সৌন্দর্য বৃদ্ধি তে চাল ও চাল ধোয়া পানির  কার্যকারিতা :

আমাদের  মনে এই প্রশ্নটি আসতে পারে যে ” চাল বা ভাত ও চাল ধোয়া পানি কিভাবে আমাদের রূপচর্চায় সাহায্য করতে পারে?  ” হ্যাঁ পারে। সেটাই আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি যে কি ভাবে আমরা অতি সহজে ও কম খরচে আমাদের প্রধান খাদ্য চাল ও ভাত দিয়ে রূপ চর্চা করতে পারি। অতি প্রাচীনকাল থেকে নারী-রা তাদের সৌন্দর্য চর্চা করার জন্য বিভিন্ন রকমের ঘরোয়া  পদ্ধতি অবলম্বন করে আসছেন।  তার মধ্যে চাল একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান।সৌন্দর্য বৃদ্ধি

সৌন্দর্য বৃদ্ধি তে চাল ও চাল ধোয়া পানির  কার্যকারিতা :

ফর্সা, গ্লোইং, সাইনিং ত্বক ও সিক্লি ও লম্বা চুলের জন্য চাল ও চাল ধোয়া পানি তুলোনা হয় না।এর ব্যবহারও খুব সহজ। 

চালের উপাদান :

চালে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামিনো এসিড,  এন্টি অক্সিডেন্ট ও প্রচুর পরিমাণ মিনারেল। এই উপাদানগুলো আমাদের ত্বক ও চুলের যত্নে খুবই প্রয়োজনীয়। নিম্নে চাল ও ভাত দিয়ে কি ভাবে সৌন্দর্যচর্চা করা যায় সেটাই আলোচনা করছি :-

ফেস ওয়াস :

চাল ধোয়া পানিকে ফেস ওয়াস বা সম্পূর্ণ বডি ওয়াস হিসাবেও ব্যবহার করা যায়। তার জন্য প্রয়োজন চাল ধোঁয়া পানি ও তুলার বল বা নরম কাপড়। এবার তুলার বল বা নরম কাপড়টিকে চাল ধোয়া জলে ডুবিয়ে  আলতো ভাবে মুখে ও সম্পূর্ণ শরীরে ব্যবহার করতে হবে।২ মিনিট রাখতে হবে। কোনো ভাবেই জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা যাবে না।প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ত্বক হবে ফর্সা, টানটান ও গ্লোয়িং। 

ফেস টোনার :

চাল ধোয়া জল টোনার হিসাবে ও কাজ করে। আমরা হয়তো অনেক নামিদামী টোনার ব্যবহার করে থাকি  কিন্তু এই ন্যাচারাল টোনারটি একবার ব্যবহার করলে বুঝতে পারবেন যে এটি কতটা কার্যকর।শুধু মাত্র চাল ধোয়া পানি টোনার হিসাবে কাজ করে। চাল ধোঁয়া পানিকে একটি স্প্রে বোতলে নিয়ে মুখে ও শরীরে স্প্রে করুন।এটি ত্বকের সেল বৃদ্ধি করবে এবং রক্ত চলাচলকেও বাড়াবে।এর ফলে ত্বক হবে নরম, কোমল ও উজ্জ্বল।

 

ব্রণ নিরাময়ে ব্যবহার : 

চাল ধোয়া পানি ব্রণ দূর করতে খুবই কার্যকরী। শুধুমাত্র তুলো দিয়ে চাল ধোয়া পানি ব্রণে লাগান দেখবেন আস্তে আস্তে ব্রণ ও এর চারপাশের লালচে ভাব দূর হবে।এতে ত্বক টানটান হবে।

 

বডি স্ক্রাবার :

চাল দিয়ে স্ক্রাবার বানানোর জন্য ধোয়া চাল বেটে নিতে হবে।তার সাথে ২ চা চামচ অলিভওয়েল ও সামান্য পরিমান লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।লেবুর রসে সমস্যা থাকলে সেটা বাদ দেয়া যেতে পারে।সারা শরীরে এটি মেখে স্ক্রাব করতে হবে।  যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন আর যাদের ত্বক শুষ্ক ও স্বাভাবিক তারা নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন। এতে ত্বক হবে চকচকে ও উজ্জ্বল।সপ্তাহে ২/৩ বার এটি ব্যবহার করা ভালো। 

 

লম্বা ও উজ্জ্বল চুলের জন্য :

সব রকমের চালের পানি  চুলের জন্য উপকারী তবে ফার্মান্টেড  পানি বেশি উপকারী। এটি তৈরি করার জন্য একটি এয়ারটাইট কাচের বয়ামে কিছু চাল নিয়ে পানি দিয়ে ঘরের তাপমাত্রায় ২৪ ঘন্টা রেখে দিতে হবে।২৪ ঘন্টা পর পানি ঘোলাটে হয়ে যাবে  এবং পানিতে সামান্য গন্ধ আসবে তখন পানি ছেকে নিতে হবে ও লেভেন্ডার অ্যাসেনসিয়াল তেল ২/৩ ফোঁটা দিয়ে দিলে আর বাজে গন্ধটা থাকবে না।শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর এই পানি ব্যবহার করে ১০ মিনিট ম্যাসেজ করতে হবে। তারপর প্লেন পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এই পানির ব্যবহার সপ্তাহে ২/৩ বার করতে পারলে ভালো।

 

#সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভাতের ব্যবহার :

  শুধুমাত্র চাল নয় চাল থেকে যে ভাত হয় তা দিয়ে ও রূপচর্চা করা যায়।ভাত দিয়ে তৈরি করা যায় ফেস পেক, ক্লিনার হিসাবে ব্যবহার করা যায়।তাছাড়া ভাত দিয়ে  ক্রিম ও তৈরি করা যায়।

 

# ফেসপেক বানানোর পদ্ধতিটি হচ্ছে , ২ চামচ মাড়সহ ভাত নিতে হবে। গরম থাকা অবস্থায় মেশ করে নিতে হবে।এর সাথে সামান্য মধু, সামান্য এলোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে হবে।এগুলো হাতের কাছে না থাকলে দুধ, নারিকেল তেল ও টক দই দিয়েও ফেস পেক বানিয়ে নেয়া যায়।এবার এই পেষ্ট টা ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে।এটাকে এন্টি এজিং পেকও বলা যায়।এটি বলিরেখা দূর করে।,মুখে ব্রণের দাগ দূর করে ও চোখের নিচের কালিও দূর করে।এটি ব্যবহার করে ১৫/২০ মিনিট রেখে নরমাল পানি দিয়ে ম্যাসেজ করে তুলে নিতে হবে।

# ভাতের মাড় ক্লিনার হিসাবে ব্যবহার করা যায়।১০ মিনিট রেখে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

ভাত দিয়ে তৈরি ক্রিম :

মার ভাতকে মেশ করে ছেকে নিতে হবে, অর্ধেক লেবু, আধা চা চামচ কর্ণফ্লাওয়ার / ময়দা, অাধা চা চামচ ভিটামিন E তেল / ভিটামিন E ক্যাপসুল সব উপকরন ভালো করে মেশাতে হবে। তারপর ছোট এয়ারটাইট কন্টিনারে রাখতে হবে ক্রিমকে।এই ক্রিম ফ্রিজে ১০/১২ দিন রেখে ব্যবহার করা যাবে।এই ক্রিম ডে ক্রিম,  নাইট ক্রিম,  সানস ক্রিম ব্যবহারের আগে ব্যবহার করা যাবে।এই ক্রিম দিনে ২ বার ব্যবহারে তারাতাড়ি রেজাল্ট পাওয়া যাবে।

 

# ক্রিমের উপকারিতা : 

 ১. ত্বক ফর্সা করে।

২. ত্বকের বলিরেখা দূর করে।

৩. রোদে পোড়া দাগ দূর করে। 

৪.পিগমেন্টেশন দূর করে। 

৫. ত্বককে করে নরম ও উজ্জ্বল।

      

ভাতে আছে ভিটামিন B। যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হাজার বছর ধরে জাপান ও কোরিয়াতে বিউটি ট্রিটমেন্ট হিসাবে এর ব্যবহার হচ্ছে। এর সঠিক ও নিয়মিত ব্যবহার কমিয়ে দিতে পারে মেয়েদের বয়স।

 

 

 

BY

ত্রোপা চক্রবর্তী

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *