বৃষ্টিভেজা কর্ণফুলী- (মনিকা শকুন্তলা)

বৃষ্টিভেজা কর্ণফুলী- (মনিকা শকুন্তলা)
বৃষ্টিভেজা কর্ণফুলী
(মনিকা শকুন্তলা)

বৃষ্টি মাতাল হাওয়া আর নীরবে বয়ে চলা কর্ণফুলী
এই আবেগ মিশ্রিত ভালোবাসায় ভিজেছিলাম সেদিন আমি
বিকেলের শীতল জলে পরশ করা হাওয়া আমাদের ছুঁয়ে যাচ্ছিল
বারবার ইচ্ছে জাগছিল সাম্পানে চড়ে কর্ণফুলী পাড়ি দেই
অবগাহন করি বৃষ্টির নোনাজলে,মিশে যাই নদীর কলকলে
নিকষকালো গভীর মেঘগুলো ক্রমশ বৃষ্টির ফোঁটায় পরিণত হলো
অঝোরেই ঝরে পরলো,মাঠ ঘাট নদী বন্দর সমস্ত পাড় ভেজালো
হঠাৎই আমাদের অবাক করে দিয়ে রংধনু উদিত হলো,
রঙে রাঙালো
পুরো আনোয়ারা যেনো সাত রঙে সজ্জিত সেই সাথে ঝলমলে আলো
কিছুকাল স্হায়ী হলো সেই রঙের ছটা তারপর নিমেষে সপ্তরঙ হারালো
আমি চেয়ে রইলাম, সেই স্বর্ণালী ঘোরেই ক্ষণিক
আচ্ছন্ন হলাম
আসরের আযান হয়ে গেছে, সেই সঙ্গে বৃষ্টিবিলাস সাঙ্গ হলো
কর্ণফুলীর তীরে যে দোকান ঘর সেখানেই নামাজের প্রস্তুতি অনেকের
আমি তখনও মুগ্ধতা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শান্ত শীতল নদীকে দেখছি
কথা বলছি ছোট ছোট স্রোতের সঙ্গে,মাঝখানে ভেসে চলা ডিঙিনৌকো
মাঝিদের কোলাহল, আবার শুরু হলো নাগরিক ব‍্যস্ততা
নদী পারাপার,শত মানুষের আনাগোনা,শুধু দেখি দেখি আর দেখি!
খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো আমিও পাড়ি দেই বৃষ্টিস্নাত কর্ণফুলী
সে আর হয়ে ওঠেনি তখন, আশপাশে মাতাল করা চিংড়ির ঘ্রাণ
আহ্ হরেক রকম ধোঁয়া ওঠা সামুদ্রিক মাছ ভেজে নামানো হচ্ছে
সন্ধ্যায় চা নাশতা পরিবার নিয়ে এখানে বসেই অনেকে খাচ্ছে
যেদিকে চোখ যায় জলের উপর নদীবক্ষে জাহাজের সারি
মাঝে মাঝে তাদের সংঘর্ষে এক বিকট শব্দ আবার ভেসে চলা
পণ‍্যবাহী জাহাজ ছুটে চলে ধীর লয়ে দেখে মনে হয় যেন শিশু তার কোলে
একটু সজোরে দ্রুতগামী হলেই কোলের শিশু লুটাবে মাটিতে
ধীরে ধীরে সূর্য অস্তগামী হয়,আঁধারিতে ফুটে ওঠে নদীর নবরুপ
চতুর্পাশ আলোক সজ্জিত এক কুঞ্জ বলে ভুল হয় মাঝে মাঝে
এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবন বয়ে চলে ওই কর্ণফুলীর পাড়ে
এখনো বৃষ্টি ঝরে এখনো তোমার ক্ষীণধারা স্রোতের কথা স্বরণে আসে
ওগো বৃষ্টিস্নাত কর্ণফুলী বৃষ্টিবিলাসে আমাকে নেবে তোমার পাশে?

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *