বাংলার নবাবী আমল ও ইংরেজ শাসন
নবাবী শাসনামল
মুঘল সম্রাটদের সিংহাসন দখলের আত্মকলহ এবং তাদের রাজনৈতিক দূরদর্শীতার অভাব প্রভূত করণে সম্রাটদের ঐতিহ্য ও গৌরব অনেকাংশে লাঘব হতে থাক । রাজ্যের এই সংকটাপন্ন অবস্থার কারণে সম্রাট আওরঙ্গজেব, মুহম্মদ হাদী নামে এক ব্যক্তিকে হায়দ্রাবাদরে দিওয়ান পদে নিযুক্ত করেন । সম্রাট তাঁর অভিজ্ঞতা ও কর্মনৈপূণ্যে সন্তুষ্ট হয়ে মুহম্মদ হাদীকে সম্রগ বাংলার দিওয়ান নিযুক্ত করে ‘মুর্শিদকুলী খান’ উপাধিতে ভূষিত করেন । তাঁর কর্মনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের মধ্য দিয়েই সূচিত হয় বাংলার নাবাবী শাসন ।
সম্রাট তাঁর অভিজ্ঞতা ও কর্মনৈপূণ্যে সন্তুষ্ট হয়ে মুহম্মদ হাদীকে সম্রগ বাংলার দিওয়ান নিযুক্ত করে ‘মুর্শিদকুলী খান’ উপাধিতে ভূষিত করেন । তাঁর কর্মনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের মধ্য দিয়েই সূচিত হয় বাংলার নাবাবী শাসন ।
- বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব মুর্শিদকুলী খান জন্মগ্রহণ করেন – ১৬৬৫ সালে, দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলে (এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে) ।
- তিনি কার নিকট হতে শিক্ষা ও দিওয়ানি সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন করেন – পারস্যের হাজি শফি ইস্পাহানির নিকট হতে (তিনি তাকে ধর্মান্তরিত করে মুহম্মাদ হাদী নাম প্রদান করেন) ।
- সম্রাট আওরঙ্গজেব মুহম্মদ হাদীকে (মুর্শিদকুলী খান) যখন হায়দ্রাবাদের দিওয়ান পদে নিযুক্ত করেন – ১৬৯৬ খ্রি: ।
- তাঁর কর্মনৈপূণ্য ও অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে সম্রাট কখন তাকে বাংলার দিওয়ান হিসেবে নিযুক্ত করেন – ১৭০০ খ্রি: ।
- সম্রাট আওরঙ্গজেব কখন মুহম্মদ হাদীকে ‘মুর্শিদকুলী খান‘ উপাধিতে ভূষিতে করেন – ১৭০২ সালে ।
- নবাব মুর্শিদকুলী খানের উপাধী ছিল – জাফর খান (১৭১৮ খ্রি: এই উপাধি পান) ।
- তিনি বাংলার সুবেদার পদে নিযুক্ত ছিলেন – ১৭১৭ খ্রি:-১৭২৭ খ্রি: (মৃত্যু পর্যন্ত) ।
- তিনি বাংলার রাজধানী মকসুদাবাদে স্থানান্তরিত করে যে নামকরণ করেন ‘মুর্শিদাবাদ‘ (১৭১৭ সালে) ।
- মুর্শিদকুলী খানের পর যে বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে – মুর্শিদকুলী খানের জামাতা সুজিউদ্দিন ।
- যাকে পরাজিত করে আলীবর্দী খান বাংলার ক্ষমতা দখল করেন – সুজাউদ্দিনের পুত্র সফররাজ খানকে পরাজিত করে (১৭৪০ খ্রি: ১০ এপ্রিল) ।
- আলীবর্দী খানের প্রকৃত নাম ছিল – মির্জা বন্দি বা মির্জা মুহম্মদ আলী (তুর্কি বংশোদ্ভুত) ।
- মুসলমান শাসনামলে এদেশে এসে ধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ নানা অত্যাচার ও লুটতরাজ চালায় – বর্গীরা/মারাঠা সৈন্যরা ।
বাংলার নাবাবী শাসন ।
- নবাব আলীবর্দী খান এদেশ থেকে বর্গীসেনাদের চিরতরে বিতাড়িত করেন – ১৭৪২ খ্রি: ।
- বাংলার এই নবাব ক্ষমতায় আসীন ছিলেন – ১৭৪০-১৭৫৬ খ্রি: পর্যন্ত ।
- আলীবর্দী খান যাকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন – তাঁর ছোট মেয়ে আমেনার পুত্র মীর্জা মুহম্মদ আলীকে (সিরাজউদ্দৌলা) ।
- সিরাজ-উদ-দৌলার পিতা ও মাতার নাম ছিল – পিতা জয়েনউদ্দিন ও মাতা আমেনা ।
- মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার অধিপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন – ১৭৫৬ খ্রি: (২৩ বছর বয়সে) ।
- বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করেন – ১৭৫৬ খ্রি: ।
- নবাব কলকাতা অধিকার করে নামে অভিহিত করেন – আলীনগর (মাতামহের প্রদত্ত নামানুসারে) ।
- হলওয়েল কর্তৃক প্রচারিত ‘অন্ধকূপ হত্যা‘ ঘটনাটি কোথায় সংঘটিত হয়েছিল – ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে ১৭৫৬ সালে (এই হত্যাকাণ্ডের কোন সত্যতা ছিল না) ।
- হলওয়েল কর্তৃক অন্ধকূপ হত্যা কাহিনির বর্ণনামতে, মোট কতজন ইংরেজকে বন্দি করে হত্যা করা হয় – মোট ১৪৬ জনকে বন্দি করা হয় এবং ১২৩ জন মত্যুবরণ করেন ।
- ঐতিহাসিক পলাশী প্রান্তর অবস্থিত – ভারতের প্রশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী অঞ্চল (বর্তমান পলাশী গ্রাম নামে পরিচিত) ।
- পলাশীর প্রান্তরে ঐতিহাসিক যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল – মুর্শিদাবাদের নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের মধ্যে ।
বাংলার নাবাবী শাসন ।
- এই যুদ্ধে নবাবের সাথে তাঁর যে যে সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করে – জগৎশেঠ, উমিচাঁদ, রায়দুর্লভ, মীর জাফর, রাজবল্লভ, মাহতাব চাঁদ, নন্দকুমার, ইয়ার লতিফ প্রমুখ ।
- পলাশীর যুদ্ধে নবাবের সৈন্যসংখ্যা ছিল – প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাত্র ৩ হাজার (মীরজাফর ও তার অনুসারী প্রায় ৪৫ হাজার সৈন্য নীরব ছিল) ।
- বিশ্বাসঘাতকতার ফলস্বরূপ নবাবের পরাজয় ঘটে – ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন (২৩ জুন পলাশী দিবস পালিত হয়) ।
- বাংলার শেষ স্বাধীন এই নবাবকে হত্যা করা হয় – ৩ জুলাই/৪ জুলাই, ১৭৫৭ সালে (মীরজাফরের পুত্র মীর মিরনের তত্ত্বাবধানে মুহম্মদিবেগ নামের এক ঘাতক কর্তৃক) ।
- নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার শাসনামল – ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল- ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত (মাত্র ১ আড়াই মাসের মত) ।
- পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের ফলাফল – দীর্ঘ ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের সূচনা এবং বাংলার অর্থ সম্পদের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব ।
- নবাবের মৃত্যুর পর বাংলার নামমাত্র নবাব হন – মীর জাফর আলী খান (১৭৫৭-১৭৬০ সাল পর্যন্ত) ।
- মীর জাফরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ইংরেজরা যাকে ক্ষমতায় নিযুক্ত করেন – তারই জামাতা মীর কাসিমকে (১৭৬০ সালে) ।
- স্বাধীনচেতা মীর কাসিমের সাথে ইংরেজদের যে যুদ্ধে সংঘটিত হয় – ‘বক্সারের যুদ্ধে‘ (১৭৬৪ সালে) ।
- ১৭৬৪ সালে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধে মীর কাসিম কাদের সাহায্য কামনা করেছিলেন – ফকীর-সন্ন্যাসীদের ।
- মীর কাসিম রাজ্যকে ইংরেজ প্রভাবমুক্ত রাখাবার জন্য রাজধানী স্থানান্তরিত করেন – ‘মুঙ্গের’ নামক স্থানে ।
- ব্রিটিশ ভারতের ইংরেজ গভর্নর লর্ড ক্লাইভ আত্মহত্যা করেন – ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর (ভারতবর্ষে ঘুষ, দুর্নীতি, সম্পদ আত্মসাৎ প্রভৃতি কারণে দোষী হওয়ায়) ।
ইংরেজ শাসনামল
পলাশীর যুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভের বিজয়ের মধ্য দিয়েই মূলত বাংলা তাঁর স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে হারায় । পরবর্তীতে ১৭৬৪ সালে ‘বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজদের জয়ে তাদের ক্ষমতা আরও বেড়ে যায় ।
১৭৭২ সালে কোম্পানি কলকাতায় রাজধানী স্থাপন করে এবং প্রথম ব্রিটিশ-ভারতের গর্ভনর হিসেবে ওয়ারেন হেস্টিংস প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসনের সুদীর্ঘ কার্যক্রম আরম্ভ করে । এরপরই শুরু হয় নিরীহ মানুষের উপর নীলকরদের অত্যাচারের ইতিহাস ।
বাংলার নবাবী আমল ও ইংরেজ শাসন
- প্রচ্যের সাথে বাণিজ্য করার জন্য ‘ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠিত হয় – ১৬০০ খ্রি: ।
- প্রথম ইংরেজ দূত ক্যাপ্টেন হাকিন্স যে সম্রাটের শাসনামলে বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের অনুমতি পান – সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে (১৬১২ সালে) ।
- সম্রাট জাহাঙ্গীর ইংরেজদের বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতিপত্র প্রদান করেন – ভারতের পশ্চিম উপকূলের সুরাট বন্দরের নিকট ।
- ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ যে মুঘল সম্রাটের শাসনামলে বাংলায় প্রথম বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের অনুমতি লাভ করেন – সম্রাট শাহজাহানের শাসনামলে ১৬৩৩ খ্রি: (হরিহরপুরের পিপিলাই নামক স্থানে) ।
- ইংরেজদের এদেশে বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অনুমতি প্রদান করেন – বাংলার সুবেদার শাহজাদা সুজা (১৬৫১ খ্রি:) ।
- কলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর বাণিজ্যের জন্য ক্রয় করে বাণিজ্যনগর প্রতিষ্ঠা করেন – জব চার্নক (১৬৯০ খ্রি:) ।
- যে দুর্গ নির্মাণের মধ্যদিয়ে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত ঘটে – ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ (১৬৯৮ সালে) ।
- সমগ্র মুঘল সম্রাজ্যে ইংরেজদের বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অনুমতি প্রদান করেন – সম্রাট ফররুখ শিয়া (মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে ১৭১৭ সালে) ।
- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করেন – ১৭৬৫ সালে মুঘল বাদশাহ দ্বিতীয় শাহ আলমের রাজ্বতকালে (২৬ লক্ষ টাকা খাজনার বিনিময়ে) ।
- বাংলার প্রথম ব্রিটিশ গভর্নর নিযুক্ত হন – লর্ড ক্লাইভ (ইংরেজ সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন) ।
- যে চুক্তির মাধ্যমে লর্ড ক্লাইভ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করেন – ‘এলাহবাদ চুক্তি’র মাধ্যমে (১৭৬৫ সালে) ।
- বাংলায় দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন – লর্ড ক্লাইভ (রাজস্য আদায় ও দেশরক্ষার ভার কোম্পানির হাতে এবং শাসন বিভাগের ক্ষমতা নবাবের হাতে) ।
ইংরেজ শাসনামল
- দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার ফলে জনগণের উপর নানা ধরনের দুর্ভোগ নেমে আসে এছাড়া আনাবৃষ্টি ও খাবার কারণে ফসল নষ্ট হওয়ার চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় – যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত ।
- ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ যা মহাদুর্ভিক্ষ বলে পরিচিত তা সংঘটিত হয়েছিল – বাংলা ১১৭৬/১৭৭০ খ্রি: (এই দুর্ভিক্ষে প্রায় ১ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন) ।
- ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গর্ভনর ছিলেন – গর্ভনর কার্টিয়ার (১৭৬৯-১৭৭২) ।
- দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা বিলুপ্তি করেন – ওয়ারেন হেস্টিং (১৭৭২ সালে) ।
- ওয়ারেন হেস্টিং তাঁর শাসনামলে যে যে র্কায সম্পাদন করেন – প্রথম রাজস্ব বোর্ড গঠন, পাচঁশালা ভূমি বন্দোবস্ত প্রথা, ১৭৮৪ সালে ভারত শাসন আইন পাশ, রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাশ প্রভৃতি ।
- লর্ড কর্নওয়ালিশ বাংলার গর্ভনর নিযুক্ত হন – ১৭৮৬ সালে (১৭৮৬-১৭৯৩ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন) ।
বাংলার নবাবী আমল ও ইংরেজ শাসন
- লর্ড কর্নওয়ালিশ যে বিধি বিধান চালু করেন – ১৭৯৩ সালে ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ আইন, সূর্যাস্ত আইন, ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, দশশালা বন্দোবস্ত প্রভৃতি ।
- বাংলায় চিরস্থায়ী ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন – লর্ড কর্নওয়ালিশ ১৭৯৩ সালে ।
- একটি নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে নির্ধারিত খাজনা দিতে অসমর্থ হলে জমিদারি নিলামে বিক্রি হতো যে আইনে – লর্ড কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত ‘সূর্যাস্ত আইনে’ ।
- ব্রিটিশ ভারতে সাম্রাজ্যবাদী বড়লাট বা গর্ভনর হিসেবে পরিচিত ছিলেন – লর্ড ওয়েলেসলী ।
- লর্ড ওয়েলেসলী যে নীতির মাধ্যমে তাঞ্জোর, সুরাট, কর্নাটক এবং অযোধ্যার স্বাধীনতা হরণ করেন – ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’ নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে ।
- যে বীর লর্ড ওয়েলেসলীর অধীনতামূলক মিত্রতা আইন প্রত্যাখ্যান করেন – মহীশূরের (বর্তমান কর্ণাটক) বীর টিপু সুলতান ।
- টিপু সুলতান অধীনতামূলক নীতি প্রত্যাখ্যান করায় ওয়েলেসলী তাঁর বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেন – ১৭৯৯ সালে চতুর্থ মহীশূরের যুদ্ধ ।
- চতুর্থ মহীশূরের যুদ্ধ সংঘটিত হয় – টিপু সুলতান ও আর্থার ওয়েলেসলির মধ্যে (যুদ্ধে মহীশূরের এই মহান বীর বাঘের মত লড়াই করে শহিদ হন) ।
- রাজা রামমোহন রায় যে ইংরেজ গর্ভনরের সময় ‘হিন্দু কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন – লর্ড হেস্টিং এর সময় (১৮১৭ সালে নির্মিত) ।
- ব্রিটিশ ভারতের যে গর্ভনর সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত ছিলেন – লর্ড উইলিয়াম বেন্টিক (১৮২৯-১৮৩৫) ।
- রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘সতীদাহ প্রথা’ বাতিল করেন – লর্ড বেন্টিক, ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ।
- লর্ড বেন্টিক যত সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন – ১৮৩৩ সালে ।
ইংরেজ শাসনামল
- স্বত্ববিলোপ নীতি প্রবর্তন করে নাগপুর, সম্বলপুর, সাঁত্তারা এবং ঝাঁসি ব্রিটিশদরে অধীনে আনেন – লর্ড ডালহৌসী ।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্ঠায় হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন করেন – লর্ড ডালহৌসী ১৮৫৪ সালে এবং আইন পাস হয় ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই ।
- লর্ড ডালহৌসী অন্যান্য যে পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করেন – প্রথম রেল যোগাযোগ চালু ১৮৫৩, টেলিগ্রাফ ও ডাকটিকিটের মাধ্যমে চিঠিপত্র আদানপ্রদান, (১৬২ বছর চালু ছিল, ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত) ।
- উপমহাদেশে সর্বপ্রথম কাগজের মুদ্রা ও পুলিশ সার্ভিস চালু করেন – লর্ড ক্যানিং (১৮৬১ সালে) ।
- যে বিদ্রোহের ফলস্বরূপ ভারতের শাসন ভার ইংল্যান্ডের রানির হাতে অর্পিত হয় – ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের কারণে ।
- ভারতীয় উপমাহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে/রানির হাতে অর্পিত হয় – ১৮৫৮ সালের ২ আগস্ট ।
- ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় – লর্ড মেয়ো এর সময় ১৮৭২ সালে ।
বাংলার নাবাবী শাসন ।
- লর্ড রিপন যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন – সংবাদ পত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান, ইলবার্ট বিল (ইউরোপীয় বণিক অপরাধীদের বিচার), শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কর্মের বিধান ।
- লর্ড রিপন যে কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবাস্থার সংস্কার সাধন করেন – ১৮৮২ সালে ‘হান্টার কমিশন’ গঠনের মাধ্যমে ।
- ভারতীয় মহাদেশে সর্ব প্রথম ‘আর্মস অ্যাক্ট’ বা বৈধ অস্ত্রের আইন প্রবর্তন করেন – লর্ড লিটন ১৮৭৮ সালে ।
- লর্ড কার্জন কর্তৃক বঙ্গভঙ্গ বা বঙ্গবিভাগ কার্যকর হয় – ১৬ অক্টোবর, ১৯০৫ সালে (এসময় তিনি ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন) ।
- পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল – ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, আসাম (পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ছিল ঢাকা) ।
- পশ্চিম বাংলা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল – পশ্চিম বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা (পশ্চিম বাংলার রাজধানী ছিল কলকাতা) ।
- পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশের প্রথম গর্ভনর নিযুক্ত হন – ব্যামফিল্ড ফুলার (১৯০৫ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন) ।
- মর্লি-মিন্টো সংস্কর আইন – মুসলিমদের সুবিধা বিবেচনা করে তাদের জন্য পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া (১৯০৯ সালে আইনটি প্রবর্তিত হয়) ।
ইংরেজ শাসনামল
- রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধাভোগী সম্প্রদায়ের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ফলে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ করেন – রাজা পঞ্চম জর্জ (১৯১১ সালে) ।
- ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ হওয়ার সময় ব্রিটিশ ভারতের গর্ভনর ছিলেন – লর্ড হাডিঞ্জ (১৯১০-১৯১৬ খ্রি:) ।
- বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন – ‘রাখিবন্ধন’ অনুষ্ঠান (এসময় তিনি ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি রচনা করেন) ।
- বঙ্গভঙ্গ রদের পর মুসলিমদের অসন্তোষ দূর করতে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিম বাংলার রাজধানী কলকাতা হতে স্থানান্তরিত করা হয় – দিল্লিতে (১৯১২ সালে) ।
- মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইন বা ভারত শাসন আইনের মূল বিষয় ছিল – রাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতা বড় লাটের হাতে (আইনটি প্রণয়ন হয় ১৯১৯ সালে) ।
- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন বিলুপ্ত করে ভারতের শাসনভার ইংল্যান্ডের রানি ও পার্লামেন্টের হাতে অর্পিত হয় – ১৮৫৮ সালে ( সিপাহী বিপ্লবের কারণে) ।
- ব্রিটিশ-ভারতের সর্বশেষ ভাইসরয় বা বড়লাট ছিলেন – লর্ড মাউন্টব্যাটেন (১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘ভারত স্বাধীনতা আইন, পাশ পর্যন্ত) ।
- যে কমিশনের উপর ভিত্তি করে ভারতীয় ইউনিয়ন ও পাকিস্তান নামক দুটি পৃথক রাষ্ট্র সৃষ্টি হয় – র্যাডক্লিফ কমিশন (যা ১৯৪৭ সালের ‘সীমানা কমিশন’ নামে পরিচিত) ।
- অবিভক্ত বাংলার সর্বশেষ গর্ভনর জেনারেল ছিলেন – স্যার ফ্রেডরিক বারোজ ।
- ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশদের শাসন সর্বমোট কার্যকর ছিল – ১৯০ বছর (১৭৫৭ খ্রি:-১৯৪৭ খ্রি: পর্যন্ত) ।
Read More