দর্শনীয় স্থানসমূহ জেনে নিন

দর্শনীয় স্থানসমূহ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার শহর থেকে বন্দর মোকাম পর্যন্ত প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র-সৈকত কক্সবাজারের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুবই ছোট মনে হলেও সাগরের বিশালতা দেখে মনটা বিশাল হয়ে যাবে।

বিশাল সাগরের বুকে দৃষ্টি দিলে চোখে পড়বে শুধু পানি আর পানি। আছড়ে পড়া ঢেউ, সমুদ্রের গর্জন আর নীল জলরাশি আপনাকে মুগ্ধ করবেই। দূরে ভাসমান জেলে নৌকা, সকাল বিকেলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার এ এক অন্যরকম মজা। অন্যরকম শিহরণ ! হরেক রকম বিনোদন ও ভ্রমণ আয়োজন যে কাউকে মুগ্ধ করবে।

প্রবাল, শামুক, ঝিনুক আর এসব সামুদ্রিক পণ্যের তৈরি নানা সামগ্রী পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা। কম মূল্যে শামুক ও ঝিনুকের মালা, বার্মিজ ও বাংলাদেশী পণ্য, আচার আর হরেক রকম বিদেশী পণ্যের জন্য বিখ্যাত এই শহর। সামুদ্রিক মাছ ও মাছের মজাদার রেসিপি যেকোন পর্যটককে রসনা-তৃপ্তি দেবে।

চান্দের গাড়িতে ঘোরার পাশাপাশি চাদের আলোয় বালুকা বেলায় ঘোরার জন্য কক্সবাজারই সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। এসবের পাশাপাশি বৌদ্ধ বিহার ও উপজাতীয় মানুষের জীবনাচার দেখা, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ ও জেলেদের সঙ্গে সময় কাটানো, বাখাইনদের হাতে তৈরি পণ্য কেনা, স্পিডবোটে জার্নি কিংবা মহেশখালীর পাহাড়ের উপরে ৬০০ বছরের বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির দর্শন, মহেশখালীর মজাদার পানের স্বাদ গ্রহণ-সবই সম্ভব একমাত্র কক্সবাজারে। এছাড়া কুতুবদিয়া ও সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ, পাহাড়, সমুদ্র, বন ও লেকের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগের ‍সুযোগ শুধু কক্সবাজারেই আছে। এবার জেনে নিন তার কিছু তথ্য।

হিমছড়ি

 কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশের পিচঢালা মনোরম পথ ধরে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে প্রকৃতির এক বিচিত্র সৗন্দর্যে ভরপুর হিমছড়ি। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে নয়নাভিরাম ঝর্নাধারা আর পাহাড় ও সাগরের মিতালি দেখতে হলে আপনাকে হিমছড়ি আসতেই হবে।

বর্তমানে এখানে বেশ কয়েকটি ছোটখাটো খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। সুউচ্চ পাহাড় দেখে যাদের উপরে ওঠার সাধ তাদের জন্য রয়েছে বিশাল সিঁড়িপথ।

উপরে বিশ্রামাগার। এখানে প্রবেশের জন্য মাথাপিছু ৪০ টাকা হিসেবে টিকেট কাটতে হয়। শীত মৌসুমে ৬০০-১২০০ টাকায় প্রতিদিন কক্সবাজার থেকে অসংখ্য চাঁদের গাড়ি কিংবা সিএনজি, অটোরিকশায় যাওয়া যায়। অফিসজনে ভাড়া পড়ে রিজার্ভ সিএনজি ৪০০-৬০০ টাকায়। একক বা রিজার্ভ করেও যাওয়া যায়।

তবে দল বেধেঁ গেলে খরচ কম পড়ে। হিমছড়িতে দাঁড়িয়ে দিগন্ত বিস্তৃত নীল সাগরের ঢেউ, পাহাড়ের ধার ঘেঁষে সারি সারি ঝাউবন আর নৈসর্গিক দৃশ্য দেখার জন্য হিমছড়ি আপনাকে সারা বছর স্বাগত জানাবে।

ইনানি বিচ

কক্সবাজারের অন্যতম সুন্দর সমুদ্র-সৈকত ইনানি। শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণ উখিয়া থানায় এবং হিমছড়ি থেকে প্রাং ২০-২১ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। যারা হিমছড়ি দেখতে যেতে চান তারা একই সঙ্গে ইনানির নৈসর্গিক দৃশ্যাবলীয়ও উপভোগ করতে পারেন।

বর্তমান এখানে প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পাকিংয়ের জন্যও নির্দিষ্ট ভাড়া প্রদান করতে হয়। এখানে থাকার জন্য রয়েছে দুটি ভালো মানের হোটেল। ইনানি সৈকতের পশ্চিমে মূল সমুদ্র-সৈকত। পূর্বদিকে সুউচ্চ পাহাড় ও সমতলভূমি। বিস্তৃত সৈকত অসংখ্য প্রবাল পাথরের সমারোহ।

অসংর্খ বন্যপ্রাণী ও পাখির সমারোহ রয়েছে এই এলাকাটিতে। বেশ কিছু মৎস্য হ্যাচারি আর স্থানীয় এক ধরনের ফল পর্যটকদের মুগ্ধ করবে। এখানের সুস্বাদু ডাব আর স্থানীয় ছুপড়ি দোকানের চা বাড়তি পাওনা।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

সাগর কন্যা সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি, যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। দ্বীপটি বঙ্গোপসাগরের মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের দক্ষিণের সর্বশেষ স্থলভাগ থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ প্রচুর নারিকেল গাছের বাগান আছে।

দ্বীপটির অপর নাম ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’। এর আয়তন ৩.৩৪ বর্গকিলোমিটার। এই দ্বীপে নানা ধরনের পাথর পাওয়া যায়, যার মধ্যে সাদা পাথর ও কোরাল অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। এই দ্বীপে জীবন্ত কোরাল দেখতে পাওয়া যায়। এই দ্বীপে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বাস। মাছ ধরা হলো এই দ্বীপের বাসিন্দাদের মূল পেশা। পর্যটকরা সাধারণত টেকনাফ থেকে লষ্ণ বা ট্রলারে করে এই দ্বীপে বেড়াতে যায়।

আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু পবনের কোমল স্পশ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন। স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল বিশ্ব রহস্যের জীবন্ত পাঠশালায় পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন ও তৎসংলগ্ন এলাকাকে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

কক্সবাজর জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগর বক্ষের একটি ক্ষদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আয়তন ১৭ বর্গ কিলোমিটার। টেকনাফ থেকে ট্রলারে লষ্ণে কিংবা জাহাজে যেতে লাগে দুই থেকে সোয়া দুই ঘন্টা। এর জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। নারিকেল, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো, ধান এই দ্বীপের প্রধান কৃষিজাত পণ্য।

আর অধিবাসীদের প্রায় সবারই পেশা মৎস্য শিকার। তবে ইদানীং পর্যটন শিল্পের বিকাশের কারণে অনেকেই রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল কিংবা গ্রোসারি শপের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজ-সরল, তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। স্বল্প খরচে পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

সেন্টমার্টিনের বিচে একটু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। ভাল করে জেনে নিন বিচের পানির নিচে শৈবালের পাথর আছে কি না। পা একবার কাটলে সাগরের পানিতে নামার সাধ মিটে যাবে। কারণ পা কাটলে নোনা পানির কারণে কাটা স্থানে প্রচুর জ্বালা-পোড়া করবে।

সেন্টমার্টিন

ছেঁড়া দ্বীপে যেতে চাইলে ট্রলারে যেতে হবে। যদি অতি মাত্রায় এডভেষ্ণার প্রিয় হোন তবে হেঁটে যাওয়ার দুঃসাহস করতে পারেন। ট্রলারে যেতে চাইলে ৬-৮ জনের জন্য ছোট ট্রলার ভাড়া করতে পারেন ৬০০-৮০০ টাকার মধ্যে।

ছেঁড়া দ্বীপে যাওয়ার সময় অবশ্যই বার্মিজ স্যান্ডেল বা স্পন্চ স্যান্ডেল পড়ে যাবেন। না হলে ছেঁড়া দ্বীপে গিয়ে নড়তে পারবেন না। চাইলে গোসল করার প্রস্তুতি নিয়ে যেতে পারেন। আর বেশি সময় থাকার ইচ্ছে থাকলে বিশুদ্ধ পানির বোতল নিয়ে যেতে পারেন।

নীলগীরি

সমূদ্র সমতল থেকে ৩৪৬০ ফুট উপরে মেঘের রাজ্যে নীলগীরি-এর অবস্থান। বান্দরবান শহর থেকে ৪২ কিঃমিঃ দূরে নীলগীরি। চিম্বুক ছাড়িয়ে থানচী যাবার পথে পড়বে এই নীলগীরি। সকালটা বাদে সারাদিন নীলগীরি থাকে মেঘের ভিতর। এ এক আশ্চর্য অনূভুতি। আপনাকে ঘিরে ঘন মেঘ! মেঘের ভিতর আপনি। বেশ মজা না! দেখবেন- মেঘের অনেক রং! নীলগীরি-এর বিকাল আর সন্ধেটা খুব উপভোগ্য!

এখানেও একমাত্র থাকার ব্যবস্থা আর্মিদের চারটি কটেজ। প্রতিটি কটেজে আটজনের থাকার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া ৫০০০/- থেকে ৭৫০০/- টাকা। তাঁবুতিও থাকতে পারবেন, ভাড়া ১৫০০/- থেকে ২৫০০/- টাকা। তবে অবশ্যই আপনাকে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে যেতে হবে। আর্মি রেফারেন্স থাকলে বুকিং পেতে সুবিধে হবে।

সাঙ্গু নদীতে নৌবিহার

স্বর্ণজাদি বৌদ্ধ মন্দির থেকে ফেরার সময় আপনাকে সাঙ্গু নদীর উপর দিয়ে ব্রিজ পেরিয়ে আসতে হবে। এই সময় আপনি বেবীট্যাক্সি বা জীপ দাড় করিয়ে নেমে পড়তে পারেন সাঙ্গু ( বা শঙ্খ) নদীর তীরে। নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত দেশী বোটে ঘন্টা প্রতি ভাড়া নিয়ে যতদূর খুশী চলে যান, আপনার পাশে পাহাড় আর নীচে নদীও চলতে থাকবে।

বগা লেক

বান্দরবান শহর থেকে ৩৪ কিঃমিঃ দূরে কঙ্কনছাড়া ঘাট। চিম্বুক থেকে ৮ কিঃমিঃ আগেই ওয়াই জাংশন থেকে বাম দিকে টার্ন নিতে হবে। কঙ্কনছাড়া ঘাট হতে ইঞ্জিন বোটে সাঙ্গু নদী দিয়ে দেড় ঘন্টার পথ স্রোতের বিপরীতে রুমা বাজার। আপনি চাইলে অতিরিক্ত আধা ঘন্টা (যাওয়া-আসা অতিরিক্ত এক ঘন্টা) ভ্রমণ করে অনেক ঊঁচু থেকে পড়া রিঝুক ঝর্ণাটাও এই ফাঁকে দেখে আসতে পারেন। রুমা থেকে ১৬ কিঃমিঃ দূরে পাহাড়ের উপরে আশ্চর্য এক জলাধার- বগা লেক।

রুমা বাজার থেকে বগা লেক পর্যন্ত দুভাবে যাওয়া যায়। ঝর্ণর পথ অনুসরণ করে হেঁটে পাড়ী দিতে পারেন এই পথ, যাকে বলে ঝিরি পথ। অথবা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় ১১ কিঃমিঃ চাঁদের গাড়ীতে গিয়ে তারপর আরও ৭ কিঃমিঃ পাহাড়ী পথে হেঁটে যেতে পারেন বগা লেক (এই পথের দূরত্ব ১৮ কিঃমিঃ) আপনি যেই পথেই যান না কেন… শারীরিক ফিটনেস খুবই জরুরী এখানে।

বগা লেকে আসা আদৌ উচিত ছিল, কি ছিল না- মাঝপথে গিয়ে এমন চিন্তা করার সুযোগ নেই। রুমা বাজার থেকে গাইড পাবেন। আর্মিদের ক্যাম্পে গাইডের নামসহ আপনাদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করতে হবে। রেজিস্টার্ড গাইড ছাড়া সামনে এগুনো নিষিদ্ধ। গাইড-কে প্রতিদিনের জন্য দিতে হবে ৩০০/- থেকে ৬০০/- টাকা!

বগা লেক

ভূ-তাত্ত্বিকগণের মতে প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে মৃত আগ্নেয়গিরি-এর জ্বালামূখে সৃষ্টি হয়েছে এই বগা লেক। বগা লেকের উচ্চতা ১৭২০ ফিট ! এই স্থানটি মূলতঃ কেউক্রাডাং পাহাড়ে ওঠার বেজক্যাম্প। কেউক্রাডাং জয়ের অভিযাত্রীরা এখানেই অবস্থান করে থাকেন। স্থানীয় মারমাদের পরিচালনায় কাঠ-বাঁশের তৈরী রেস্ট হাউজ পেয়ে যাবেন সহজেই। ভাত (অথনা খিচুরী), চাল কুমড়ার বা শিম এর তরকারী আর ডিম- এই হচ্ছে মোটামুটি প্রতি বেলার ম্যেনু! ধান, সবজী সবকিছুই জুম চাষ থেকে পাওয়া !

বগা লেক থেকে ৪০ মিনিটের হাঁটা পথ পেড়িয়ে সুন্দর একটা ঝর্ণা (চিংড়ি ঝর্ণা) দেখে আসতে পারেন। আর কেউক্রাডাং চুড়ায় উঠতে হলে বগা লেক হতে আরও ৪-৫ ঘন্টার পাহাড়ী হাঁটা পথ। সে পথও মাড়িয়ে আসতে পারেন। শরীর পারমিট করলে ও মনের জোড় থাকলে বগা লেক থেকে পুরো এক দিনের হাঁটা পথ মাড়িয়ে দেখে আসতে পারেন কাইখ্যাং ঝর্ণা ও পুকুর।

 গিরি-সৈকতের সীতাকুন্ড

বান্দরনগরী চট্টগ্রামের শিলাঞ্চল খ্যাত উপজেলা সীতাকুন্ড। দেশের একমত্র শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ও ছোট বড় অসেকগুলো শিল্পকারখানা নিয়ে সারাক্ষণই জমজমাট। এতকিছুর মাঝেও প্রকৃতি এখানে উদার। একদিকে সুউচ্চ পাহাড়, অন্যদিকে সুবিশাল সমুদ্র, গিরি-সৈকতের এমন নিবিড় ঘনিষ্টতা সাধারণত দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না। দেশের অন্যতম বোটানিক্যাল গার্ডেন সীতাকুন্ড ইকো-পার্কের কথা না হয় বাদই দিলাম। এরপরেও এখানকার বেশ কিছু পর্যটন এলাকা দেশের বিভিন্ন স্থানের দর্শণার্থীদের কাছে উঠেছে যথেষ্ঠ জনপ্রিয়।

এখানে প্রতিনিয়ত দেশের নানা স্থান থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষ ও কলেজ-ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা ছুটে আসছে প্রকৃতির স্বাদ পেতে। কিন্তু সারকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তেমন আন্তরিক নয়। সরকারের আন্তরিকতা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে শুধু দেশেই নয় বরং আন্তর্জাতিকভাবেও বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারে এমন কিছু সম্ভাবনাময়ী পর্যটন এলাকা নিয়ে পরবর্তীতে আলোকপাত করা হলো।

 চন্দ্রনাথ পাহাড়

চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত চন্দ্রনাথ পাহাড়। সাড়ে তিন কিলোমিটার উঁচু এ পাহাড়টিকে অনেকে আখ্যায়িত করেন বাংলাদেশের হিমালয় হিসেবে। এ পাহাড় এবং পাহাড়কে কেন্দ্র করে আশেপাশের এলাকা দেশবাসীর কাছে পর্যটন কেন্দ্রের মর্যাদা পাচ্ছে। এর আরেক পরিচয় ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দুদের তীর্থস্থান হিসাবে।

প্রতি বছর চৈত্র মাসে শিব চতুর্দশী মেলা উপলক্ষে এখানে ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাসহ সারাদেশ থেকে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। বিভিন্ন কলেজ, ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এবং ভ্রমণ পিপাসু সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে সবসময়। চলচিত্র নির্মাতারা আসেন ছবি নির্মাণের জন্য। এর পাহাড়, ঝরণা ও আশেপাশের দৃশ্যের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় সাধারণ মানুষ। পাহাড়ে আরোহন করে পশ্চিমে তাকালে দেখা যায় বিশাল সমুদ্র আর পূর্বে পাহাড়ের পর পাহাড়। আশেপাশের জনপদগুলোকে মনে হয় পটে আঁকা ছবি।

বাশঁবাড়ীয়া সমুদ্র-সৈকত

চট্টগ্রাম শহর থেকে ত্রিশ কিলোমিটার উত্তরে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকত। দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ সমুদ্রর সীমাহীন জলরাশি আর সবুজ মাঠ, এমন দৃশ্যে হঠাৎ করেই মন কেমন হয়ে উঠে। অনেকের মাঝে থেকেও নিজেকে তখন একা মনে হয়। মনে হয় তার মত সুখী পৃথিবীতে আর কেউ নেই। এক অফুরন্ত ভাল লাগার স্থান বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকতের প্রতি স্থানীয় ও আশেপাশের মানুষের আগ্রহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এখানে সপরিবারে বেড়াতে এসে আলাড় হলো বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বণিকের সাথে। আলোচনা প্রসঙ্গে জানান, এটি তার প্রিয় জায়গা। তিনি আরো মনে করেন বাঁশবাড়ীয়া সমুদ্র-সৈকতকে সরকার পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে রাজস্ব আয় বাড়বে তেমনি মানুষের বিনোদনের সুবিধাও বাড়বে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *