পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমেদ 

আমি পান নিলামতুমি বিছানায় বস তোআমি তােমার ইজিচেয়ারটায় বসে দেখি কেমন লাগেপাখি আমার একলা পাখি আমরা জায়গা বদল করলামরূপা বলল, তােমাকে বলতে ভুলে গেছি মুনিয়ার হাসবেণ্ড অর্থাৎ এক্স হাসবেও টেলিফোন করেছিলেনতােমার সঙ্গে তাঁর নকি ভীষণ জরুরী কথা আছেঠিকানা দিয়ে দিয়েছেনদেখা করতে বললেন। 

কবে দেখা করতে হবে? আজবিকেলে চলে যেওআচ্ছা। তুমি কি ঘুমুবে ? ঘুমুতে চাইলে চাদর গায়ে শুয়ে পড়আমি ইজিচেয়ারে শুয়ে শুয়ে তােমার দিকে তাকিয়ে থাকি। 

ঘুম পাচ্ছে নারূপা হাসলআমি বললাম, হাসছ কেন

রূপা হাসতে হাসতে বলল, তােমার পড়ুয়া ভাইকে কিছুক্ষণ আগে একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করলামসে ধাঁধা শুনে পুরােপুরি ভড়কে গেছে আমার ধারণা পড়াশােনা বাদ দিয়ে এখন সে এইটা নিয়েই ভাববে। কি ধাঁধা” 

পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমেদ

খুব সহজ ধাধাদুজন ছেলেকে তাদের বাবারা কিছু টাকা দিয়েছিলেনএকজন তাঁর ছেলেকে দিলেন ১৫০ টাকা, অন্যজন দিলেন ১০০ টাকাছেলে দুজন তাদের টাকা গুনে দেখল একত্রে তাদের টাকা হয়েছে মাত্র ১৫০কি করে সম্ভব হল? তুমি কি পারবে?” 

না। 

বাবুও পারবে নাকিছু কিছু মানুষ আছে যারা সহজ জিনিসগুলি খুব জটিল ভাবে চিন্তা করেতাদের পক্ষে এই ধাধার উত্তর বের করা অসম্ভব‘ আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। 

রূপা তাকিয়ে আছে আমার দিকেতার মুখের ভাব সহজচোখের দৃষ্টি স্বাভাবিকযেন কিছুই হয়নিদুপুরের ঘটনাটা সে মাথা থেকে দূর করে দিয়েছেরূপা বলল, চা খাবে

খাও একটুমতির মাকে চা দিতে বলেছিসে চা নিয়ে আসবেআচ্ছা। 

মতির মা চা নিয়ে ঘরে ঢুকলআমি এবং রূপা চা খাচ্ছিচা খেতে খেতে রূপা বলল, আমি যখন কোন কথা বলি তখন কি তুমি মন দিয়ে শােন, না শুধু তাকিয়ে থাক

মন দিয়ে শুনিসবার কথাই আমি মন দিয়ে শুনি। তােমার মা আজ ভাত খাবার সময় যে কথাগুলি বলেছিলেন তুমি কি তা মন দিয়ে শুনেছ?” 

আমার মা সম্পর্কে তিনি যা বললেন সেগুলি কি তােমার কাছে বিশ্বাসযােগ্য মনে হয়েছে

না” 

পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমেদ 

যদি বিশ্বাসযােগ্য মনে না হয়ে থাকে তাহলে কেন তুমি তােমার মাকে চুপ করতে বললে না ? আমি যে কি ভয়ংকর লজ্জা পাচ্ছিলাম তা তােমার চোখে পড়ে নি

চোখে পড়েছেতাহলে চুপ করে ছিলে কেন? প্রতিবাদ করনি কেন

রূপার গলার স্বর বদলে যাচ্ছেচোখের তারায় অন্য এক ধরনের আলােসে আজ বিশেষ কিছু বলবেসেই বিশেষ কথাগুলি শােনার জন্যে আমি অপেক্ষাকরছিরূপী চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে ঠোট মুছল, তারপর আগের চেয়েও নিচু গলায় বলল, প্রতিবাদ আমি নিজেও করতে পারতামভণ্ডামী, ভান এইসব আমার ভাল লাগে নাযেখানে এইসব দেখেছি কঠিন গলায় প্রতিবাদ করেছি

তােমার মাকথার কোন প্রতিবাদ করতে পারলাম না, কারণ তিনি যা বলেছেন সত্যি বলেছেনএক বিন্দু মিথ্যা নয়। তাতে কিছু যায় আসে নাসবটা শােন তারপর বল, তাতে কিছু যায় আসে নাআমার মা আর্ট স্কুলের ছাত্রী ছিলেনঅহংকারী জেদী একটি মেয়েঅসম্ভব রূপবতীআমি বলেছি না মা’র কিছু কিছু জিনিস আমি পেয়েছিরূপ হচ্ছে তার একটাকিন্তু মা ছিলেন দরিদ্রতাদের পুরাে পরিবারটাই দরিদ্রদুবেলা খাবার সামর্থও এই পরিবারের ছিল না

এমন একটা পরিবারে রূপবতী মেয়ে হয়ে জন্মানাের হাজারো সমস্যামা আর্ট স্কুলের পড়ার খরচ চালাতে পারেন নাঅনাহারের কষ্টও এক সময় অসহ্য বােধ হলএক সময় দেখা গেল ছুটির দিনে নাইট ক্লাবগুলিতে তিনি নাচতে শুরু করেছেনবাড়তি কিছু টাকা আসছে

পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমেদ  

আমি বললাম, থাক এসব| রূপা বলল, থাকবে কেন? আমি তাে বলতে লজ্জা পাচ্ছি নাতুমি শুনতে লজ্জা পাচ্ছ কেন? আমার মা প্রতিটি ঘটনা আমাকে বলেছেন

আমি পান নিলামতুমি বিছানায় বস তোআমি তােমার ইজিচেয়ারটায় বসে দেখি কেমন লাগে। 

আমরা জায়গা বদল করলামরূপা বলল, তােমাকে বলতে ভুলে গেছি মুনিয়ার হাসবেণ্ড অর্থাৎ এক্স হাসবেও টেলিফোন করেছিলেনতােমার সঙ্গে তাঁর নকি ভীষণ জরুরী কথা আছেঠিকানা দিয়ে দিয়েছেনদেখা করতে বললেন। 

কবে দেখা করতে হবে? আজবিকেলে চলে যেওআচ্ছা। 

তুমি কি ঘুমুবে ? ঘুমুতে চাইলে চাদর গায়ে শুয়ে পড়আমি ইজিচেয়ারে শুয়ে শুয়ে তােমার দিকে তাকিয়ে থাকি। 

ঘুম পাচ্ছে নারূপা হাসলআমি বললাম, হাসছ কেন

রূপা হাসতে হাসতে বলল, তােমার পড়ুয়া ভাইকে কিছুক্ষণ আগে একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করলামসে ধাঁধা শুনে পুরােপুরি ভড়কে গেছে আমার ধারণা পড়াশােনা বাদ দিয়ে এখন সে এইটা নিয়েই ভাববে। 

কি ধাঁধা” 

পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমেদ 

খুব সহজ ধাধাদুজন ছেলেকে তাদের বাবারা কিছু টাকা দিয়েছিলেনএকজন তাঁর ছেলেকে দিলেন ১৫০ টাকা, অন্যজন দিলেন ১০০ টাকাছেলে দুজন তাদের টাকা গুনে দেখল একত্রে তাদের টাকা হয়েছে মাত্র ১৫০কি করে সম্ভব হল? তুমি কি পারবে?” 

না। 

বাবুও পারবে নাকিছু কিছু মানুষ আছে যারা সহজ জিনিসগুলি খুব জটিল ভাবে চিন্তা করেতাদের পক্ষে এই ধাধার উত্তর বের করা অসম্ভব‘ 

আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। 

রূপা তাকিয়ে আছে আমার দিকেতার মুখের ভাব সহজচোখের দৃষ্টি স্বাভাবিকযেন কিছুই হয়নিদুপুরের ঘটনাটা সে মাথা থেকে দূর করে দিয়েছেরূপা বলল, চা খাবে

খাও একটুমতির মাকে চা দিতে বলেছিসে চা নিয়ে আসবেআচ্ছা। 

মতির মা চা নিয়ে ঘরে ঢুকলআমি এবং রূপা চা খাচ্ছিচা খেতে খেতে রূপা বলল, আমি যখন কোন কথা বলি তখন কি তুমি মন দিয়ে শােন, না শুধু তাকিয়ে 

থাক

পাখি আমার একলা পাখি-পর্ব-(২৪)-হুমায়ুন আহমে

মন দিয়ে শুনিসবার কথাই আমি মন দিয়ে শুনি। 

তােমার মা আজ ভাত খাবার সময় যে কথাগুলি বলেছিলেন তুমি কি তা মন দিয়ে শুনেছ?” 

আমার মা সম্পর্কে তিনি যা বললেন সেগুলি কি তােমার কাছে বিশ্বাসযােগ্য মনে হয়েছে

না” 

যদি বিশ্বাসযােগ্য মনে না হয়ে থাকে তাহলে কেন তুমি তােমার মাকে চুপ করতে বললে না ? আমি যে কি ভয়ংকর লজ্জা পাচ্ছিলাম তা তােমার চোখে পড়ে নি

চোখে পড়েছেতাহলে চুপ করে ছিলে কেন? প্রতিবাদ করনি কেন

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *