পিএসজিকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ আটে রিয়াল

চ্যাম্পিয়ন লিগ মানেই রিয়াল শো আরেকটু ভালো করে বললে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অন্তত পরিসংখ্যান তাই বলে চ্যাম্পিয়ন লিগের শেষ ৮ ম্যাচে ১২ গোল রিয়াল তারকার। প্রথম লেগে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শনিবার প্যারিসে দ্বিতীয় লেগে মাঠে নামে রোনালদোর রিয়াল। প্রতিশোধের মিশনে উল্টো ২-১ ব্যবধানে হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে নেইমারবিহীন পিএসজি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাজা হতে চেয়েছিল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। সেজন্যে রীতিমতো ব্যাংক ভেঙেছিল ফরাসি এই ক্লাবটি। নেইমারকে কিনতেই ২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা খরচ করেছিল তাঁরা। এসবই জানা কথা। কিন্তু পিএসজির রাজা হওয়ার স্বপ্ন অধরাই রইল। গতবারের মতো এবারও শেষ ষোলো থেকে বিদায় উনাই এমরির দলের।

আটকে রাখতে পারলো না পিএসজি। পারলো না কঠিন সমীকরণ মেলাতে। উল্টো হেরে বসল আবারও। লিগ ওয়ানে শীর্ষে থাকা ক্লাবটিকে দুই লেগেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠলো রিয়াল মাদ্রিদ।

ম্যাচের শুরুর দিকে রিয়াল কিছুটা এগোছালো ছিল। সেই সুযোগে তাদের রক্ষণে চাপ চাপ সৃষ্টির চেষ্টায় ছিল পিএসজি; কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো ছিল ধারহীন।

১৮তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পায় রিয়াল। ডান দিক থেকে লুকাস ভাসকেসের ক্রসে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে সের্হিও রামোসের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ৩৮তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েও হতাশ করেন করিম বেনজেমা। তার শট আলফুঁস আরিওলার পায়ের নিচের দিকে লেগে পাশের জাল স্পর্শ করে।

শেষ আটে রিয়াল

এই অর্ধের শেষ দিকে দুটি ভালো সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। ৪১তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যান কিলিয়ান এমবাপ্পে, পাশেই ছিলেন এডিনসন কাভানি; কিন্তু সতীর্থকে পাস না দিয়ে কেইলর নাভাস বরাবর শট নিয়ে বসেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ‘পিএসজি এন্ডের’ ঠিক পিছনের গ্যালারিতে দর্শকরা ফ্লেয়ার ছুড়তে থাকে। তাতে স্বাগতিক ডি-বক্সে ও তার আশে অনেক ধোঁয়া তৈরি হয়। কিছুক্ষণের জন্য খেলা বন্ধও থাকে।

ম্যাচের ৫১তম মিনিটে দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন রোনালদো। বাঁ-দিক থেকে ভাসকেসের ক্রসে ছয় গজ বক্সে অনেকটা লাফিয়ে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড হেডে বল ঠিকানায় পাঠালে রিয়ালের শেষ আটে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি পর্তুগাল অধিনায়কের ১১৭তম গোল।

৬৬তম মিনিটে আরেকটি ধাক্বা খায় পিএসজি। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মার্কো ভেরাত্তি। চার মিনিট পর মার্কো আসেনসিওর শট লাগে পোস্টে।

৭১তম মিনিটে সৌভাগ্যপ্রসূত গোলে সমতায় ফেরে পিএসজি। ডি মারিয়ার ক্রসে ডাইভিং হেড করেন হাভিয়ের পাস্তোরে। বল প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে ছয় গজ বক্সে কাভানির হাঁটুতে লেগে জালে জড়ায়। কিছুই করার ছিল না নাভাসের।

৮০তম মিনিটে সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন কাসেমিরো। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে আলগা বলে তার শট ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োসের পায়ের নিচের দিকে লেগে দিক পাল্টে পিএসজির জালে দ্বিতীয় বার বল জড়ায়। ততক্ষণে হয়তো চ্যাম্পিয়ন লিগের শেষ আটে খেলার আশা ছেড়ে দিয়েছে পিএসজি।

এই জয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ ব্যবধানের এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন লিগের শেষ আট নিশ্চিত করলো রিয়াল।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *