আমি অনেক কৌতূহলী চোখের উপর দিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। আশ্চর্য কাণ্ড, গাড়ির ভেতরে ক্যাসেট প্লেয়ারে নজরুল গীতি বাজছে। ডক্টর অঞ্জলী মুখার্জির কিন্নর কণ্ঠ— ওগো মদিনাবাসী প্রেমে ধর হাত মম।আবার আগের ব্যবস্থা। সেই ইন্টারোগেশন রুম। তিনজনের জায়গায় দুজন। ঘামবাবু এবং মধ্যমণি। শুধু হামবাবু নেই। তবে আজকের পরিস্থিতি মনে হয় সামান্য ভালো।
আমার সামনে এককাপ চা রাখা হয়েছে। অন্য একটা প্লেটে বিসকিট আছে। ঘামবাবু বিসকিটের প্লেটটা আমার দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, চা খাও।আমি চায়ে বিসকিট ড়ুবিয়ে খেতে শুরু করেছি। এই আধুনিক সময়ে চায়ে বিসকিট ড়ুবিয়ে খাওয়াকে অভদ্রতা গণ্য করা হয়। বিসকিট মাঝে মাঝে গলে কাপে পড়ে যায়।
সেই গলন্ত বিসকিট আঙুল দিয়ে তুলে মুখে দেওয়াকে চূড়ান্ত অশ্লীলতা মনে করা হয়। এই কাজটি কেউ করলে আশেপাশের সবার সুরুচি এতই আহত হয় যে, তারা প্রায় শিউরে উঠেন। আমি এই কাজটিই হাসিমুখে করছি। দুটা বিসকিট এই ভঙ্গিতে খাওয়ার পর তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললাম, জিয়ে জিয়ে নি। জিয়ে জিয়ে নি।মধ্যমণি বললেন, তার মানে?
আমি বললাম, স্যার চাইনিজ ভাষায় বলেছি, আপনাকে ধন্যবাদ। জিয়ে জিয়ে নির মানে ধন্যবাদ। আমি অভদ্রের মতো আপনাদের সামনে চা বিসকিট খেলাম— মেই গুয়া জি! মেই গুয়া জির অর্থ, মনে কিছু করবেন না।মধ্যমণি বললেন, চাইনিজ ভাষায় কথা বলার প্রয়োজন দেখছি না। বাংল ভাষায় কথাবার্তা হোক। বাংলায় কথা বলতে তোমার যদি অসুবিধা না হয়।
আমি বললাম, বিকে কি, অর্থাৎ ঠিক আছে।মধ্যমণি আমার দিকে ঝুকে এসে বললেন, তোমার পাসপোর্ট আছে? জি-না স্যার। পাসপোর্ট দিয়ে আমি কী করব? আমি চব্বিশ ঘণ্টায় তোমার একটা পাসপোর্ট করিয়ে দিচ্ছি।আমি আনন্দিত হবার ভঙ্গি করে বললাম, জিয়ে জিয়ে নি। আপনাকে ধন্যবাদ।তোমার ভিসার ব্যবস্থা করে দেব। তুমি পরশু চলে যাবে।জি আচ্ছা।কোথায় যাবে জানতে চাইলে না?
কোথায় যেতে হবে। আমি জানি।তোমার জানার কথা না।কথা না থাকলেও কেউ কেউ অগ্রিম জেনে ফেলে। একজন সন্ত্রাসী যখন ধরা পড়ে সে কিন্তু জানে না কখন সে মারা যাবে। আপনারা জানেন।মধ্যমণি বললেন, অতিরিক্ত স্মার্ট হবার চেষ্টা করবে না।আচ্ছা স্যার করব না।তোমাকে কোথায় পাঠাতে চাচ্ছি বলে তোমার ধারণা?
মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল, সিঙ্গাপুর। হামবাবুর আত্মীয়স্বজনদের ধারণা হয়েছে যেহেতু আমাকে চড় মারতে গিয়ে উনার এই অবস্থা, এখন একমাত্র আমিই পারি উনার ঘুম ভাঙাতে। তার ছেলে আমাকে তার বাবার পাশে উপস্থিত করাবার জন্য অতি ব্যস্ত। এর মধ্যে আপনারাও আমার বিষয়ে কিছু খোঁজখবর করেছেন। আপনাদের ধারণা হয়েছে, আমি পীর ফকির টাইপের কিছু। আধ্যাত্মিক ক্ষমতা টমতা আছে। আপনারাও কিঞ্চিৎ ভীত।
শক্তিধররা ভীতু। হয়। কারণ শক্তিধররাই শক্তির ক্ষমতার সঙ্গে পরিচিত। এখন আমি একটা সিগারেট খাব। আমাকে একটা সিগারেট দেবেন? মধ্যমণি ঘামবাবুর দিকে তাকালেন। চোখে চোখে ইশারা খেলা করল। ঘামবাবু সিগারেটের প্যাকেট এবং লাইটার এগিয়ে দিলেন। আমি সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললাম, স্যার, আমার চেঙ্গিস খান বইটা কি পাওয়া গেছে?
পাওয়া যায় নি।
পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ যাবে।
মধ্যমণি হাত বাড়িয়ে সিগারেটের প্যাকেট থেকে সিগারেট নিলেন। সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললেন, তোমার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা কি সত্যিই আছে? কিছুই নাই স্যার। গড অলমাইটি সমস্ত ক্ষমতা তার নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। কাউকেই তিনি কোনো ক্ষমতা দেন না। অনেকেই ভাবে তার ক্ষমতা আছে। এই ভেবে আনন্দ পায়। মিথ্যা আনন্দ।তোমার কোনো সুপারন্যাচারাল পাওয়ার নেই?
জি-না! তাহলে কী করে বললে যে, তোমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হবে? মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল।হামবাবুর ছেলে আমাকে লোক মারফত একটা চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে সব জানিয়েছে। চিঠি সঙ্গে আছে। পড়তে চান? মধ্যমণি বললেন, চিঠি পড়তে চাই না।তাকে দেখে মনে হলো তিনি স্বস্তিবোধ করছেন। হিমু নামক লোকটির কোনো ক্ষমতা নেই। সে সাধারণের সাধারণ, তাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাকে চড়-থাপ্পড় দেয়া যেতে পারে। আমি বললাম, স্যার উঠি?
ঘামবাবু কঠিন ধমক দিলেন, উঠি মানে! ফাজলামি কর? বসে থাকো।আমি বসে থাকলাম। আরেকটা বিসকিট খাব কি-না চিন্তা করছি। বিসকিটের চাইনিজ কী? ঝোলার ভেতর ডিকশনারিটি আছে। চুপচাপ বসে না। থেকে কিছু চাইনিজ শব্দ শিখে ফেলা যেতে পারে। ডিকশনারি বের করতে গিয়ে হু-সির উপহার লজেন্সে হাত পড়ল। আমি মধ্যমণির দিকে তাকিয়ে বললাম, লজেন্স খাবেন স্যার?
উনি জবাব দিলেন না। আমি দুজনের সামনে দুটা লজেন্স রেখে ডিকশনারি খুলে বসলাম। চুপচাপ বসে না থেকে জ্ঞানের চর্চা হোক। নবিজী বলেছেন— জ্ঞানের চর্চার জন্যে সুদূর চীন দেশে যাও। আমাকে চীনে যেতে হচ্ছে না। চীন চলে এসেছে আমার হাতে।
সাইকেল জি জিং ছে
বেবি টেক্সি সান লুন
বাস গাং গাং কি ছে
সাধারণ নৌকা জিয়াও চুয়ান
যন্ত্রচালিত নৌকা মো টুয়ো টিং
মধ্যমণি নড়েচড়ে বসলেন। জজ সাহেবদের মতো টেবিলে টোকা দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। আমি বললাম, কিছু বলবেন স্যার? পাসপোর্টের জন্যে তোমার ছবি দরকার। ছবি কি আছে, না তুলতে হবে? আমি বললাম, পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে না। স্যার হামবাবুর জ্ঞান ফিরেছে। উনি সুস্থ। কাল পরশুর ভেতর দেশে ফিরবেন।তোমাকে কে বলেছে?
কেউ বলে নাই। এটা আমার অনুমান। আপনারা টেলিফোন করে দেখুন জ্ঞান ফিরেছে কি-না। আমি ততক্ষণে চাইনিজ ভাষা আরো কিছু রপ্ত করি।মধ্যমণি টেলিফোন সেট হাতে নিলেন। আমি চোখের সামনে ডিকশনারি মেলে ধরলাম।
গায়ক গে চাং ইয়ান ইউয়ান
পরিচালক দাও ইয়ান
অভিনেতা নান ইয়ান ইউয়ান
অভিনেত্রী নু ইয়ান ইউয়ান
মধ্যমণির টেলিফোন অনুসন্ধান শেষ হয়েছে। তিনি পরিপূর্ণ বিস্ময় নিয়েই আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি হাতের ডিকশনারি নামিয়ে রাখতে রাখতে বললাম, স্যার, কিছু জানা গেছে? মধ্যমণি চাপা গলায় বললেন, মিনিট দশেক আগে জ্ঞান ফিরেছে বলল। সবার সঙ্গে কথা বলেছে। ঠাণ্ডা পানি খেতে চেয়েছে।আমি উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললাম, স্যার, আমি কি এখন উঠতে পারি? দুজনের কেউ কিছু বলল না। তাদের হতভম্ভ ভাব কাটতে সময় লাগবে, এই ফাঁকে কেটে পড়াই ভালো।
ওগো মদিনাবাসী প্রেমে ধর হাত মম গুনগুন করে গাইতে গাইতে আমি বের হয়ে গেলাম। র্যাব হেড অফিস থেকে এই প্ৰথম মনে হয় কেউ প্রেমের গান গাইতে গাইতে গাইতে বের হলো। সবাই অবাক হয়ে তাকাচ্ছে।মেসে ফিরে নিজের ঘরে ঢুকতে যাচ্ছি, জয়নাল দৌড়ে এলো। তার চোখে বিস্ময়।হিমু ভাই, ফিরেছেন? হুঁ। আপনাকে নিয়ে যাওয়ার পর আমি নিজের গালে নিজে তিনটা চড় দিয়েছি।কেন?
আমার সঙ্গে জমজমের পানি ছিল। বড়মামা হজ্ব করার সময় নিয়ে এসেছিলেন। আমার উচিত ছিল আপনাকে একগ্লাস জমজমের পানি খাইয়ে দেয়া। যতক্ষণ শরীরে জমজমের পানি থাকে ততক্ষণ অপাঘাতে মৃত্যু হয় না। হিমু ভাই, আপনি জীবিত ফিরে এসেছেন। দেখে কী যে আনন্দ হয়েছে।
আপনি জীবিত ফিরলে আমি পঞ্চাশ রাকাত নফল নামাজ পড়ব বলে আল্লাহ পাকের কাছে ওয়াদা করছি। এখন নামাজ পড়তে যাব।খতমে জালালি কি চলছে? জি, মসজিদে তালেবুল এলেম লাগিয়ে দিয়েছি। আজ সারারাত চলবে। আমি মনে মনে বললাম, মারহাবা র্যাব। মারহাবা।
বালিশের নিচে পাখি ডাকছে। এর মানে কী? ঢাকা শহরের পাখিদের মাথা সামান্য আউলা। তার মানে এই না যে, তাদের কেউ কেউ মানুষের বালিশের নিচে চলে যাবে এবং মনের সুখে ডাকাডাকি করবে। পাখির সন্ধানে বালিশের নিচে হাত বাড়িয়ে যে বস্তু পেলাম, তার নাম মোবাইল টেলিফোন। বড় খালার দেয়া কথোপকথন যন্ত্র। এই যন্ত্রের রিং টোনে আগে বাজনা ছিল, এখন কী করে যেন পাখির ডাক হয়ে গেছে।
হ্যালো বড় খালা! তুই কি ঘুমাচ্ছিলি নাকি? হুঁ।দশটা বাজে, এখনো ঘুমাচ্ছিস? আমার তো অফিস নেই, আমি যতক্ষণ ইচ্ছা ঘুমাতে পারি।তাই বলে তোর কোনো টাইমটেবিল থাকবে না? তোকে রিং করেই যাচ্ছি, রিং করেই যাচ্ছি।কিছু কি ঘটেছে? ঐ মেয়ে চলে এসেছে।কোন মেয়ে চলে এসেছে?
হু-সি।কেন এসেছে? ও কি বাংলা জানে না-কি যে বলবে কেন এসেছে! কিছুই বলছে না। শুধু হাসছে।হাবে ভাবেও কিছু বুঝতে পারছি না? সাথে ব্যাগে করে একগাদা সবজি-টবজি নিয়ে এসেছে। মনে হচ্ছে রান্না করে আমাকে খাওয়াতে চায়। তুই চলে আয়।আমি চলে আসব কেন? আমাকে তো খাওয়াতে চায় না।আমার ধারণা তোকেই খাওয়াতে চায়। সে-ই তো তোকে টেলিফোন
করতে বলল।
কীভাবে বলল?
ইশারায় কানের কাছে হাত নিয়ে টেলিফোন দেখাল, তারপর বলল, হিমি। ঐ দিন তোকে হিমু হিমু ডাকছিলাম, সে শুনে মনে করে রেখেছে। হিমুটাকে হিমি বানিয়েছে। তুই চলে আয়।মেনু কী? মেনু কী তা তো জানি না। ব্যাগ থেকে সব জিনিসপত্র নামায় নি।সাপখোপ আছে না-কি? কী যন্ত্রণা! সাপ থাকবে কেন?
সাপ হচ্ছে ওদের ভেরি স্পেশাল ডিশ।তুই শুধু শুধু কথা লম্বা করছিস, এক্ষুনি চলে আয়।একটু যে সমস্যা আছে।কী সমস্যা? আজ আমার আরেকটা দাওয়াত আছে।তোকে দাওয়াত করে খাওয়াবে কে? খালু সাহেব দাওয়াত পেয়েছেন। আমি ফাও হিসেবে সঙ্গে যাচ্ছি।ফ্লাওয়ারের বাড়িতে দাওয়াত? হুঁ।তোর খালু যাচ্ছে?
ই। অ্যাসিসটেন্ট হিসেবে আমিও সঙ্গে যাচ্ছি।এতক্ষণে বুঝলাম কেন তোর খালুর সকাল থেকে এত ফটফটানি। আচ্ছা! হিমু, দাওয়াতের ঘটনোটা তুই ইন অ্যাডভান্স আমাকে জানাবি না? জানালাম তো। অ্যাডভান্স জানলে। দাওয়াত দুপুর একটায়, তুমি জেনে গেছ দশটায়। তিন ঘণ্টা আগে। অ্যাকশানে যেতে চাইলে যেতে পার। তিন ঘণ্টা অনেক সময়।
আমি অ্যাকশানে এখন যাব না। তোর খালু দাওয়াত খেয়ে আসুক, তারপর দেখবি অ্যাকশান কাকে বলে। তুই অবশ্যই তোর খালুর সঙ্গে যাবি না। তুই আমার এখানে চলে আসবি। তোর জন্যে একটা চমক আছে।কী চমক? আগেভাগে বললে চমক থাকে? এসে দেখে চমকবি। তবেই না মজা।মাজেদা খালার গলায় আনন্দ। ফ্লাওয়ারের বিষয়টা তিনি আমলে আনছেন। না— এটা বোঝা যাচ্ছে। তিনি আরো মজাদার কিছু নিয়ে ব্যস্ত।
আমি চমকাবার প্রস্তুতি নিয়ে দুপুর একটার দিকে বড় খালার বাসার কলিং বেল টিপলাম। দরজা খুলল হু-সি। বড় খালা হু-সিকে দিয়েই চমকাবার ব্যবস্থা করেছেন। তাকে বাঙালি মেয়েদের মতো শাড়ি পরিয়ে রেখেছেন। গলায় আবার বেলিফুলের মালা। এই সময় বেলি ফুল পাওয়া যায় না। নকল বেলি ফুলের মালাও হতে পারে।মাজেদা খালা হাসিমুখে বললেন, চমকেছিস?
হু।শাড়িতে মেয়েটাকে কী সুন্দর লাগছে দেখেছিস! আমার ইচ্ছা করছে এক্ষুনি কাজি ডেকে মেয়েটার সঙ্গে তোর বিয়ে দিয়ে দেই। জোর করে বিয়ে না দিলে তুই বিয়ে করবি না। পথে পথে ঘুরবি।হুঁ।তুই শুধু হুঁ হুঁ করছিস কেন? চাইনিজ মেয়ে বিয়ে করতে তোর কি কোনো আপত্তি আছে? না।
ঐ মেয়ে বাঙালি বিয়ে করতে রাজি আছে কি-না কে জানো! ওকে জিজ্ঞেস করে যে জানব সেই উপায় নেই। এক বর্ণ বাংলা বুঝে না। আমি অবশ্যি বাংলা শেখানো শুরু করেছি। অন্যকে শেখাতে গিয়ে বুঝলাম, বাংলা ভাষা খুবই কঠিন ভাষা। তবে মেয়েটা দ্রুত শিখছে। বুদ্ধিমতী মেয়ে তো! খালা হাতে একটা কাপ নিয়ে জিজ্ঞাসু চোখে হু-সির দিকে তাকালেন, হু-সি বলল, কাপ।
খালার মুখের হাসি অনেকদূর বিস্তৃত হলো। তিনি হাতে পানির গ্লাস নিলেন।হু-সি বলল, পানি।খালা গ্লাসে টোকা দিলেন। হুসি বলল, গ্লাস।এবার খালা নিজের চুলে হাত দিলেন। হু-সি বলল, চুল।খালা বিজয়ীর ভঙ্গিতে বললেন, দেখলি, একদিনে কত কী শিখিয়ে ফেলেছি?
আমি বললাম, তাই তো দেখছি। আচ্ছা খালা, এমন কি হতে পারে যে এই মেয়ে ভালোই বাংলা জানে— আমাদের সঙ্গে ভান করছে যেন কিছুই জানে না! খালা বিরক্ত মুখে বললেন, তুই সারাজীবন গাধাই থেকে গেলি। তোর জীবনটা গাধামি করতে করতেই কেটে গেল। গাধার গাধা।দুপুরে আমরা হু-সির রান্না করা মাছের আঁশটে গন্ধে ভরপুর কুৎসিত সুপ খেলাম। দুৰ্গন্ধে পাকস্থলি উল্টে আসার মতো হলো।
খালা বললেন, বাহ সুৰ্য্যপটা ভালো হয়েছে তো! অরিজিনাল চাইনিজ। অরিজিনাল চাইনিজে একটু আঁশটে ভাব থাকে। আঁশটে গন্ধাটাই বিশেষত্ব।সুপের পরে মাছের আইটেম। আস্ত ভাজা মাছ। দেখতে লোভনীয়। এক টুকরা মুখে দিয়ে আমি হতভম্ভ। মাছ রসগোল্লার চেয়েও দশগুণ মিষ্টি।মাজেদা খালা বললেন, বাহ ভালো তো! আমি বললাম, তোমার কাছে মিষ্টি লাগছে না?