হুমায়ূন আহমেদের লেখা শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-১১

কিটকির হাত ধরে হল থেকে বেরিয়ে এলামআলােয় এসেই লজ্জা পেয়ে গেল সে

শঙ্খনীল কারাগারতুই একটা পাগলবলেছে আপনাকে! আর একটা বাচ্চা খুকিআর আপনি একটা বুড়াে। 

তুই ভারি ভালাে মেয়ে কিটকিতাের কান্না দেখে আমার এত ভালাে লেগেছে। 

ভালাে হবে না বলছিআইসক্রীম খাবি কিটকি

নানানা, খেতেই হবেআয়, তুই সিনেমা দেখালিআমি আইসক্রীম খাওয়াই। 

দেখলেন তাে কুল্লে সিকিখানা সিনেমাআচ্ছা, তুই সিকিখানাই খাসা’ 

কিটকি সুন্দর করে হাসলসবুজ রুমালে নাক ঘষতে ঘষতে বলল, ছবিটা বড় ভালাে, তাই না

হ্যাঁইস্, সবটা যদি দেখতাম!” 

শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-১১

গরমে মন্দ লাগল না আইসক্রীমবড়াে কথা, পরিবেশটি ভালােসুন্দর করে সাজান টেবিলে সাদা টেবিলক্লথবয়গুলি কেতাদুরস্তঅসময় বলেই ভিড় নেইকিটকি তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলল, চলুন উঠি‘ 

বস আরেকটু, আইসক্রীম আরাে একটা নেছেলেমানুষ পেয়েছেন আমাকে, না?সবুজ রুমাল বের করে নাক ঘষল কিটকি। 

আমার ভীষণ নাক ঘামে, খুব বাজেনা, খুব ভালাে, যাদের নাক ঘামে তারাজানি জানি, বলতে হবে নাযত সব মিথ্যে কথাআপনি বিশ্বেস করেন

আমিও নাআচ্ছা, যেসব মেয়েদের গালে টোল পড়ে, তাদের হাসব্যাণ্ড নাকি খুব কম বয়সে মারা যায়

কই, তাের তাে টোল পড়ে না? নাকি পড়ে? হাসি দে একটা। 

আহা, আমার জন্যে বলছি নাআপনি ভারি বাজেবাসায় যাবি কিটকি ? চল যাইনা, আজ থাকআরেক দিন যাব। 

শুক্রবারে আয়শুক্রবারে কলেজ খােলা যে, আচ্ছা, সন্ধ্যাবেলা আসব‘ 

রাতে থাকবি তাে

কিটকি রিকশায় উঠে হাত নাড়ল। 

রাে েতেজ কমে আসছেচারটে বেজে গেছে প্রায়প্রচুর ঘেমেছিবাসায় গিয়েই 

কটা ঘ গােসল সারবঅবেলায় ভাত আর খাব নাচাটা খেয়ে দীর্ঘ ঘুম দেবরয়া দিন ধরেই সিনেমা দেখার জন্যে ঘ্যানর ঘ্যানর করছেতাকে নিয়ে এক দিন দেখলে হয় ইয়েলাে স্কাই। 

শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-১১

বাসায় এসে দেখি, গেটে তালা ঝুলছেতালার সঙ্গে আটকান ছােট্ট চিরকুট, খােকা, সবাই মিলে ছােটখালার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিসন্ধ্যার আগে ফিরব নাতুইও এসে পড়ারাবেয়া। 

ক্লান্তি লাগছিল খুব, কোথাও গিয়ে চাটা খেলে হত। 

এই চিঠিটি সম্ভবত তােমাকেই লেখা

তাকিয়ে দেখি, বেশ লম্বা নিখুঁত সাহেবি পােশাকে এক ভদ্রলােক আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেনকপালের দুপাশের চুলে পাক ধরলেও এখনাে বেশ শক্ত সমর্থ চেহারা। 

তুমি বলেছি বলে কিছু মনে কর নি তাে, ছেলের বয়সী তুমিনানা, কিছু মনে করি নি আমিআপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না। 

চিনবে কী করে, আমি তাে পরিচিত কেউ নইরাবেয়া বলে এই বাড়িতে একটি মেয়ে আছে না

জ্বি, আমার বােন। 

ছােটবেলায়, সে যখন স্কুলে পড়ত, তখন তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। 

তাকে দেখলেই আমি গাড়িতে করে লিফট দিতাম। 

তাই নাকি

হাঁ, বড়াে ভালাে মেয়েঅনেক দিন দেশের বাইরে ছিলামকিছুদিন হল এসেছি, ভাবলাম মেয়েটিকে দেখে যাই

 

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-১২

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *