কলেজে ভর্তি হবার পরেই আরো অনেক বাঙালির মত আমাকেও দু’চারটে টিউশন করবার জন্যে অনুরোধ করছিল। পাড়ার বঙ্কুদার দোকানে সন্ধের দিকে চা আর চপ হাতে বসলেই আশেপাশে বসে থাকা মানুষজন পরম করুণায় আমাকে বিনামূল্যে যে সব জ্ঞান দেন তার মধ্যে অন্যতম একটি হল এই টিউশন করা। কিন্তু বাড়ির থেকে সেভাবে কিছু না বলবার জন্যে চুপ করেই ছিলাম। অবশ্য কিছু দিনের মধ্যেই বাবা যখন টিউশনের কথা বলতে আরম্ভ করল, তখন একবার চেষ্টা করলাম। তবে আমার ভাগ্যে টিউশন ব্যাপারটা মোটেই সুখের হয় নি সেটা প্রথম থেকেই বুঝে ফেললাম। পাড়ার এক কাকুর মাধ্যমে পাশের পাড়ায় একটা বাড়িতে টিউশন আরম্ভ করলাম। প্রথম দিন উনিই সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে আলাপ করিয়ে এলেন। কথাবার্তার পাশে ফি’য়ের ব্যাপারেও আলোচনা হল। বাড়িতে থাকেন ভদ্রলোক ভদ্রমহিলা ও তাদের একমাত্র মেয়ে তুলি। আমাকে এই তুলিকেই পড়াতে হবে। এমনিতে খুব একটা কঠীন কাজ মোটেই নয়। তুলি মাত্র ইউকেজিতে পড়ে। ভদ্রমহিলার শরীর খারাপ, তাই ভদ্রলোকের সাথেই কথা হল। প্রথম দিন পড়াতে গিয়েই সবসময়ের কাজের মেয়ে(সেটিও সেই দিন গিয়েই জানতে পারলাম।) দরজা খুলে দিল। কিছু সময় পড়ানোর পরেই এক কাপ চা আর পাউরুটির টোস্টের সাথে প্রথম দিনটা ভালোই হল। আস্তে আস্তে বুঝলাম আমাকে পড়াতে কম আর তুলিকে দেখাশোনা বেশি করতে হবে, ও ভদ্রমহিলার শরীর খারাপের কারণটিও মোটামুটি বুঝলাম।এরপর তুলির বায়নার সঙ্গে আমাকে পাল্লা দিয়ে মানিয়ে চলবার ব্যবস্থা করতে হবে। কোন দিন ছবি এঁকে দিতে হবে, তো কোন দিন চকলেট কিনে ঢুকতে হবে। সব থেকে অবাক হলাম যেদিন ভদ্রমহিলা ভেতর থেকে বললেন, ‘এই সাহেব, তুমি ভাই তুলিকে একটু নাচের ক্লাস থেকে নিয়ে আসবে, তোমার দাদা তো এখন আসতে পারবে না…’
অগত্যা ওনাদেরই তেল পুড়িয়ে সেখানে পৌঁছে আরেক কেলো অবস্থার মুখের সামনে দাঁড়াতে হল। নাচের দিদিমণি তো আমার পাড়ার দিদি। আমাকে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তুই এখানে?’
কি করে আর মিথ্যা কথা বলি। কিন্তু সত্যি বলবার সাথে সাথে দিদির হাসি যা বহর দেখলাম এবং তাতে উপস্থিত আরো সবাই যেভাবে যোগ দিল, তাতে আমার কান্না বেরিয়ে আসতে একটু বাকি থাকল। অবশ্য আমাকে এরপর নিয়মিত ভাবেই তুলিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা নেওয়া করে যেতে হল। ভদ্রমহিলা ওনার স্কুটিটা দিয়ে দিতেন, আমিও এই ফাঁকে একটু নিজের মত করে চালাতাম।
পড়াতে আরম্ভ করবার তিন সপ্তাহের মধ্যে তুলির ভাই হল মানে তুলির মায়ের সেই শরীর খারাপের আসল কারণ প্রকৃত ভাবে জানা গেল। মনে মনে একটু খুশি হয়ে উঠলাম। যাইহোক প্রথমে একটা ছোট করে খাবার ও পরে বড় দেখে একটা কিছু হবে। তবে সেই সব হবার আগে যা হল সেটা খুব একটা সুখকর নয়। একদিন পড়াতে গিয়ে শুনলাম সব সময়ের কাজের মহিলাটি কোন একটা কারণে বেশ কিছু দিন ধরে আর কাজে আসছেন না। ভদ্রমহিলা একদিন নিজে হাতে করে চা ও গরম সিঙ্গারা দিতে এসে কথাগুলো বললেন। আমি অম্লান মুখে সিঙ্গারা খেলেও প্রথমে বুঝতে পারিনি তার ভেতরে আসলে ঠিক কি লুকিয়ে আছে। পরের দিন পড়াতে যেতেই ভদ্রমহিলা খুব করূণ স্বরে বললেন,‘ভাই তুমি এক ঘন্টা আগে আসতে পারবে?’
এক ঘন্টা আগে! ছোট্ট করে হিসাব করে নিলাম। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে একটু মাঠে খেলতে যাই। সেখান থেকেই সময় বের করতে হবে। কারণ ততদিন মাসের এক্কেবারে প্রথমেই হাতে গরম গরম নোট আসতে আরম্ভ করছে, কিছুটা লোভী হয়ে গেছি। বলে দিলাম, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ পারবো।’
-তাহলে কাল থেকে চলে এসো।
আমিও চলে গেলাম। ও বাবা! পড়াতে বসবার কিছু সময় পরেই ভদ্রমহিলা তার দু’মাসের ছেলেকে পড়ার ঘরে নিয়ে চলে এলেন। আমার দিকে তাকিয়ে মুখে একটা মিষ্টি হাসি মেখে বলে উঠলেন, ‘ভাই আমি একটু আসছি, ও ঘুমাচ্ছে, কাঁদলে একটু দেখো প্লিজ। আসলে আমার ঘরে দোকান বাজার কিচ্ছু নেই। তোমার দাদা তো অনেক দেরিতে ফেরে।’
আমি এক্কেবারে আকাশ থেকে পড়লাম। এই দু’মাসের ছেলে তো কোন ছাড়, আমি এখনো পর্যন্ত কোন বাচ্চাকেই কোলে নিইনি, মানে এখনো পর্যন্ত আমাকে কোলে নিতে হয় নি।
কথাগুলো ঐ ভদ্রমহিলাকে বলবার সঙ্গে সঙ্গেই উনি খুব সাধারণ ভাবেই উত্তর দিলেন, ‘আরে এখন থেকে শিখতে হবে তো, কোলে নেওয়া খুব সহজ, প্রথমে ঘাড়ের নিচে হাত রাখবে, তারপর পিছনে হাত রেখে তুলে নেবে।’
–যদি কাঁদে ?
-ও কাঁদবে না, আমি পেট ভরে খাইয়ে দিয়েছি। যদি টয়লেট করে একটু পাল্টে দেবে। আসলে ঘরে সবসময় তো ডায়াপার পরিয়ে রাখি না।
শেষের কথাগুলো শুনে মাথাটা গরম হয়ে উঠল। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ডায়াপার চেঞ্জ করতে হবে মানে, আমি কি এই সবের জন্যে এখানে এসেছি।’
ভদ্রমহিলা সঙ্গে সঙ্গে মুখ ছোট করে বলে উঠল, ‘তোমার ভাগ্নে হলে কি করতে?’
আমি আর কোন উত্তর দিতে পারলাম না। তাও রাগ কমল না, বিশেষ করে তুলি যখন হাত তালি দিয়ে নেচে বলতে লাগল, ‘কি মজা কি মজা, স্যার ভাইটুর পটি পরিষ্কার করবে..’ মনে হল ওরে পৃথিবী এবার খ্যামা দে। অবশ্য আমার এই কষ্ট বেশি দিন টিকল না। কোন এক কারণে বাবার কানে এই ডায়াপার পাল্টানোর কথাটা পৌঁছে গেল। একদিন আমাকেই কিনে আনতে দিয়েছিল কিনা। বাবা আমাকে ঐ বাড়িতে পড়াতে বারণ করে দিল।
কয়েকদিন বেকার বসে থাকবার সময় অবশ্য বাচ্চা দুটোর জন্যে মন খারাপ লাগত। বাবার এক বন্ধুর মাধ্যমে খুব অল্প দিনের মধ্যে আবার একটা টিউশন জুটে গেল। এবার জুটল ক্লাস ফোরের একটা ছাত্র, নাম প্রতুল, ডাক নাম পিন্টে। অবশ্য যেটা মনে করে গেছিলাম গিয়ে দেখলাম উনি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। ঐ বয়সেই ওজন মোটের উপর আমার কাছাকাছি। এটা তবে কোন ফ্ল্যাট বাড়ি নয়, দু’তলা বাড়ির একতলাতে আমার পড়ানোর আয়োজন হয়েছে। প্রথম কয়েকটা দিন আমার ছাত্র আগে থেকে ব্যবস্থা করে বসে থাকলেও ঠিক পাঁচ দিনের দিন আরম্ভ হল চরম পরীক্ষা। আমি নিচের তলায় কিছু সময় একাই বসে থাকলাম। পিন্টের পাত্তা নেই। এর মাঝে অবশ্য বেশ ফুলকো ফুলকো গোটা পাঁচ লুচি ও আখের গুড় চলে এল। প্রথমে একটু অবাক হলেও বুঝলাম এটাই এই ঘরের ঐতিহ্য। সন্ধের দিকে লুচি ও আখের গুড়েই তাদের টিফিন হয়।
জমিয়ে খাওয়ার পরেও আরো কয়েক মিনিট পেরিয়ে গেল। পিন্টের তখনও কোন পাত্তা না পেয়ে একটু জোরেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘আজ কি চলে যাবো?’ ঠিক তিনবার জিজ্ঞেস করবার পরে উত্তর পেলাম, ‘না না, আমি আসছি, একটু দাঁড়াও।’
কিছু সময় পরেই দেখলাম, একজন বয়স্কা মহিলা থপথপ করে আমার ঘরে এসে বললেন, ‘তোমাকে একটু কষ্ট করতে হবে, পিন্টে এখনো ঘুমাচ্ছে। ওকে ঘুম থেকে তুলতে হবে।’
– মানে!
– আসলে ওকে কেউ ঘুম থেকে তুললেই চেল্লামেল্লি করে। একমাত্র ওর বাবা ডাকলেই ঠিক আছে। তবে আজ ওর বাবা একটা কাজে বাইরে গেছে। পিন্টে আরামে ঘুমাচ্ছে।
– কখন থেকে ঘুমাচ্ছে?
-বারোটা থেকে হবে।
এক ঝলক ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নিলাম, ‘পৌনে আটটা।’ একটা ছেলে এতক্ষণ ধরে ঘুমাচ্ছে!
-হ্যাঁ বাবা, ও এরকম ভাবেই ঘুমায়। তুমি একটু কষ্ট করে ডেকে দাও। হয়ত তোমাকে দেখে কিছু করবে না, উঠে যাবে।
ওনার কথা মত আস্তে আস্তে দু’তলাতে পৌঁছলাম। কিন্তু নিজেই নিজের ভাগ্যকে দোষ দিতে লাগলাম। একবার বাচ্চার ডায়াপার চেঞ্জ, এখন আবার একজনকে ঘুম থেকে তোলা। আমি টিউটর না ঐ মাল্টিটাস্কার?
দো’তলায় গিয়ে বার দুই ডাকাডাকিও করলাম। কিন্তু কে শোনে কার কথা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঠাকুমা টেবিলে রাখা একটা জলের বোতলের দিকে ইঙ্গিত করে বলে উঠলেন, ‘একটু জল ছিটিয়ে দাও।’
কিন্তু কিন্তু করেই জলটা ছেলেটার চোখে মুখে ছেটালাম। আর যাস কোথা, ঘুম ভাঙার পর বিছানাতে এক্কেবারে ফড়িংয়ের মত লাফাতে আরম্ভ করল। সেই সাথে চিৎকার করে এক্কেবারে পাড়া মাথায় তুলে দেবার জোগাড় হল। আমাকে সামনে দেখতে পেয়ে ওর বুঝতে আর বাকি থাকল না যে এই সমস্ত কাজের পিছনে আমারই হাত। আর যাস কোথা। নিচের থেকে এক বালতি জল নিয়ে এসে সবার সামনে আমার মাথায় ঢেলে দিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘দেখ মাস্টার দেখ, জল ঢাললে কি হয় দেখ।’
আমি ভ্যাবাকান্তের মত কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকলাম। বুঝতে পারলাম না, সেই মুহূর্তে আমার ঠিক কি করা দরকার। শেষকালে সব জামা কাপড় ওদের বাড়িতে রেখে একটা লুঙ্গি পরে বাড়ি ফিরলাম। তারপরে অবশ্য আর ওই টিউশনে যাই নি।
আমার তৃতীয় টিউশন জোগাড় হল এই ঘটনার মাস তিন পরে। এরমধ্যে আমার সেকেণ্ড সেমের পরীক্ষাটাও হয়ে গেল। আমার এক ক্লাসমেটের মাধ্যমে তৃতীয় টিউশনের ব্যবস্থা হল। তবে আমাকে শহর ছাড়িয়ে যেতে হবে একটু গ্রামের দিকে। ঠিক গ্রাম না বললেও পঞ্চায়েত এলাকাতে। ভদ্রলোকের বেশ বড়সড় একটা খাটাল আছে। এখানেও ছাত্র, নাম গোপীনাথ, সবাই গোপু বলে ডাকে। আমাকে অবশ্য এখানে সকালে পড়াতে হবে। বিকালের দিকে নাকি বাড়ির সবাই নিয়ম করে সিরিয়াল দেখতে বসে যায়। তখন কে চা দেবে আর কে টিফিন দেবে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া আরম্ভ হয়ে যায়। আগের বেশ কয়েকজন মাস্টার এই ঝগড়ার জন্যেই ছেড়ে চলে গেছেন। আমি রাজি হয়েছি অবশ্য অন্য কারণে, প্রথম দিন গিয়েই বুঝেছি সকালেই বাড়িতে মশারাও কারো কথা শোনে না, এবং এক একটা আকার মোটামুটি ঈগলের মত। সন্ধেবেলাতে কি হবে কে জানে? তারপরে সন্ধের দিকে ওই গোয়াল পেরিয়ে যাবার সময় কোথায় গরু কোথায় কুকুর কার গায়ে পড়ব ভগবান জানে। আমাকে এই বাড়িতে ঢোকবার সময় খাটাল পেরিয়েই যেতে হবে।
প্রথম কয়েকটা দিন মোটামুটি ভালোভাবেই গেলাম। অসুবিধা বলতে একদিন একটা গরু জামা টেনে ধরে ছিল, আরেক দিন একটু গোবরে হড়কে গেছিলাম। তবে সমস্যা হল মাস দুই পরে। একদিন পড়াতে গিয়ে দেখি পড়ানোর ঘরে গোপু নেই। এটা সাধারণত হয় না। অন্যদিন পড়ার ঘরে আমি ঢোকার আগেই গোপু তার পড়ার টেবিল গুছিয়ে চেয়ারে বসে থাকে। কিন্তু সেদিন সেই ঘরে ঢুকে তাকে না পেয়ে একটু অবাক হয়ে যাই। কিছু সময় অপেক্ষা করে বাইরে এসে গপুর নাম ধরে ডাকতে আরম্ভ করি। কিন্তু গোপুকে পাওয়া যায় না। উল্টে কিছু সময় পর তার বাবা মানে রসময় গোয়ালা বেশ গম্ভীর গলায় বলে ওঠে, ‘এই যে মাষ্টার আজ তো গপু পড়বে না, খুব পেট খারাপ, রাত থেকে পনেরো ষোল বার গেছে। এখন মনে হয় তিন তলার ঘরে শুয়ে আছে।’
–একটু ফোন করে জানিয়ে দিলে সুবিধা হত।
শেষের কথাগুলো খুব শান্তভাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবার চিন্তা করছি এমন সময় রসময় বাবু পিছন থেকে ডাকেন। আমি যেতেই একটু মুচকি হেসে বলেন,‘বলি মাষ্টার যখন এসেই পড়েছো তখন একটা কথা বলি, আজ দুটো ছেলেই কাজে আসে নি। একজন বিয়ে বাড়ি গেছে, আরেক জনের কি সব শরীর খারাপ। ফাঁকি বুঝলে না ফাঁকি।’
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসতে লাগলাম।
কিছু সময় পরেই রসময় বাবু বলে উঠলেন, ‘বুঝলে না, নতুন বকনাটা এক্কেবারে কথা শুনছে না, বেঁধে রাখতেও পারছি না, দুধ দোয়াতে গেলেও এমন ভাবে…’
ব্যাপারটা একভাবে শুনে গেলেও ঠিক বুঝতে পারিনি। সম্বিত ফিরল যখন উনি বললেন, ‘একটা কাজ করবে, কিছু সময়ের জন্যে এই বকনাটাকে একটু ধরবে…’
-আমি ধরব বাছুরটাকে!
মনে হল পায়ের নিচ থেকে মাটিটা দুটো ভাগে ভাগ হয়ে গেল, সেখানে দাঁড়িয়ে পুরো পৃথিবীর সাথে আমিও দুলছি। কিছু বোঝার আগেই ভদ্রলোক আমার হাতে একটা গামছা ঘুঁজে দিয়ে বলল, ‘ঐ স্টোর রুম আছে, ওখানে গিয়ে একটু কষ্ট করে ছেড়ে এসো, বলা যায় না, কোথা থেকে গোবরটোবর লেগে যাবে।’
সেদিন অবশ্য শুধু মাত্র ঐ বকনাটাকে ধরেই ছুটি মেলেনি, আমাকে খড়ও কাটতে হয়েছিল। আর শেষ কালে সেই ফুটন্ত ও ছুটন্ত বকনাটাকে সামলাতে গিয়ে এক্কেবারে গোবরের গাদায় উল্টে পড়লাম। মাঝে গোপু বেশ কয়েকবার এসে আমায় দেখে গেছে, মুচকি হেসে যেন বলতে চেয়েছে, ‘মাষ্টার আমাকে আর পড়াবে?’
বাড়ি ফিরলাম একহাতে দুধের জার আরেক হাতে জামা প্যান্ট নিয়ে। কারণ সারা গায়ে গোবর নিয়ে ভালো করে স্নান না করে জামা কাপড় পরতে ইচ্ছে করছিল না। বাবা অবশ্য প্রথমেই আমাকে ওই অবস্থাতে দেখে চিনতে পারে নি। তারপর সব কিছু জেনে এতটাই রেগে গেল পারলে রসময়ের সব রস সেই মুহূর্তেই বের করে দেবে। এরপর আমাকে আর টিউশন করতে দেয় নি। গম্ভীর গলায় বলে উঠল, ‘সিমেস্টারটা শেষ কর, সোজা বাইরে পাঠিয়ে দেবো।’
আমি এখন সেই অপেক্ষাতেই বসে আছি।
Sougata Chatterjee, B1-85/1, V.K.Nagar,M.A.M.C, Durgapur-713210,Paschim Bardhaman
Phno-6295919013, Email-wribhuwriter.dgp@gmail.com