ভূমিকা
বিদেশে চাকরি করার স্বপ্ন অনেক বাংলাদেশির। উন্নত আয়ের সুযোগ, ভালো ক্যারিয়ার এবং জীবনমানের কারণে প্রতিবছর লাখো মানুষ প্রবাসে যাচ্ছেন। কিন্তু সবাই সঠিক নিয়ম না জানার কারণে প্রতারণার শিকার হন।
তাই এই গাইডে ধাপে ধাপে জানবেন প্রবাসে চাকরি পাওয়ার সম্পূর্ণ নিয়ম।
১. সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন
-
বিদেশে চাকরির আগে প্রথম ধাপ হলো বিশ্বস্ত তথ্য সংগ্রহ।
-
সরকারি ওয়েবসাইট (বোয়েসেল – www.boesl.gov.bd) বা অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে তথ্য নিন।
-
কখনো ফেসবুক বিজ্ঞাপন বা অপরিচিত এজেন্টের উপর নির্ভর করবেন না।
২. প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নিশ্চিত করুন
-
শিক্ষা যোগ্যতা (ন্যূনতম এসএসসি/এইচএসসি/ডিপ্লোমা/ডিগ্রি – চাকরির ধরণ ভেদে)।
-
টেকনিক্যাল স্কিল (ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, ড্রাইভার, আইটি সাপোর্ট ইত্যাদি)।
-
ভাষাজ্ঞান (ইংরেজি/আরবি/কোরিয়ান/জাপানি)।
৩. পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত করুন
-
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP)।
-
জাতীয় পরিচয়পত্র ও শিক্ষাগত সনদপত্র।
-
ট্রেনিং সনদ (যদি থাকে)।
-
মেডিকেল রিপোর্ট (অনুমোদিত সেন্টার থেকে)।
৪. অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি বেছে নিন
-
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত BMET (Bureau of Manpower, Employment and Training) তালিকা থেকে এজেন্সি বেছে নিন।
-
এজেন্সির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার যাচাই করুন।
৫. চাকরির চুক্তিপত্র ভালোভাবে পড়ুন
-
কাজের ধরণ
-
বেতন ও সুবিধা
-
কাজের সময়
-
ভিসার মেয়াদ
এগুলো স্পষ্টভাবে দেখে তবেই সাইন করুন।
৬. মেডিকেল টেস্ট ও ভিসা প্রসেসিং
-
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারে পরীক্ষা করুন।
-
ভিসার জন্য এজেন্সি আবেদন করবে, তবে কনস্যুলেট/এম্বেসির কাগজ নিজে যাচাই করুন।
৭. ট্রেনিং ও প্রবাসী কার্ড সংগ্রহ
-
BMET থেকে প্রবাসী কার্ড (Smart Card) নিতে হবে।
-
গন্তব্য দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ করা উত্তম।
৮. প্রতারণা থেকে সাবধান থাকুন
❌ কখনো অচেনা দালালের কাছে টাকা দেবেন না।
❌ চুক্তিপত্র ছাড়া বিদেশ যাবেন না।
❌ সব লেনদেনের রশিদ রাখবেন।
৯. বিদেশে যাওয়ার পর করণীয়
-
নির্দিষ্ট কোম্পানি ও ঠিকানায় যোগ দিন।
-
দেশের আইন মেনে চলুন।
-
প্রবাসী কল্যাণ দূতাবাসের যোগাযোগ নম্বর নিজের কাছে রাখুন।
উপসংহার
বিদেশে চাকরি পাওয়া সহজ নয়, তবে সঠিক তথ্য, সরকারি অনুমোদিত এজেন্সি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত থাকলে প্রতারণা থেকে বাঁচা সম্ভব।
মনে রাখবেন – আপনার নিরাপত্তা সবার আগে।