শুভদিন দেখে হুমায়ূন শের শাহকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে যুদ্ধযাত্রা করলেন । শেষ মুহূর্তে মীর্জা কামরান সরে দাঁড়ালেন । কারণ নদীর এক মাছ খেয়ে তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন । বিছানা থেকে উঠে বসার ক্ষমতাও নেই এই অবস্থায় যুদ্ধযাত্রা করা যায় না । তবে তিনি পাঁশ শ’ ঘোড়সওয়ার পাঠিয়ে দিলেন । তারা কিছুদূর গিয়ে পাঞ্জারে ফিরে এল । সম্ভবত এরকম নির্দেশই তাদের উপর ছিল ।
হুমায়ূন ভাইকে একটি চিঠি পাঠিয়ে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখলেন । চিঠিতে লেখা-
ভাই কামরান,
তোমার অসুখের খবর শুনে ব্যথিত বোধ
করছি । আমার ব্যথা আরও প্রবল হয়েছে, কারণ
শের শাহ্ নামক দস্যুর পরাজয় তুমি নিজের চোখে
দেখতে পেলে না ।
যুদ্ধক্ষেত্রে আমি কল্পনা করে নেব তুমি আমার
পাশেই আছ । কল্পনার শক্তি বাস্তরের চেয়ে কম না ।
আমার প্রধান ভরসা কল্পনার তুমি এবং
তোপখানার দুই প্রধান উস্তাদ আহমাদ রুমী ও
হোসেন খলিফা । শুধু এই দুজনই কামান দেগে শের
শাহ্’র বাহিনীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে ।
আমি তোমার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি ।
আশা করছি তুমি তোমার বিজয়ী ভ্রাতাকে অভ্যর্থনা
করার জন্যে তোরণ নির্মাণ করে অপেক্ষা করবে ।
যদি দ্রুত আরোগ্য লাভ করো, তাহলে
বড়ভাইকে সাহায্য করার জন্যে কনৌজে চলে
আসবে ।
তোমার বড়ভাই
হুমায়ূন মীর্জা
সম্রাট এই চিঠি সম্রাট হিসেবে লিখলেন না । ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের চিঠি গেল । সম্রাটের সীলমোহর চিঠিতে পড়ল না ।
কামরান মীর্জা অসুস্থের ভান করলেন । বড় বড় হেকিমরা তার কাছে আসা-যাওয়া করতে লাগল । হেকিমরা ঘোষণা করলেন, কামরান মীর্জাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে । এই জঘন্য কাজ কে করেছে তা জানার চেষ্টা শুরু হলো । সন্দেহ অন্তঃপুরের দিকে । রাজপরিবারের নারীরা আতঙ্কে দিন কাটাতে লাগলেন ।
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
এবারের যুদ্ধে হুমায়ূন কোনো রাজপরিবারের মহিলা সদস্যকে নিয়ে যান নি । কামরানের আদেশে তাদের সবাইকে গৃহবন্দি করা হলো ।
কামরান মীর্জা বিছানায় শুয়ে শুয়েই আমীরদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করতে লাগলেন । সব আমীরকে একসঙ্গে ডেকে বৈঠক না, আলাদা আলাদা বৈঠক । এক বৈঠকে আচার্য হরিশংকরের ডাক পড়ল । তিনি দিল্লী থেকে লাহোরে এসেছেন অসুস্থ মীর্জা কামরানের শারীরিক কুশল জানার জন্যে ।
মীর্জা কামরান বললেন, শুনেছি আমার বড়ভাই আপনার সূক্ষ্ম বুদ্ধি এবং জ্ঞানের একজন সমজদার ।
হরিশংকর বললেন, সম্রাট হাতি, আমি সামান্য মূষিক ।
যুদ্ধক্ষেত্রে হাতি মারা পড়ে । মূষিকের কিছু হয় না ।
হরিশংকর বললেন,হাতির মৃত্যুতে যায় আসে, মূষিকের মৃত্যুতে
কিছু যায় আসে না বলেই মূষিকের কিছু হয় না ।
আপনার কী ধারণা ? সম্রাট শের শাহকে পরাজিত করতে পারবেন ?
আমি কি নির্ভয়ে আমার মতামত জানাব ?
অবশ্যই ।
সম্রাট শোচনীয়ভাবে পরাজিত হবেন ।
কারণ ?
প্রধান কারণ আপনি । আপনি না থাকায় তার মনোবল ভেঙে গেছে । যুদ্ধক্ষেত্রে মনোবলের বিরাট ভূমিকা আছে ।
মীর্জা কামরান বললেন, আচার্য হরিশংকর! সম্রাট বিপুল সৈন্যবাহিনী নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করেছেন । তাঁর আছে বিশাল গোলন্দাজ বাহিনী ।
শের শাহ্’র কূটবুদ্ধির কাছে বিশাল গোলন্দাজ বাহিনী দাঁড়াতেই পারবে না, হুমায়ূন পরাজিত এবং নিহত হবেন ।
নিহত হবেন ?
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
প্রথমবার ভাগ্যগুণে প্রাণে বেঁচে গেছেন । ভাগ্য বারবার সাহায্য করে না । সম্রাট পরাজিত হলে দিল্লীর সিংহাসনের কী হবে ?
নির্ভর করছে আপনার কর্মকাণ্ডের উপর । আপনি যদি অসুস্থতার ভান করে বিছানায় শুয়ে থাকেন, তাহলে দিল্লীর সিংহাসন চলে যাবে শের শাহ্’র হাতে । আর আপনি যদি গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন, সৈন্য সংগ্রহ করতে শুরু করেন তাহলে দিল্লীর সিংহাসন আপনার ।
আপনি কি আমার উজিরদের একজন হতে রাজি আছেন ?
না ।
না কেন ?
যতদিন সম্রাট জীবিত ততদিনই আমি সম্রাটের অনুগত নফর । কোনো কারণে সম্রাটের প্রাণহানি হলে আমি আপনার প্রস্তাব বিবেচনা করব । তার আগে না ।
আছরের নামাজের পরপর মীর্জা কামরান বিছানা ছেড়ে উঠলেন । ঘোষণা করলেন, আল্লাহপাকের অসীম করুণায় তিনি রোগমুক্ত হয়েছেন । তিনি রোগমুক্তি-স্নান করে মাগরেবের নামাজ আদায় করার প্রস্তুতি নিলেন । রোগমুক্তি উপলক্ষে রাজমহিষীরা সবাই উপহার পেলেন । যাঁরা গৃহবন্দি ছিলেন, তাঁদের বন্দিদশা দূর হলো । সর্ব সাধারণের কাছে গেল তিন হাজার রৌপ্য মুদ্রা । আমীররা খেলাত পেলেন । আচার্য হরিশংকরকে দেওয়া হলো রত্নখচিত ভোজালি ।
কনৌজের যুদ্ধে হুমায়ূনের শোচনীয় পরাজয় হলো । চৌসার যুদ্ধে তিনি যেসব ভুল করেছিলেন এই যুদ্ধেও সেইসব ভুল করলেন । কামানচির দর কামানের একটি গোলাও ছুঁড়তে পারল না ।
হুমায়ূনের ছত্রভঙ্গ বাহিনীর একটা বড় অংশ গঙ্গার পানিতে ডুবে মরল । যারা বেঁচে রইল তাদের তাড়া করল শের শাহ্’র বড় পুত্র জালাল খাঁ ।
চৌসার যুদ্ধে হুমায়ূন গঙ্গার পানিতে পড়েছিলেন । এবারও তাই হলো । তিনি হাতি নিয়ে গঙ্গায় পড়লেন । হাতি তাঁকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে । শের শাহ্’র তীরন্দাজ বাহিনী ধনুক উঁচিয়ে আছে । ইচ্ছা করলেই তীর ছুঁড়ে তারা সম্রাটকে মারতে পারে । তারা এই কাজটি করছে না । কারণ শের শাহ্’র কঠিন নির্দেশ-হুমায়ূনকে হত্যা বা আহত করা যাবে না । তাঁকে বন্দি করাও যাবে না । তাঁকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে ।
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
জালাল খাঁ পরাজিত সৈন্যদের ধাওয়া করে দিল্লী পর্যন্ত নিয়ে গেলেন । পনেরই জুলাই ১৪৫০ খ্রিষ্টাব্দে শের শাহ্ দিল্লীর সিংহাসন দখল করে বসলেন ।
ওই দিন প্রবল বর্ষণ হলো । দীর্ঘদিন দাবদাহে অতিষ্ঠ দিল্লীবাসিদের আনন্দের সীমা রইল না । তারা বৃষ্টিতে ভেজার জন্যে পথে নেমে পড়ল । তারা লক্ষে করল অতি সাধারণ চেহারার এক ব্যক্তি ঘোড়ায় চড়ে দিল্লীর পথে নেমে বৃষ্টিতে ভিজছে । এই ব্যক্তি দিল্লীর সিংহাসন দখল করে নিয়েছে জনতার কেউ তা বুঝতে পারল না ।
হুমায়ূন লাহোর থেকে শের শাহকে একটি কবিতা লিখে পাঠালেন । কবিতাটি হলো-
দর আইনা গরচে খুদ নুমাই বাশদ
পৈবস্তা জ খেশতান জুদাই বাশদ ।
খুদ রা ব মিশলে গোর দীদন অজব অস্ত;
ঈ বুল অজবে কারে খুদাই বাশদ।*
[যদিও আয়নার নিজ চেহারা দেখা যায় তারপরেও তা আলাদা থাকে । এ হলো আল্লাহর অলৌকিক কাজ।]
শের শাহ্ চিঠির জবাবে লিখলেন, আমি মূর্খ বিশেষ । আপনার কবিতার অর্থ বোঝা আমার জ্ঞানের অতীত । আমি লাহোর দখল করতে রওনা হব । আপনার জন্যে লাহোর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মঙ্গল হবে । মীর্জা হিন্দালের মা দিলদার বেগমের দিনলিপি । শ্রুতিলিখন করেছে তার এক দাসী হোসনা জান ।
‘‘আমার রাতের ঘুম এবং এবাদত হারাম হয়ে
গেছে। আমি চোখর পাতা বন্ধ করলেই দস্যু শের
শাহকে স্বপ্নে দেখি । এই দস্যু তার পঙ্গপাল বাহিনী
নিয়ে ছুটে আসছে । তার একমাত্র ইচ্ছা মোগল
বংশকে সমূলে ধ্বংস করা হুমায়ূন তাঁর হাতে ধরা
পড়লে না জানি কী পরিণতি হবে । মনে হয় সে
আমার অতি আদরের হুমায়ূনকে জ্বলন্ত আগুনে
নিক্ষেপ করবে। শুনেছি দস্যুটা মানুষকে আগুনে
পুড়িয়ে মারতে পছন্দ করে । আল্লাহপাকের কাছে
আমার প্রার্থনা-যেন কোনো ভয়ঙ্কর ব্যাধিতে দস্যু
তার দলবল নিয়ে মৃত্যুবরণ করে ।’’
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
দিনলিপিতে যে অস্থিরতা দিলদার বেগম দেখালেন তার চেয়ে অনেক বেশি অস্থির সম্রাট হুমায়ূন । তিনি তাঁর দিনলিপি লেখা বন্ধ রেখেছেন । সৈন্য সংগ্রহের মতো অর্থের জোগাড় করতে পারছেন না । প্রতিটি মিত্র রাজার কাছে চড়া সুদে অর্থ চেয়ে পত্র লিখেছেন । কেউ পত্রের জবাব দেওয়ার সৌজন্যও দেখাচ্ছে না । তারা এখন এমন কিছুই করবে না যাতে দিল্লীর অধীশ্বর শের শাহ্ বিরক্ত হন ।
হুমায়ূনের ব্যক্তিগত ঘোড়সওয়ার বাহিনীর একটি অংশ কামরান মীর্জার সঙ্গে যোগ দিয়েছে । কামরান মীর্জা তাতে আপত্তি করে নি কেন ? সে কি হুমায়ূনকে ত্যাগ করে শের শাহ্’র সঙ্গে যুক্ত হবে ? এও কি সম্ভব ? কামরান মীর্জা আমীরদের নিয়ে ঘনঘন দরবার করছে । এর কোনোটাতেই হুমায়ূনকে ডাকা হচ্ছে না । সম্রাট কাছে খবর আছে, গভীর রাতে কামরানের এক আমীর ফতে খাঁ লাহোর ত্যাগ করেছে । তার সঙ্গে বারোজন সৈন্যের একটা দল আছে । এই আমীর কি কামরানের গোপন কোনো চিঠি নিয়ে শের শাহ্’র কাছে গেছে ?
হুমায়ূন সব ভাইদের এক করার জন্যে একটি আলোচনা-সভা ডেকেছিলেন । সেই সভায় তাঁর সব ভাইরা উপস্থিত থাকলেও কামরান আসে নি ।
বড় অস্থির সেই সময়ে দিলদার বেগম হুমায়ূনকে গোপন এক পত্র পাঠালেন । সেখানে লেখা-
পুত্রসম হুমায়ূন
সম্রাট
বাদশাহ নামদার
তুমি নিদারুণ অর্থকষ্টে পড়েছ বলে শুনেছি ।
এই মুহূর্তে তোমার অর্থের অবশ্যই প্রয়োজন ।
আমার কাছে দশ হাজার স্বর্ণমুদ্রা এবং দুই লক্ষ
রৌপ্যমুদ্রা গোপনে রাখা আছে । তুমি আমার কাছ
থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করে কাজে লাগাও । তোমার
চন্দ্রের মতো মুখমণ্ডল অনেকদিন দেখি না ।
ইতি
দিলদার বেগম
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
হুমায়ূন দিলদার বেগমের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন । হুমায়ূনের সঙ্গে চার পত্নী । পত্নীরা হলেন-
বেগাম বেগম
মাহ চুচক বেগম
গুনবার বেগম
মেওয়াজান
হুমায়ূন পত্নীদের সঙ্গে না নিয়ে কোথাও যেতেন না । চৌসার যুদ্ধেও তাঁর পত্নীরা সঙ্গী ছিলেন । চৌসার যুদ্ধে তাঁর দুই পত্নী চাঁদ বিবি এবং সাদ বিবি পানিতে ডুবে মারা যান । বেগা বেগম শের শাহ্’র হাতে ধরা পড়েন । শের শাহ্’র মহানুভবতায় তিনি স্বামীর কাছে ফিরতে পারেন ।
হুমায়ূনের সর্বশেষ পত্নী মেওয়াজান ছিলেন হুমায়ূনভগ্নি গুলবদনের দাসী । হুমায়ূন তার রুপে মুগ্ন হয়ে মেওয়াজানকে বিয়ে করেন এবং বিয়ের রাতে আমীরদের বলেন, বেহেশতের হুর এই মেয়ের চেয়ে রুপবতী হবে আমি তা বিশ্বাস করি না ।
সম্রাট তার বিমাতার কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করলেন । আনন্দে তাঁর চোখ ভিজে উঠল । দিলদারের নির্দেশে রাজপরিবারের মহিলার একে একে সম্রাট কুর্নিশ করতে এলেন । চৌদ্দ বছর বয়সী এক মেয়েকে দেখে সম্রাট চমকে উঠলেন ।
সম্রাট বললেন, তোমার নাম কী ?
হামিদা বানু ।
তুমি কি রাজপরিবারের কেউ ?
না । আমি সামান্য একজন । আমার পিতার নাম মীর আবুল বকা । তিনি একজন শিক্ষক । আপনার কনিষ্ঠ ভ্রাতা মীর্জা হিন্দাল আমার পিতার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন ।
তুমিও কি তোমার পিতার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে ?
জি জাহাঁপনা ।
তুমি খুব সহজভাবে আমার সঙ্গে কথা বলেছ । একজন সম্রাটের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পাও নি ।
আপনি এখন সম্রাট না । পরাজিত এক নৃপতি। নির্বাসিত ।
আচ্ছা তুমি যাও ।
হামিদা বানু ঘর থেকে বের হওয়ামাত্র হুমায়ূন দিলদার বেগমকে বললেন, আমি এই মেয়েটিকে বিবাহ করতে চাই । আপনি ব্যবস্থা করে দিন ।
দিলদার বেগম অবাক হলে বললেন, এ নিতান্তই বালিকা । এবং মুখরা ।
হুমায়ূন বললেন, হোক বালিকা, হোক মুখরা ।
মেয়েটি শিয়া সম্প্রদায়ের । তুমি সুন্নি ।
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা বাদশাহ নামদার
হুমায়ূন বললেন, শিয়া সুন্নির মতের এবং প্রার্থনার কিছু পার্থক্য আছে, কিন্তু তাদের বিয়েতে কোনো বাদা নেই । আপনার কাছে অনুরোধ, আপ রাতেই আপনি তার কাছে বিবাহ প্রস্তার নিয়ে যাবেন ।
বাবা, তুমি বিষয়টা নিয়ে আরেকটু চিন্তা করো ।
চিন্তা যা করার করেছি । আর চিন্তা করব না ।
হতভম্ব দিলদার বেগম নিজেই সম্রাটের ইচ্ছার কথা হামিদা বানুকে জানালেন । হামিদা বানু বলল, আমি এমন একজনকে বিয়ে করব যার হাত আমি যে-কোনো সময় ধরতে পারব । যাকে তিনবেলা কুর্নিশ করতে হয় তাকে আমি বিয়ে করব না । কোনো অবস্থাতেই না । সম্রাটের চার স্ত্রী জীবিত । তিনি আরও বিবাহ করবেন । আমি এমন একজনকে বিবাহ করব যার বিয়ে-রোগ নেই। আমিই হবে তার একমাত্র স্ত্রী ।
Read more