এবার ছাড়া পাবার পর আর মিশিস ন। ‘ছাড়া পাব কিভাবে?
‘আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে পুলিশের বড় কর্তা, কিংবা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কেউ আছে?
না। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর শালাদের কারাের সঙ্গে মহব্বত আছে?” ‘তাের ভাবীর থাকতে পারে। আমার নেই। ‘শেখ হাসিনা, কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরিচিত কেউ কি আছে যে তােকে চেনে।
‘আমার জানা মতে নেই। তবে তোর ভাবীর থাকতে পারে। ওর কানেকশন ভাল।
‘তাহলে টেলিফোন করে ভাবীকে বল । ভাবী একটা-কিছু ব্যবস্থা করবে।’
‘সর্বনাশ তোর ভাবীকে জানানােই যাবে না। আমি হাজতে আছি শুনলে কারবালা হয়ে যাবে।পুলিশ শুনেছি ঘুষ খায়। এরা খাবে না?”
প্রতিমন্ত্রীর শালা এসে আমাদের দিয়ে গেছে তাে–পুলিশ এখন আর ঘুষ খাবে না। তবে আমাদের নিজ থেকেই উচিত পান খাওয়ার জন্যে তাদের কিছু দেয়া । মারের হাত থেকে বাঁচার জন্যেই দিতে হবে।
ব্যাঙাচি আঁৎকে উঠে বলল, ‘মারবে নাকি?”
‘মারবে তাে বটেই। কথা বের করার জন্যে মারবে। ইন্টারােগেশনের টাইমে হেভি ধােলাই দিতে পারে। তাের সঙ্গে কথা বলছে, কথা বলছে স্বাভাবিক ভাবেই বলছে, আচমকা গদাম করে তলপেটে এক ঘুষি।
‘বলিস কি? ইন্টারােগেশন কখন হবে? | ‘ওসি সাহেবের সময় হলেই হবে। যত দেরিতে উনার সময় হয় ততই ভাল। এত দুঃচিন্তা করে লাভ নেই। ঘুমিয়ে থাক।
দোস্ত, তুই কিছু মনে করিস না। তােক একটা সত্যি কথা বলি। তার সঙ্গে মেশা আমার ঠিক হয়নি। বিরাট ভূল হয়েছে। গ্রেট মিসটেক। তােকে ভাল মানুষের মত দেখালেও তুই আসলে ডেঞ্জারাস।
হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১২
‘আর মিশিস না।’ ‘মিশিস না বললেই তাে হবে না। তুই আমার বাল্যবন্ধু। ‘বিপদের সময় বাল্য-বন্ধু, বৃদ্ধ-বন্ধু কোন ব্যাপার না।”
এটাও ঠিক বলেছিস। দোস্ত, এখানে বাথরুমের কি ব্যবস্থা? আমার। টেনশানে বাথরুম পেয়ে গেছে।
‘ছােট বাথরুম হলে এক কোণায় বসে পড়। হাজতের সেলে ছােট বাথরুম করা যায়। কেউ কিছু বলে না। বড়টা হলে সমস্যা আছে।”
‘কি সমস্যা? ‘সেন্টিকে ডাকতে হবে। আর যদি দয়া হয় বাথরুমে নিয়ে যাবে। ‘দয়া না হলে?
দয়া না হলে দয়া তৈরি করার সিস্টেম আছে। টাকা দিলেই দুয়া তৈরি হয়। ‘আমাদের সঙ্গে তাে টাকা নেই।” ‘তাের কি বড়টা পেয়েছে?
সকালবেলা বাউলস ক্লিয়ার হয়েছে এখন এই টেনশানটায় সিস্টেমে গন্ডগােল আগামীকাল সকালে যেটা হবার কথা সেটা এখন হতে চাচ্ছে। দোস্ত কি করব?
‘দেখি, সেন্টিকে ডাকি।
‘যদি রাজি না হয়? দোস্ত আমার পানির পিপাসাও পেয়েছে। এখানে পানি খাবার সিস্টেম কি? | ‘বাথরুমে যখন নিয়ে যাবে ঐ সময় পানি খেয়ে নিবি। উটের মত বেশি করে খাবি। যাতে জমা করে রাখতে পারিস। আবার পানি খাবার সুযােগ কখন হবে কে জানে।
ব্যাঙাচি করুণ চোখে তাকিয়ে আছে। তার কপাল ঘামছে’ ঠোট শুকিয়ে গেছে। বিড়বিড় করে কি যেন বলছে । মনে হয় কোন দোয়া-টোয়া পড়ছে। নিয়ামুল কোরানে কোন বিপদে কোন দোয়া পড়তে হয় তার বিবরণ আছে। ঝড়ের সময়ে দোয়া, আগুন লাগলে দোয়া, দামী জিনিস হারিয়ে গেলে খুঁজে পাবার দোয়া… পুলিশের হাতে পরলে কোন দোয়া পড়তে হবে সেটা নেই। থাকলে জনগণের উপকার হত।
ওসি সাহেব প্রথমে আমাকে ডাকলেন। তাও ঠিক সন্ধ্যার আগে আগে । দুলােক গম্ভীর প্রকৃতির। চেহারার মধ্যেই একটা ঘুষ খাই, ঘুষ খাই তাব। মাঝে মাঝে জিব বের করে ঠোঁট চাটেন। চাটা দেখে মনে হয় ঠোঁটে অদৃশ্য চিনি মখানাে । জিব দিয়ে সেই চিনি চেটে নিয়ে মজা করে যাচ্ছেন।
হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১২
আপনার নাম? ‘স্যার, আমার ভাল নাম হিমালয়। ডাক নাম হিমু।’ ‘হাজতে এই প্রথম এসেছেন, না এর আগেও এসেছেন?
এর আগেও বেশ কয়েকবার এসেছি।’
‘তাহলে তাে আপনি আত্মীয়ের মধ্যেই পড়েন। কখনাে কনভিকশান হয়েছে?
‘জি না। হাজত থেকেই ছাড়া পেয়ে গেছি।
এইব্যর পাবেন না। এইবার জেলখানার ল্যাপসি পাওয়ার ব্যবস্থা করে
জি আচ্ছা।’ ‘মনে হচ্ছে আমার কথা শুনে মজা পাচ্ছেন। মজার ইংরেজী জানেন?
জানি স্যার –ফান। এইবার আপনার ফানের ব্যবস্থা করে দেব। গাড়ি ভাঙ্গতে খুব মজা লাগে? ‘স্যার, আপনার সামান্য ভুল হয়েছে। আমি গাড়ি ভাঙ্গিনি। অতি ভদ্রভাষায় লিফট চেয়েছিলাম। উনি লিফট দেয়ার নাম করে থানায় নিয়ে এসেছেন।
‘তাই নাকি?
‘জ্বি স্যর, এটাই ঘটনা। বাংলাদেশ পেনাল কোডে — কথা নিয়ে কথা না রাখার কি কোন শাস্তি আছে? যদি থাকে তাহলে তাঁর শাস্তি পাওয়া উচিত।’
‘আপনি কি নিজেকে অতিরিক্ত চালাক ভাবেন?”
‘জ্বি না, ভাবি না। তবে স্যার, সত্যি কথা বলতে কি – আমি যেমন নিজেকে চালাক ভাবি না – অন্যকেও ভাবি না।’
আপনি কার গাড়ি ভেঙ্গেছেন সেটা জানেন? ‘স্যার, আমি কারাের গাড়ি ভাঙ্গিনি। তবে যিনি গাড়ি ভাঙ্গার কথা বলছেন তিনি ক্ষমতাবান মানুষ মন্ত্রীর শ্যালক। এই তথ্য জানি।
‘তিনি এফ আই আর করে গেছেন—- আপনি এবং আপনার বন্ধু মিলে তাঁর গাড়ি ভেঙ্গেছেন। এবং আগে একদিন তাঁকে ভয় দেখিয়েছেন। থান ইট দিয়ে তার মাথা ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিলেন।
‘থান ইট দিয়ে মাথা ভেঙ্গে দেবার কথাটা সত্যি না হলেও ভয় দেখাবার ব্যাপারটা সত্যি।
‘ভয় কিভাবে দেখিয়েছেন?
‘ভেঙচি কেটেছি। বাচ্চারা কাউকে ভেঙচি দিলে ভয় লাগে না। কিন্তু বড় কোন মানুষ ভেঙচি কাটলে বুকে ধাক্কার মত লাগে : কিতাবে ভেঙচি কেটেছিলাম সেটা কি স্যার ডেমনসট্রেট করে দেখাব?
‘অবশ্যই দেখাবেন। আপনার মত ফাজিলদের কি চিকিৎসা আমরা করি সেটা আগে একটু ডেমনসট্রেট করে দেই। প্রথমে আমাদের ডেমন্সট্রেশন, তারপর আপনারটা।
‘আপনাদের কর্মকাণ্ড শুরু হবার আগে আমি কি একটা কথা বলতে পারি?
হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১২
‘আপনার বােধহয় মনে আছে যে, আপনাকে আমি শুরুতেই বলেছি, আমি এর আগে বেশ কয়েকবার হাজতে এসেছি। প্রতিবারই ছাড়া পেয়েছি। কোন কনভিকশন হয়নি। তা থেকে কি প্রমাণিত হয় না যে, আমিও ক্ষমতাবান একজন মানুষ। মন্ত্রীর শালার চেয়েও আমার ক্ষমতা বেশি। কাজেই আপনি যা করবেন ভেবেচিন্তে করবেন। ইংরেজী ঐ বাক্যটা আশা করি আপনি জানেন —
Look before you leap. ঝাঁপ দেবার আগে ভাল করে দেখ। একবার ঝাঁপ দিয়ে ফেললে কিন্তু সফস্যা।
ওসি সাহেব জিত চাটা বন্ধ করেছেন। সৰু চোখে তাকাচ্ছেন। ভেতরে একটু যে থমকে গেছেন তা বােঝা যাচ্ছে। কাজেই এই সুযােগটা নিতে হবে। ওসি সাহেবকে ভড়কে দিতে পারলে কি-থাপ্পড় থেকে আপাতত রক্ষা পাওয়া যাবে।
‘আপনি বলতে যাচ্ছেন যে আপনি একজন বিগ শট?
‘জ্বি না, আমি অত্যন্ত ক্ষুদ্র প্রাণী — তের পুল শট। জীবাণু টাইপ। আমার পাজেরাে গাড়ি নেই, মন্ত্রী দুলাভাই নেই এবং পায়ে জুতা পর্যন্ত নেই। যদি কিছু মনে না করেন কবীরের একটা দোহা আপনাকে শুনাতে পারি?
কারে কি শুনাতে চাচ্ছেন? ‘কবীরের দোঁহা – কবীর বলছেন,
হরি নে আপনা আপ ছিপায় ।।
হরি নে নফীজ করে দিখরায়া —এর মানে কি?
এর মানে হচ্ছে, ঈশ্বর আপনাকে আপনি লুকিয়ে রাখেন আবার কি অদ্ভুত সুন্দর করেই না নিজেকে প্রকাশিত করেন।
‘আপনি কি বলতে চাচ্ছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। এই যে লাইন দুটা বললেন– এর মানে কি?
‘মানে তাে আপনাকে বললাম।
ব্যাখ্যা করেন | ‘ব্যাখ্যা করতে সময় লাগবে।’ ‘কত সময় লাগবে?
‘দুই তিন দিন সময় লাগবে। এক কাজ করুন, আমাকে দুই তিন দিন হাজতে রেখে দিন। আমি ইন দু’টার ব্যাখ্যা করব। তবে একটা শর্ত আছে।”
হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১২
কি শর্ত? ‘আমার বন্ধুকে ছেড়ে দিতে হবে।
ও আচ্ছা।’
ও আচ্ছা বলার দরকার নেই। মন্ত্রীর শালাবাবুর কাছে অপরাধ যা করেছি আমি করেছি। আমার বন্ধু করেনি। ওকে ছেড়ে দিন– আপনার লাভ হবে।
কি লাভ হবে? ‘সেটা যথাসময়ে দেখবেন। লাভ-লােকশান প্রসঙ্গেও কবীরের একটা দোহা আছে বলব?
‘দোঁহা ফোহা বাদ দিন। ঝেড়ে কাণ্ডন। আপনি কে ঠিক করে বলুন? আপনার ব্যাক গ্রাউন্ড কি? আপনি করেন কি?
‘আমি স্যার কিছুই করি না। হলুদ পাঞ্জাবী পরে পথে পথে হাঁটি। ‘আপনার চলে কি ভাবে? ‘এত বড় একটা শহরে একজন মানুষের বেঁচে থাকা কোন কঠিন ব্যাপার
না।‘
‘পথে পথে ঘুরেন কেন?
‘আমার বাবার জন্যে পথে পথে ঘুরি। আমার বাবার মাথা ছিল খারাপ। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারত না। তাঁর সমস্ত আচার-আচরণ ছিল স্বাভাবিক মানুষের মত। শুধু চিন্তা ভাবনা ছিল পাগলের মত।
কি রকম?
তাঁর ধারণা হল— যদি ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে পাঠিয়ে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানানাে যায়, ডাক্তারী স্কুলে পাঠিয়ে বানানাে যায় ডাক্তার, তাহলে মহাপুরুষ বানানাের স্কুলে পাঠিয়ে ছেলেকে কেন্ মহাপুরুষ বানানাে যাবে না।
‘মহাপুরুষ বানানাের স্কুল আছে নাকি? | ‘জ্বি না, বাবা একটা ফুল দিয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল আর আমি তার ছাত্র। প্রথম এবং শেষ ছাত্র।
‘লে কি শেখানাে হত?
‘নির্দিষ্ট কোন সিলেবাস ছিল না। প্রিন্সিপ্যাল সাহেবের মাথায় যখন যা আসত তাই ছিল পাঠ্যক্রম : একটা উদাহরণ দেই। আমি অন্ধকারে ভয় পেতাম। সেই ভয় কাটানাের জন্যে তিনি একদিন একরাতে আমাকে বাথরুমে তালাবন্ধু করে রেখেছিলেন। আমার বয়স তখন সাত।
বলেন কি, এ তাে পাগলের কান্ড। আগেই তাে বলেছি বাবা পাগল ছিলেন।
আপনার মা বাধা দেননি?
হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১২
‘মা যাতে বাধা দিতে না পারেন সেই জন্যে মাকে মেরে ফেলেছিলেন। বাবার ধারণা মাতৃস্নেহ মহাপুরুষ হবার প্রক্রিয়ায় বড় বাধা। মহাপুরুষকে সব রকম বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে। স্নেহের বন্ধন, মায়ার বন্ধন, ভালবাসার না‘আই সি। বাবার ট্রেনিং এর ফলে আপনি কি মহাপুরুষ হয়েছেন? ‘জ্বি না। মনে হয় পাশ করতে পারিনি। ফেল করেছি। তবে,…..
তবে আবার কি? ‘লােকজনদের খানিকটা বিভ্রান্ত করতে পারি। এটা মহাপুরুষদের একটা লক্ষণ । মহাপুরুষদের কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়। সত্যি করে বলুন তাে স্যার আপনি কি বিভ্রান্ত হননি?”
‘আমি বিভ্রান্ত হয়েছি?
‘ব্ধি হয়েছেন। আপনার মনে সন্দেহ ঢুকে গেছে। আপনি ভাবছেন – হলুদ পাঞ্জাবী পরা এই লােকটা মহাপুরুষ হলেও তাে হতে পারে। আপনার মন দূর্বল বলেই সন্দেহটা প্রবল।
‘আমার মন দূর্বল? ‘জ্বি স্য’র ঘুষ যারা খায় তাদের মন দুর্বল থাকে।
আই সি।’ ‘আপনি কি স্যার দয়া করে আমার বন্ধুকে ছেড়ে দেবেন?’
ওসি সাহেব বেশ কিছুক্ষণ ঝিম ধরে রইলেন। এক সময় তাঁর কিম কাটল। তিনি মিনিট তিনেক পা নাচালেন মানুষ সাধারণত একটা পা নাচায়— উনি দু’টা পা এক সঙ্গে নাচাচ্ছেন। দেখতে ভাল লাগছে। পা নাচানাে থামল। ওসি সাহেব গম্ভীর গলায় বললেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে যা আপনার বন্ধুকে আমি ছেড়ে দিচ্ছি। আপনি কিন্তু আছেন।’
দেখতে ভাল লাগছে। পা নাচানাে থামল। ওসি সাহেব গম্ভীর গলায় বললেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে যা আপনার বন্ধুকে আমি ছেড়ে দিচ্ছি। আপনি কিন্তু আছেন।’
‘অবশ্যই আছি। আপনাকে কবীরের দুই লাইনের ব্যাখ্যা না দিয়ে আমি যাব না।’
‘চা খাবেন?
‘ঞ্ছি চা খাব এবং একটা সিগারেট খাব। স্যার আরেকটা কথা, হাজতে ঢুকানাের পর কি একটা টেলিফোন করার সুযােগ পাওয়া যায় না। আত্মীয় – স্বজনকে জানানাে যে, দয়া কর, দুশ্চিন্তা কর– আমি হাজতে আছি ।
টেলিফোন করতে চান? ক্তি চাই।’
‘কাকে ফোন করবেন, প্রধান্মন্ত্রীকে?”
‘জি না স্যার, আমি আপনাকে আগেই বলেছি যে আমি অত্যন্ত ক্ষুদ্র ব্যক্তি। জীবাণু টাইপ। জীবাণুর চেয়েও ছােট-ভাইরাস বলতে পারেন!
‘ভাইরাস মাঝে মাঝে ভয়ংকর হয়। ‘জ্বি সার, তা হয়। ‘নাম্বার বলুন আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।”
Read More
হুমায়ূন আহমেদের লেখা হিমুর রূপালী রাত্রি খন্ড-১৩