লেখক-পরিচিতি – মোতাহের হোসেন চৌধুরীর জন্ম ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে নোয়াখালী জেলার কার্চনপুরে | তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন ‘বুদ্ধির যুক্তি আন্দোলন” নামে পরিচিত বাঙালি মুসলমান সমাজের অগ্রগতির এক যুগান্তকারী আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে । সাহিত্যের অঙ্গনে ও বাস্তব জীবনে উভয় ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সৌন্দর্যবোধ, মুক্তবুদ্ধি-চেতনা ও মানবপ্রেমের আদর্শের অনুসারী । তিনি ছিলেন কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন,… Continue reading জীবন ও বৃক্ষ – মোতাহের হোসেন চৌধুরী
Category: শিল্প-ও-সাহিত্য
কারবালা-প্রান্তর – মীর মশাররফ হোসেন
লেখক-পরিচিতি – ১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম তার পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বেশিদূর অগ্রসর না হলেও মীর মশাররফ হোসেন ফরিদপুর নবাব এস্টেটে ও দেলদুয়ার এস্টেটে চাকরি করে জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন। এরপর তিনি কলকাতা ও পরে পদমদিতে অনেক দিন অবস্থান করেন ।… Continue reading কারবালা-প্রান্তর – মীর মশাররফ হোসেন
হারানো বলয় – জহির রায়হান
অফিস থেকে বেরুতেই ফুটপাতে দেখা হয়ে গেলো মেয়েটির সাথে। একটুও চমকালো না আলম। যদিও ক্লান্ত চোখ দুটি ওর বিস্ময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। আরে আলম না। তুমি এখানে? মেয়েটিও ভুল করেনি, ঠিক চিনতে পেরেছে তাকে। অনেক দিন পরে দেখা হলো, না? আবার বললো মেয়েটি। হা বছর দুয়েক। সেই— সেই ভৈরব স্টেশনে দেখা হবার পর এই… Continue reading হারানো বলয় – জহির রায়হান
খগম-সত্যজিৎ রায়
পেট্রোম্যাক্সের আলোতে বসে ডিনার খাচ্ছি, সবেমাত্র ডালনার ডিমে একটা কামড় দিয়েছি, এমন সময় চৌকিদার লছমন জিজ্ঞেস করল, আপলোগ ইমলি বাবাকো দর্শন নেহি করেঙ্গে? বলতে বাধ্য হলাম যে, ইমলিবাবার নামটা আমাদের কাছে একেবারেই নতুন, তাই দর্শন করার প্রশ্নটা ওঠেইনি। লছমন বলল, জঙ্গল বিভাগের যে জিপটা আমাদের জন্য মোতায়েন হয়েছে তার ড্রাইভারকে বললেই সে আমাদের বাবার ডেরায়… Continue reading খগম-সত্যজিৎ রায়
একদিন রাত্রে-তারাপদ রায়
আজ সকাল থেকে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। শীতের প্যাচালো বৃষ্টি। সেই সঙ্গে যথারীতি উত্তুরে হাওয়া। ঠান্ডাও পড়েছে খুব। অনেকদিন কলকাতা শহরে এরকম জমাট ভাব, ভারী ঠান্ডা দেখা যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা হয়ে গেল, বৃষ্টি থামবার কোনও নামগন্ধ নেই। যদি জোরে দু-চার পশলা হয়ে যেত তবে সে ছিল মন্দের ভাল, হয়তো মেঘটা কেটে যেত। কিন্তু আকাশ… Continue reading একদিন রাত্রে-তারাপদ রায়
গয়া ১৯২৪-তারাপদ রায়
শেষবার আমরা যখন বাড়ি বদলালাম, অর্থাৎ আগের বাড়ি ছেড়ে এখনকার বাড়িতে এলাম, সে প্রায় আট বছর আগের কথা। লোকে যখন একটা বাড়ি ছেড়ে অন্য বাড়ি যায়, অনেক জিনিস ফেলে আসে; কিছু ভুলে ফেলে আসে, আবার কিছু ইচ্ছে করেও ফেলে আসে। অনেক সময় বড় বাড়ি থেকে ছোট বাড়িতে উঠে যাওয়ার সময় অনেক কিছুই ছেড়ে যেতে হয়।… Continue reading গয়া ১৯২৪-তারাপদ রায়
ময়নার বোন-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ময়না আর বুধনি খুন হওয়ার পরে কেটে গেছে দেড় মাস। এই জোড়া খুনের কোনও কিনারাও হয়নি, কেউ ধরাও পড়েনি। কে খুন করেছে তা সবাই জানে, পুলিশও জানে নিশ্চয়ই, কিন্তু পুলিশের খাতায় খুনের উল্লেখই নেই। লেখা আছে, অজ্ঞাত কারণে মৃত্যু। দুজন মানুষ, বিশেষত দুটি যুবতী মেয়ে খুন হলে পুলিশ কত রকম তদন্ত করে, কুকুর আনে, ডিটেকটিভরা… Continue reading ময়নার বোন-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ম্যাজিশিয়ান বিশ্বমামা-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
বিশ্বমামা বললেন, ছোটবেলায় একটা ম্যাজিক দেখেছিলাম, বুঝলি! আজও সেটা ভুলতে পারিনি। আমি বললুম, তুমি মোটে একটা ম্যাজিক দেখেছ? আমরা তো কত ম্যাজিক দেখেছি। পি সি সরকারের জাদুর খেলা দেখেছি অনেকবার। ম্যাজিশিয়ান বিশ্বমামা বিশ্বমামা বললেন, আমিও কম ম্যাজিক দেখিনি। সব তো মনে থাকে না। সব মনে রাখার যোগ্যও নয়। এই একটা ম্যাজিকের কথা মনে খুব দাগ… Continue reading ম্যাজিশিয়ান বিশ্বমামা-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
আদ্যশ্রাদ্ধ-সমরেশ মজুমদার
প্রথম এসেছিল অমল। দিল্লি থেকে প্লেনেই উড়ে আসবে ভেবেছিল, কিন্তু রত্না বলেছিল, খামোকা অত টাকা কেন নষ্ট করবে, ট্রেনেই যাও, কোম্পানির পয়সায় তো ট্যুরে যাচ্ছ না! কথাগুলো মনে ধরেছিল। অবশ্য টেলিগ্রাম পাওয়ার পর থেকেই মন অন্যরকম হয়ে গিয়েছিল। যেন দশমনি একটা পাথর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে মনের আংটায়। নড়তে-চড়তে বুকের মধ্যে। যন্ত্রণা। নিশ্বাস ভারী। সড়সড় করে… Continue reading আদ্যশ্রাদ্ধ-সমরেশ মজুমদার
জল নয়, যেন অমৃত-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
কয়েক হাত মাটি খোঁড়ার পরই শাবলে ঠংঠং করে শব্দ হতে লাগল। শক্ত পাথর। এখানে জল উঠবে না। মিস্তিরিরা হতাশ হয়ে বসে পড়ল। এই নিয়ে চারবার। টিউবওয়েল বসাবার চেষ্টা হচ্ছে, বড়-বড় পাইপ কেনা হয়ে গেছে, টাকাপয়সারও অভাব নেই, কিন্তু জল পাওয়া যাচ্ছে না। এই বৈশাখ মাসে জলের জন্য চতুর্দিকে হাহাকার। একটা পাকুড় গাছতলায় দাঁড়িয়ে আছে বড়কা… Continue reading জল নয়, যেন অমৃত-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়