হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-৩৫

হঁ্যাশুয়ে আছিস যখন শুয়ে থাকআমি পরে টেলিফোন করতে বলিনা, আমি যাচ্ছিমেঘের ছায়া 

মেয়েটা কে ? তুমি চিনবে না, মাআমার বন্ধু ছিল সাবের ওর বড় বােন। 

রেহানা বললেন, শুভ্র, আমার শােবার ঘরের টেলিফোন নাম্বার তুই সবাইকে দিয়ে বােড়াবি নাঅপরিচিত কারাের টেলিফোন ধরতে আমার ভাল লাগে নাকাউকে যদি টেলিফোন দিতেই হয় একতলারটা দিবি। 

আচ্ছাআমার কথায় আবার রাগ করলি না তাে শুভ্র ?” 

না, রাগ করি নিতােমার উপর তাে আমি কখনাে রাগ করি না, মারেহানা বললেন, অন্যায় কিছু বললেও রাগ করবি না? না। 

আমি ছাড়া তােমার কেউ নেই, মাআমি রাগ করলে তুমি যাবে কোথায়

রেহানার চোখে পানি এসে গেলতিনি চট করে অন্যদিকে তাকালেনছেলেকে তিনি তাঁর চোখের পানি দেখাতে চান নাশুভ্র টেলিফোন ধরল। 

হ্যালাে, নীতু আপা?” 

তুমি কেমন আছ?” 

ভাল আছি। 

মেঘের ছায়া খন্ড-৩৫

তােমাকে কখনাে টেলিফোন করে পাওয়া যায় নাযখনই টেলিফোন করি, আমাকে বলা হয়, তুমি বাসায় নেইকিংবা তুমি ঘুমুচ্ছবাসায় যখন থাক তখন কি সারাক্ষণ তুমি ঘুমিয়েই থাক?” 

শুভ্র হাসল। 

নীতু বলল, শুভ্র, তােমাকে আমার খুব দরকারনা ঠিক আমার না, আমার বাবার দরকার। 

উনার কি শরীর ভাল নেই ? উনার কিছুই ভাল নেইউনি গত দুদিন ধরে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করেছেনকেন?” 

উনি ঠিক করেছেন অনাহারে থেকে আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবেনএক চৈনিক কবিও নাকি তাই করেছেনকবির নাম হল লিয়াও সিন কিংবা লিয়াও ঝিনতুমি কি আসতে পারবে

পারব।” বাবা তােমাকে কিছু বলতে চানতুমি দয়া করে শােন উনি কি বলতে চাচ্ছেনআপা, আমি আপনাকে একটা খুব জরুরি কথা বলতে চাইআমাকে আবার কি জরুরি কথা ? আপনি চুপ করে শুনুনদয়া করে রাগ করবেন না। 

এমন কি কথা যে রাগ করার প্রশ্ন আসে ? আমি আপনাকে খুব পছন্দ করি। 

এটা তাে রাগ করার মত কথা না, শুভ্রখুশি হবার মত কথাআমি তােমাকে পছন্দ করিবাবা তােমাকে যতটা পছন্দ করেন ততটা হয়ত নাকিন্তু কমও না। 

আমি যে আপনাদের বাসায় প্রায়ই যাই চাচার সঙ্গে দেখা করতেই যাইকিন্তু যখন দেখি আপনি বাসায় নেই তখন ভয়ংকর খারাপ লাগে। 

মেঘের ছায়া খন্ড-৩৫

আচ্ছাপ্রায়ই আমি আপনাকে স্বপ্নে দেখিকাল রাতেও দেখেছিশুভ্র, তুমি কি বলতে চাচ্ছ আমি বুঝতে পারছি নাতােমার শরীর ভাল তাে

হঁ্যা, শরীর ভালনীতু আপা, এখন আমি আপনাকে একটা ভয়াবহ কথা বলব” 

ভয়াবহ কথা তুমি বলে ফেলেছ বলে আমার ধারণানা, বলিনিএখন বলবনীতু আপা, আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই। 

নীতু চুপ করে রইলমনে হচ্ছে হঠাৎ টেলিফোন ডেড হয়ে গেছেশুভ্র বলল, আপনি কি আমার কথা শুনতে পেয়েছেন 

আপনি কি রাগ করেছেন ?টোলিফোনে নামুখােমুখি আমি তােমার সঙ্গে কথা বলবআমি কি এখন আসব?| না এখন নাকাল এসােআমার কোন ভাল শাড়ি নেইশুভ্র, আমি সুন্দর একটা শাড়ি কিনবআজই কিনবকি রঙ তােমার পছন্দ বলতাে?” 

নীতু আপা, আপনি কি আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছেন

বুঝতে পারছি নাতুমি আমার মাথা এলােমেলাে করে দিয়েছতুমি কাল এসাে। কাল আমি তােমার সঙ্গে কথা বলবরাখি শুভ্র। 

 

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা মেঘের ছায়া খন্ড-৩৬

 

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *