শিশুর পেটে গ্যাস ! কারন,লক্ষণ ও করনীয়

শিশুর পেটে গ্যাস হলে করণীয়

শিশুদের পেটে গ্যাস হয়?আসুন জেনে নেই গ্যাস হলে কিভাবে বুঝবো এবং এর থেকে প্রতিকারের উপায় কি?

একটি শিশু তার নিজের ইচ্ছা মত ঘুমায় ও ঘুম থেকে জেগে উঠে। শিশুরা দিনে প্রায় ১৮ থেকে ২০ ঘন্টা ঘুমায়। কখনও কখনও প্রথম তিন চার মাস শিশুটি বেশি কান্নাকাটি করতে পারে। এর প্রধান কারন হলো পেটে গ্যাসের সমস্যা। একজন প্রাপ্ত বয়স্কের মত একটি শিশুরও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। শিশুরা সাধারণত সংবেদনশীল হয়ে থাকে এবং বড়দের মত তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বড়দের চাইতে অনেক কম। তারা খুব সহজেই নানা রকম জীবাণু, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়।

শিশুদের পেটে গ্যাস হবার লক্ষণ :

বড়দের মত শিশুরা যেহেতু মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না তাই জ্বর, সর্দি, কাশি হলে বোঝা যায় কিন্তু পেটের সমস্যা হলে বাচ্চারা পা টান টান করে কান্না করে, পেট শক্ত হয়ে যায়, খাওয়ার পর কান্না করে, অতিরিক্ত নড়াচড়া, পা ভাজ করে পেটের কাছে নয়ে আসে, খুব মোচড়ায় ইত্যাদি লক্ষণ শিশুরা প্রকাশ করতে থাকে তবে এতে চিন্তিত  হবার কিছু নেই। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই পরে তবে শিশুটি সাময়িক কষ্ট পায়। 

শিশুদের পেটে কিভাবে গ্যাস হয় :

আমরা হয়তো অনেক বাবা মা বিশেষ করে প্রথমবার  সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানের বাবা মা হয়তো অনেক কিছুই বুঝতে পারি না। কিভাবে একটি শিশুর পেটে গ্যাস হয় আসুন জেনে নেই-

★ শিশুদের প্রধান খাবারই হলো দুধ। তারা মায়ের দুধ বা প্রক্রিয়া করা দুধই সাধারণত খেয়ে থাকে। এতে প্রোটিন এবং ফ্যাটের হজম করা থেকে স্বাভাবিক ভাবে গ্যাস তৈরি হয়।

★শিশুরা বেশি কান্নাকাটি করলেও তাদের পেটে হাওয়া ঠুকে যায়।  এর পরিণতিতেও গ্যাস তৈরী হতে পারে, যার ফলে একটি জটিল চক্র তৈরি হয়।

★ মা তার খাবারে যা যা গ্রহন করেন শিশুও স্তন্য দুধের মাধ্যমে তা গ্রহন করে থাকেন। কিছু কিছু খাবার যদি মা খান তবে শিশুর পেটে গ্যাস হবার সম্ভাবনা থাকে।যেমন — কফি, বাদাম, ঘি, মাখন, পনির, মশলা জাতীয় খাবার ইত্যাদি। 

★ শিশুকে বেশি খাবার খাওয়ানো হলেও তা তার হজমশক্তিকে প্রভাবিত করবে এবং গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে।

★ বাচ্চার বয়স ৬ মাস হলে তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে।পানি না খাওয়ালে  তার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হবে এবং পেটে গ্যাসও জমবে।  

শিশুর পেটে গ্যাস হলে করণীয় :

১/ শিশু যদি বোতল দিয়ে দুধ কায় তবে দুধ খাওয়ানোর সময় বোতলটি উঁচু করে ধরতে হবে।নিপলটি যাতে দুধে পূর্ণ থাকে কারন নিপলে দুধ না থাকলে বাচ্চা নিপলটি টান দিলে দুধের সাথে সাথে বাতাসও বাচ্চার পেটে যায়। 

২/ শিশুর খিদে বেশি লাগার আগেই তাকে খাওয়াতে হবে কারন বেশি খিদে লাগলে সে বেশি বেশি ঢেক গিলে এতে বাতাস পেটে যায় আর বেশি খিদে লাগলে কান্নাকাটিও বেশি করে এতে করেও বাতাস পেটে ঢুকে।

৩/ শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় তার উপরিভাগ উঁচু করে ধরতে হবে। যাতে দুধ সরাসরি ও সহজেই তার পেটে যায়।  

৪/ শিশুটিকে চিত করে শুিয়ে তার ২ পা ২ হাত দিয়ে ধরে সাইকেলিং এর মত ঘুরাতে হবে । এটা দিনে ৩/৪ বার করলে পেটে গ্যাস হবার সম্ভাবনা কম হয়।

৫/ শিশুটিকে  খাওয়ার সময় বার বার তাকে কোলে নিয়ে ঢেকুর তোলার জব্য চেষ্টা করতে হবে। এতে পেটে বাতাস থাকলে বেড়িয়ে যায়। 

উপরের পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে গ্যাসের সমস্যা কমানো সম্ভব না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পেটে গ্যাসের সমস্যার সাথে সাথে যদি বমি, ডায়রিয়া ও জ্বর দেখা যায় তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।    

মনে রাখতে হবে, একটি সুস্থ শিশু কান্নাকাটি কম করে এবংসুস্থ শিশুই একটি সুস্থ জাতির ভবিষ্যৎ। 

 

লিখেছেন –

ত্রোপা চক্রবর্তী 

 

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *