হুমায়ূন আহমেদের লেখা শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-২৬

হয়েছে

দাদাকে যদি মেরে ফেলে, সেও তাে প্রফেসর‘ 

শুনে আমি হেসে বাঁচি নাওর যত টান দাদার জন্যে। 

হতাশা আর বিষন্নতায় যখন সম্পূর্ণ ডুবেছি, তখনি কিটকির চিঠি পেলামদেশে ফিরছি কবে বলতে পারছি না। প্লেনের টিকিট পেলেই

শঙ্খনীল কারাগার 

বদলে গেছিস কিটকিলম্বা হয়েছি, না? ‘হু, আর রােগাও হয়েছিসআপনিও বদলেছেন, কি বিশ্রী গোঁফ রেখেছেনবিশ্রী ? হা, বিশ্রী আর জঘন্য, দেখলেই সুড়সুড়ি লাগেম্যানিলার কথা বলাসে তত চিঠিতেই বলেছিমুখে শুনি। 

রাবেয়া ট্রেতে চা সাজিয়ে আনলকিটকি হাসতে হাসতে বলল, রাবেয়া আপা আগের মতােই আছেন। 

না রে, স্বাস্থ্য ভালাে হয়েছে, এই দেখ হাতে কত জোরউহু, উহু, আমার ঘাড় ভেঙে ফেলেছেনবােন ফ্রাকচার হয়েছে নির্ঘাৎ। 

বােন ফ্রাকচার হয় নি, হার্ট জখম হয়েছে কিনা বলরাবেয়া হাসতে হাসতে চলে গেলকিটকি বলল, রুনুর কথা বলেন। না, রুনুর কথা থাকমন্টুর নাকি একটা কবিতার বই বেরিয়েছে? হ্যা, কিছু কিংশুকনামতােমাকে নিশ্চয়ই দেবে এক কপিকেমন হয়েছে? আমি কবিতার কী বুঝি, তবে সবাই ভালাে বলেছে। 

আপনার প্রফেসরির কী খবর

খবর নেই কোনােবেতন বেড়েছেব্যাঙ্কে কিছু জমেছেখরচপত্তর তাে বিশেষ তেমন কিছু নেই‘ 

রাবেয়া আপা শেষ পর্যন্ত বিয়ে করলেন না? না‘ 

শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-২৬

রাবেয়া করতে চাইল না, বাবা খুব চেষ্টা করেছিলেনকিটকি অনেকক্ষণ থাকল বাসায়দুপুরে আমাদের সঙ্গে ভাত খেলবিকেলে 

চা খেয়ে চলে গেলকিটকিকে অন্যরকম লাগছিলছেলেমানুষী যা ছিল ধুয়ে মুছে গেছেভারি সুন্দর হয়েছে দেখতেচোখ ফেরান যায় না, এমন। 

সারা সন্ধ্যা কিটকির কথা ভাবলামছােটবেলা কিটকি আমার জন্যে এক ধরনের আকর্ষণ অনুভব করতএখনাে করে কিনা কে জানে! তাকে সরাসরি কিছু বলার মতাে সাহস আমার নেই, কিন্তু বড়ড়া জানতে ইচ্ছে করেরাত দশটার দিকে রাবেয়া আমার ঘরে এল। 

কি রে, জেগে আছিস

রাবেয়া চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে খাটে বসলচিরুনি কামড়ে ধরে বেণী পাকাতে লাগল। 

খুব লম্বা চুল তাে তােরএকটা বেণী কেটে নিয়ে যে কেউ ফাঁস নিতে পারবেপ্রেমের ফাঁস, বলকিটকিকে দেখে খুব রস হয়েছে, না? মন পেয়েছিস কিটকির? রমণীর মন সহস্র বৎসরেরও সখা সাধনার ধন। 

তাের সাধনাইবা কম কি? পাঁচ বছর অনেক লম্বা সময়। 

শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-২৬

রাবেয়া চুপচাপ বসে থাকল কিছুক্ষণতার পর বলল, ‘খােকা তোের কাছে একটা কাজে এসেছি‘ 

কি কাজ? আমাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দে, কিছু পড়াশােনা করি‘ 

এত দিন পর হঠাৎ? এমনি ইচ্ছে হলআর একটা মাষ্টার রেখে দিস, কিছু তাে ছাই মনেও নেই আচ্ছা দেবআবার ছেড়ে দিবি না তাে? না, ছাড়ব না‘ 

ঝুনুর ছেলে হবেযাতে কেউ গিয়ে তাকে নিয়ে আসে, সে জন্যে সে সবার কাছে চিঠি লিখেছেতারা আসতে দেবে কিনা কে জানে! মােটেই ভালাে ব্যবহার করছে 

তারারুনু মারা যাবার পরও আসতে দেয় নিতবু বাবা যাচ্ছেন আনতেসঙ্গে রাবেয়াও যাবেযদি ঝুনু আসে, তবে বেশ হয়অনেক দিন দেখি না ওকেখুব দেখতে ইচ্ছে করে। 

রাবেয়া কলেজে ভর্তি হয়েছেউৎসাহ নিয়ে রাত জেগে পড়ে। ছুটির দিনগুলি ছাড়া তাকে পাওয়াই যায় নারােববারে ফুর্তি হয় এই কারণেইসবাই রােববারের 

 

Read More

হুমায়ূন আহমেদের লেখা শঙ্খনীল কারাগার খন্ড-২৭

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *