আমাদের একটা বাড়ী ছিল। তার তিনটে তলা ছিল। সদরে তিনটে দরজা ছিল। পাল্লাগুলোয় নক্সি ছিল। লোহার লম্বা খিল্ ছিল। ওপরে দুটো ছাদ ছিল। ছাদের আগে ঘর ছিল। রামধেনু রঙ জানলা ছিল। ঘরের শেষে রেলিং ছিল। লোহার তৈরি রেলিং ছিল। লতাপাতার নক্সা ছিল। রেলিং ‘পরে রাস্তা ছিল। এক্কাগাড়ি অনেক ছিল। একটু দুরে রেল ছিল। রেলের… Continue reading আমাদের বাড়ি- রজত বন্দ্যোপাধ্যায়
আয়না – আবুল মনসুর আহমদ- গো-দেওতা কা দেশ
আয়না – আবুল মনসুর আহমদ গো-দেওতা কা দেশ গো-দেওতা কা দেশ দিনটাও ছিল বেজায় গরম, মেজাজটাও ছিল নিতান্ত চড়া। রাত না পোহাতেই বিবির সাথে ঝগড়া হওয়ায় প্রতিজ্ঞা করিলাম : আজ বাসায় থাকিব না; সারাদিন বাহিরে থাকিয়া বিবিকে একটু শাস্তি দিব। কিন্তু যাই-ই বা কোথায় ছাই! জামা-কাপড় লইয়া আড়চোখে বিবির দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া লইলাম। বিবি ভ্রুক্ষেপও… Continue reading আয়না – আবুল মনসুর আহমদ- গো-দেওতা কা দেশ
শ্যাম প্রেয়সী-মনিকা শকুন্তলা
মন ভরিলো হে নৃত্য পটিয়সী, হৃদয় নাচিলো জল তরঙ্গে। কোথা তব নিবাস কন্যে? থাকো তুমি কোন বঙ্গে? কিবা শোভা বসন ভূষনে, কি যে তরঙ্গ শ্যাম বরণ অঙ্গে! দেখি আর ভাবি বিমোহিত আমি – রাধিকা বুঝি বা এসেছে নবরঙ্গে। নয়ন যুগলে হরিনী আবেশ, যতনে সেজেছে ঘনকালো কেশ। সুনিপুণ হাতে মুদ্রার তালে, মনপ্রাণ আজ উছলিয়া পড়ে। কিবা… Continue reading শ্যাম প্রেয়সী-মনিকা শকুন্তলা
ভালো বনাম মন্দ – মহিউদ্দিন জুলহাস
মন্দ বলে, ‘ভালো! তুই যদি না থাকতি বিশ্ব করতাম কালো। জানিস আমি কেমন মন্দ? আমার গায়ে থাকে গন্ধ। আমার সাথে চলবে যারা জ্ঞানে ধরবে পচন, এবং তারা মানবে না তো নীতির কোনো বচন।’ ভালো বলে,’ধুর! যতই কালো করিস রে তুই আমি করবো দূর। যাদের সঙ্গে থাকবো আমি মানুষ হবে সৎ, বিশ্বে আমি রুদ্ধ করি মন্দ… Continue reading ভালো বনাম মন্দ – মহিউদ্দিন জুলহাস
ঈদ ভয়ংকর! – হুমায়ূন আহমেদ
ভাবতে অবাক লাগে, একসময় আমার ঈদও আনন্দময় ছিল। তখন আমাকে ঈদসংখ্যায় উপন্যাস লিখতে হতো না। কারণ ‘ঈদসংখ্যা’ নামক কোনো বস্তু ছিল না। বিটিভিতে ঈদের হাসির নাটক লিখতে হতো না, এই দায়িত্ব জনাব আমজাদ হোসেন নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতেন। বিটিভির কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান সাহেবের কাছে শুনেছি, আমজাদ হোসেনের কাছ থেকে ঈদের নাটক আদায় করা কঠিন ব্যাপার… Continue reading ঈদ ভয়ংকর! – হুমায়ূন আহমেদ
দুইবার রাজা – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
বাজে -পোড়া ঠুঁটো তালগাছটা উঠোনের পাশে দাঁড়িয়ে, যেন বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আকাশকে ঠাট্টা করছে। অথচ ম্রিয়মাণ, বিষণ্ণ। বুকের মধ্যে যেন একটা হাপর আছে, উঁচু তাকিয়াটায় ঘাড় গুঁজে উবু হয়ে শুয়ে অমর হাঁপানির টান টানছে। ডাক্তার খানিকটা ন্যাকড়ায় কি একটা ঝাঁঝালো ওষুধ ঢেলে দিয়ে বলে গিয়েছিল শুকতো তাতে টান কমা দুরে থাক, রগ দুটো বাগ না… Continue reading দুইবার রাজা – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
খসড়া পাণ্ডুলিপি /রব্বানী চৌধুরী
পেইজ ১ বাবার সেবা করব খাওয়াদাওয়ার চিন্তা নেই শান্তি ঘুমের এ কোন মোটেল? বাবার হোটেল! কাপড়চোপড় মাগনা মিলে পকেট খরছ ইন টোটেল বাবার হোটেল! টি ভি-বিদ্যুৎ-টেলিফোন গ্যাস-পানি ও শ্যাম্পু-তেল বাবার হোটেল! খেলনা কেনা, বিয়েশাদি, আর কী বাকি? ভাবতে ভাবতে মাথাই বেল বাবার হোটেল! বাবার মতো দাতা নেই কেউ সন্তানেরা হয় কি লুটেল? বাবার হোটেল! যাদের… Continue reading খসড়া পাণ্ডুলিপি /রব্বানী চৌধুরী
কোথায় গেল -মহিউদ্দিন জুলহাস
কোথায় গেল ঢেউ কাঁপানো বেতাই নদীর জল কোথায় গেল ছেলেবেলার সঙ্গি সাথির দল। কোথায় গেল বাড়ি ভরা নানান জাতের গাছ কোথায় গেল জলাভূমির বিশাল বিশাল মাছ। কোথায় গেল মক্তব পড়া কুরান শিক্ষার রীতি কোথায় গেল একে অন্যের হৃদয়গলা প্রীতি। কোথায় গেল বোশেখ মাসের আম কুড়ানির সুখ কোথায় গেল মানবজাতির দয়ার বিশাল বুক। কোথায় গেল মিষ্টি… Continue reading কোথায় গেল -মহিউদ্দিন জুলহাস
মানুষের সেবা -আবদুল কাদির
হাশরের দিন বলিবেন খোদা- হে আদম সন্তান তুমি মোরে সেবা কর নাই যবে ছিনু রোগে অজ্ঞান। মানুষ বলিবে – তুমি প্রভু করতার, আমরা কেমনে লইব তোমার পরিচর্যার ভার? বলিবেন খোদা- দেখনি মানুষ কেঁদেছে রোগের ঘোরে, তারি শুশ্রুষা করিলে তুমি যে সেথায় পাইতে মোরে। খোদা বলিবেন- হে আদম সন্তান, আমি চেয়েছিনু ক্ষুধায় অন্ন, তুমি কর নাই… Continue reading মানুষের সেবা -আবদুল কাদির
রাত বারোটা – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
আমি তখন মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতে পোস্টেড। যে দোতলা বাড়িটাতে আছি, সেটা আমাদের দুজনের পক্ষে বেশ বড়। উপরে-নিচে অনেকগুলি ঘরই ফাঁকা। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে বাঁহাতি পুবের ঘরটা আমার লেখাপড়া করবার, আর লম্বা-চওড়া বড় একটা বারান্দা পেরিয়ে পশ্চিমের ঘরটা শোবার। দক্ষিণের বারান্দায় ক’খানা চেয়ার ফেলা। নির্ঝঞ্ঝাট নিরিবিলি বাড়ি। চারদিক গাছগাছালিতে ঢাকা। ইলেকট্রিক নেই। লণ্ঠনের টিমিটিমি। তখন… Continue reading রাত বারোটা – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত