ (নাজমুল ৫৪, মিরাজ ৫০, এনামুল ২৭, তাসকিন ২৬; হালিম ৪/১০, সাদিকুর ২/৪৬, আনজুম ২/৫২)
খেলাঘর : ২৭.৩ ওভারে ১১৪ (মাহিদুল ২৭, আনজুম ২৪, মাসুম ২৩*; মাশরাফি ৩/৩২, সন্দীপ ২/৫, নাসির ২/৮, তাসকিন ২/২৫)
ফল : আবাহনী ১২৭ রানে জয়ী।
গাজী গ্রুপ : ৪৫.৪ ওভারে ১৫২ (জহুরুল ৩১, জাকের ৩০, নাঈম ২৩; শহীদ ৪/২৬, আসিফ ২/১৭, রসুল ২/২৭)
রূপগঞ্জ : ২২.৫ ওভারে ১৫৩/২ (মিত্র ৫৭*, নাইম ৪৫, মুশফিক ৩০*; টিপু ১/২২, আবু হায়দার ১/২৯)
ফল : রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী।
source-prothom alo