তিনি ছিলেন প্রসিদ্ধ নাট্যরচয়িতা, নির্দেশক, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা। অগণিত নাটক রচনায় যেমন নিজের প্রতিভা আর শক্তির পরিচয় দিয়েছেন তিনি, তেমনি নিজের অপ্রতুল ক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন তাঁর নির্দেশনায় ও অভিনয়েও। তিনি তাঁর অভিনয় জীবনে চাষী থেকে শুরু করে যুবক, নেতা, সেনাপতি, মাতবার, বাবা, শিক্ষক, ব্যারিস্টার, নায়ক, বাউল, ফকির, ব্যাপারী, ব্যবসায়ী, তাতারি ইত্যাদি স্বদেশীয় চরিত্রের পাশাপাশি ওথেলো নাটকে ইয়াগো, আন্তিগোনে নাটকে ক্রেয়ন ইত্যাদি ভিন্নদেশীয় চরিত্রে অভিনয় করেন।
তাঁর নাটকে বাংলাদেশের সমসাময়িক পারিবারিক, সামাজিক ও সামগ্রিকভাবে রাষ্টের বিচিত্র পেশাজীবী মূল্যবোধের মানুষের কথা উঠে এসেছে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিপক্ষে তিনি জীবনভর তাঁর নাট্য রচনা অব্যাহত রাখেন। টিভি প্রযোজক, নাট্যশিক্ষক, ঔপন্যাসিক ও সংগঠক হিসেবে তাঁর অসামান্য খ্যাতি রয়েছে।
- বিশিষ্ট এই নাট্যকার জন্মগ্রহণ করেন – ১৩ই জুলাই, ১৯৪২ সাল।
- এই নাট্যরচয়িতার পৈত্রিক নিবাস – জামালপুরে আমলা পাড়ায়।
- বিশিষ্ট এই নাট্যকারের পিতার নাম – অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুস এবং মাতা ফাতেমা খাতুন।
- এই নাট্যকারের শিক্ষাজীবন – তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে এম.এ পাস করেন।
- তিনি পেশাগত জীবন শুরু করেন – বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবে।
- পরিচালক, ফিল্ম ও ভিডিও ইউনিট এর দায়িত্ব পালন করেন – ১৯৬৬-১৯৯১ সাল।
- তিনি নাট্য রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন – ছাত্রজীবন থেকেই।
- তাঁর রচিত উপন্যাসের সংখ্যা – ৭টি।
- ’মানব তোমার সারাজীবন’ কোন জাতীয় রচনা – উপন্যাস।
- ’মানব তোমার সারাজীবন’ উপন্যাসটি রচনা করেছেন – আব্দুল্লাহ আল মামুন।
- তাঁর রচিত ‘মানব তোমার সারাজীবন’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় – ১৯৮৮ সালে।
- ’খলনায়ক’ কোন জাতীয় রচনা – উপন্যাস।
- ’খলনায়ক’ উপন্যাসটির রচয়িতা – আব্দুল্লাহ আল মামুন।
- ১৯৯৭ সালে-’খলনায়ক’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় –।
আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম
- তাঁর রচিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে – ’আহ্ দেবদাস’ (১৯৮৯), ‘তাহাদের যৌবনকাল’ (১৯৯১), ‘হায় পার্বতী’ (১৯৯১), ‘এই চুনীলাল’ (১৯৯৩), ‘গুন্ডাপান্ডার বাবা’ (১৯৯৩) প্রভৃতি।
- বাংলাদেশে টেলিভিশনে প্রথম ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেন – আব্দুল্লাহ আল মামুন।
- তাঁর উল্লেযোগ্য টেলিভিশন টেলিভিশন ধারাবাহিক হলো – ‘সংশপ্তক’ (২৬ পর্ব), ‘ঘরোয়া’ (৫২ পর্ব), ‘আমি তুমি সে’ (২৬ পর্ব), ‘পাথর সময়’ (১৩ পর্ব), ‘জোয়ার ভাটা’ (২০০ পর্ব), ‘বাবা’ (২০০ পর্ব), ‘শীর্ষবিন্দু’ (৭ পর্ব), ‘জীবন ছবি’ (১৪ পর্ব), ’উত্তরাধিকার’ (১৪ পর্ব) ইত্যাদি।
- ’শপথ’ কোন জাতীয় রচনা – নাটক।
- তিনি ‘শপথ’ নাটকটি রচনা করেন – ১৯৬৪ সালে।
- তাঁর প্রথম নাটক – ‘শপথ’।
- তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে – ‘সারেং বৌ’ (১৯৭৮), ‘শখী তুমি কার’, ‘এখনই সময়’, ’দুই জীবন’, ‘দমকা’, ‘জনমদুখী’, ’বিহঙ্গ’ ‘জোয়ারভাটা’ প্রভৃতি।
- পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র – ’দুই বেয়াইয়ের কীর্তি’।
- ফেরদৌসী মজুমদার. জীবন ও অভিনয় শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন – আব্দুল্লাহ আল মামুন।
- তিনি নাট্যনিরীক্ষা করতে গিয়ে রচনা করেছিলেন – ‘ঋতুরাজ’ শীর্ষক কাব্যনাটক।
- ’সুবচন নির্বাসনে’ কোন জাতীয় রচনা – নাটক।
- ’সুবচন নির্বাসনে’ নাটকটি রচনা করেন – আব্দুল্লাহ আল মামুন।
- তিনি ‘সুবচন নির্বাসনে’ নাটকটি রচনা করেন – ১৯৭৪ সালে।
- ’মেরাজ ফকিরের মা’ কোন জাতীয় রচনা – নাটক।
- তাঁর রচিত ’মেরাজ ফকিরের মা’ নাটকটি প্রকাশিত হয় – ১৯৯৭ সালে।
- ’সুবচন নির্বাসনে’ নাটকটি প্রথম মঞ্চায়ন হয় – ১৯৭৪ সালে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন এর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম
- তাঁর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত ও মঞ্চস্থ নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে – ‘এখনও দুঃসময়’ (১৯৭৫), ‘এবার ধরা দাও’ (১৯৭৭), ‘সেনাপতি’ (১৯৮০), ‘অরক্ষিত মতিঝিল’ (১৯৮০), ‘ক্রস রোডে ক্রসফায়ার’ (১৯৮১), ‘শাহজাদীর কালো নেকাব’ (১৯৮৪), ‘আয়নার বন্ধুর মুখ’ (১৯৯৩), ‘এখনও ক্রীতদাস’ (১৯৮৪), ‘তোমরাই’ (১৯৮৮), ‘দূরপাল্লা’ (১৯৮৮) ‘তৃতীয় পুরুষ’ (১৯৮৮), ‘আমাদের সন্তানেরা’ (১৯৮৮), ‘কোকিলারা’ (১৯৯০), ’বিবিসাব’ (১৯৯১), ‘উজান পবন’ (১৯৯১), ‘কুরসী’ (১৯৯১), ’দ্যাশের মানুষ’ (১৯৯৩), ‘একা’ (১৯৯৫), ‘স্পর্ধা’ (১৯৯৬), ‘মাইক মাস্টার’ (১৯৯৭), ’মেহেরজান আরেকবার’ (১৯৯৮), ‘জন্মদিন’ (২০০৬) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
- তাঁর রচিত (প্রস্তাবিত মঞ্চনাটক) হলো – ‘নিয়তির পরিহাস’ (১৯৭৫), ‘বিন্দু বিন্দু রং’ (১৯৬২), ‘গোলাপ বাগান’ (২০০২) ইত্যাদি।
- বিশিষ্ট এই নাট্যকার নাট্যকলা বিভাগে ’একুশে পদক’ লাভ করেন – ২০০০ সালে।
- তিনি সাহিত্যে ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ পান – ১৯৭৯ সালে।
- তিনি টেলিভিশন নাটক রচনা ও পরিচালনার জন্য প্রথম জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার লাভ অর্জন করেন – ১৯৭৮ সালে।
- সাহিত্য বিভাগে ‘অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন – ১৯৮২ সালে।
- ‘এখনই সময়’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে ’জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ লাভ করেন – ১৯৮০ সালে।
- তিনি ‘দুই জীবন’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ লাভ করেন – ১৯৮৮ সালে।
- তিনি সাহিত্য বিভাগে ‘মুনীর চৌধুরী সন্মাননা’ অর্জন করেন – ১৯৯১ সালে।
- বিশিষ্ট এই নাট্যকার মৃত্যুবরণ করেন – ২১শে আগস্ট, ২০০৮ সালে (৬৫ বছর)।
Read More