গরমে পানির বিকল্প হলো তরমুজ এবং এটি কিডনি ও ক্যান্সার রোধে সহায়ক।আসুন বিস্তারিত জেনে নেই
প্রচন্ড গরমে তরমুজ খুবই আরামদায়ক ফল শরীরের জন্য।এতে পানির পরিমান বেশি। ফলে শরীরকে ডিহাইড্রশন থেকে রক্ষা করে। তরমুজ অতি পরিচিত একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এতে শতকরা প্রায় ৯২ ভাগই পানি। এতে প্রচুর ভিটামিন- এ রয়েছ। তরমুজে যে পটাশিয়াম রয়েছে তা ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। এতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে।
তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা:
ওজন কমানে সহায়তা করে :
তরমুজে ফ্যাট একেবারেই নেই বরং গবেষণায় দেখা গেছে যে, তরমুজ মানুষের শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে :
তরমুজ ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক। তরমুজ খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
হার্টকে সুস্থ রাখে :
তরমুজ এতটাই উপকারী যে সিজনাল ফল হিসাবে গরমের সময় প্রতিদিন অন্তত একটুকরা হলেও তরমুজ খাওয়া উচিত। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে দূর করে। এতে করে হার্ট সুস্থ থাকে এবং হার্টের রোগ হবার সম্ভাবনা কমে।
চোখ ভালো রাখে :
তরমুজে রয়েছে বেটাক্যারোটিন যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। বেটাক্যারোটিন রাতকানা রোগ দূর করতে কার্যকরী।
পানি শূন্যতা দূর করে :
তরমুজের প্রায় শতকরা ৯২ ভাগ পানি। ফলে এটা আমাদের শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেট করতে তরমুজ খুবই উপকার। প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক রোধেও সহায়তা করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক :
তরমুজে রয়েছে সিট্রোলিন, যা উচ্চ রক্তচাপ কনাতে খুবই কার্যকর।
কিডনির সমস্যা দূর করে :
তরমুজে পটাসিয়ামের মাত্রা অনেক কম। আর এই জন্যই এটা কিডনি রোগীদের খাবার উপযুক্ত। কারন পটাসিয়াম বেশি খাবার ডাক্তার কিডনি রোগীদের খেতে নিষেধ করে থাকেন।
হাড়ের সুস্বাস্থ্যে সহায়ক :
তারমুজে রয়েছে ভিটামিন-সি। যা আমাদের হাড়ের ছোট ছোট সমস্যা দূর করে হাড়ের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। তরমুজ খেলে হাড়ের চিড় ধরার সমস্যা দূর হয় এবং হাড়ের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
মাড়ির জন্য উপকারী :
মাড়ির বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে তারমুক খুবই উপকার। তটমুজে রয়েছে ভিটামিন- সি।এটি মাড়ি দিয়ে রক্ত পরা বা মাড়ি ফোলার সমস্যা দূর করে। এমনকি মুখের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া ও মাড়িতে রোগ জীবাণুর সংক্রমণ দূর করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি :
তরমুজে রয়েছে ভিটামিন-এ ও বি। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গঠনে সহায়তা করে। এতে করে রক্তে শ্বেত রক্ত কনিকা গঠিত হয় এবং নানা ধরনের রোগের সংক্রামন রোধ করে।
অনেক পুষ্টিগুন সম্পূর্ণ তরমুজের কিছু অপকারিতাও রয়েছে।সেগুলো হলো :
১/ একজন মানুষ তার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তরমুজ খেলে ডায়রিয়া, খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব হতে পারে। তাই পরিমান মত খাওয়াই ভালো।
২/ তরমুজ কেটে একদিনেই খেয়ে নেয়া উচিত।ফ্রিজে রেখে ২/৩ দিন ধরে খাওয়া উচিত না।
৩/ নারীদের মাসিকের সময় এবং গর্ভবতূ নারীদের তরমুজ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
৪/ জ্বর, সর্দি, পেটের সমস্যায় তরমুজ না খাওয়াই ভালো। খালি পেটে তরমুজ না খাওয়াই উচিত।
৫/ অ্যাজমা রোগীদের তরমুজ না খাওয়াই ভালো। কিডনি রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া তরমুজ খাওয়া ঠিক না।
তরমুজ একটা রসালো ফল। এটিতে আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে সহায়তা করে।তাই গরমের দিনে তরমুজ আমাদের সবারঔ পরিমিত পরিমিত খাওয়া উচিত।
লিখেছেন –
ত্রোপা চক্রবর্তী