লোকটি – হুমায়ূন আহমেদ

লোকটি – হুমায়ূন আহমেদ

ঐ কৃপণ লোকের গল্প কি তোমরা শুনেছ? যে চিনির কৌটার পিপাড়া ফেলে দিত না। অন্য একটা কৌটায় জমা করে রাখত? চিনি শেষ হয়ে গেলে ঐ সব পিপড়া দিয়ে চা বানিয়ে খেত। এগুলি গল্পকথা। বাস্তব জীবনে এ রকম ভয়ংকর কৃপণ থাকে না। তবে একেবারেই যে থাকে না তাও না। আজহার উদ্দিন খাঁ এ রকম একজন কৃপণ। লোকটার বয়স তিপ্পান্ন। নারায়ণগঞ্জে তার দুটি গেঞ্জির কারখানা আছে। কারখানা থেকে তার সত্তর হাজার টাকা আয় হয়। ঢাকা শহরে তার তিনটি বাড়ি আছে। সব কটা ভাড়া দিয়ে তিনি মালিবাগে তিন কামরার একটা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন।

এত বড় বাড়ি তার প্রয়োজন নেই বলে। এখন দু’কামরার ফ্ল্যাট খুঁজছেন। যাকে পান তাকেই বলেন- এত বড় বাড়ি দিয়ে আমি করবটা কি? একা মানুষ। আমার একটা রুম হলেই চলে যায়।

সারাদিন কাজকর্মে থাকি- রাতে এসে ঘুমিয়ে থাকি। তার জন্য তিনটা ঘরের দরকার কি? ঘর বেশি হলেই তো আর ঘুম ভাল হবে না।

কেউ যদি বলে, আপনি একা মানুষ, এত টাকা দিয়েই বা আপনি করবেন কি? তখন তিনি এমন দৃষ্টিতে তাকান যে মনে হয় এরকম অদ্ভুত কথা তিনি তার জীবনে শুনেননি। প্রথম শুনলেন।

এক বর্ষাকালের কথা। রাত ন’টার মত বাজে। নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি সবে ফিরেছেন। ফেরার পথে একটা ডিম এবং দু’টা কলা নিয়ে এসেছেন। তার রাতের খাবার। ডিম সিদ্ধ এবং কলা। টিনের কৌটায় টোষ্ট বিস্কিট আছে! একটা টোষ্ট বিস্কিট। তিনি মনে করেন, জীবন রক্ষার জন্যে যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন তার বেশি খাওয়া অপরাধের মত।

তিনি কেরোসিনের চুলায় ডিম সিদ্ধ করার জন্যে বসিয়ে বাথরুমে হাত-মুখ ধুতে গিয়েছেন, তখন কলিংবেলের শব্দ হল। হাত-মুখ ধোয়া বন্ধ রেখে তিনি দরজা খোলার জন্যে গেলেন। দেরি করলে ঐ লোক কলিংবেল টিপতেই থাকবেন। বেহুদা খরচ হবে। কি দরকার?

দরজা খুলতেই দেখেন চাদর গায়ে ২২/২৩ বছরের একজন যুবক ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আজহার খাঁ কড়া গলায় বললেন, কাকে চান।

-আপনাকে চাচ্ছি। আপনার নাম তো আজহার উদ্দিন খাঁ?

-কিন্তু কি দরকার আমার সঙ্গে?

যুবকটি হাসিমুখে বলল, আমি আপনার কাছে একটা জিনিস বিক্রি করতে এসেছি।

আজহার উদ্দিন খাঁ বিরক্ত গলায় বললেন, আমার কোন জিনিসের দরকার নাই।

-আমি যে জিনিস বিক্রি করতে এসেছি- তার সত্যি আপনার কোন দরকার নাই। তবে আপনি ব্যবসায়ী মানুষ, ব্যবসায়ী মানুষ লাভ-লোকসান ভাল বুঝে। আমার জিনিসটা যদি আপনি কিনে রাখেন তাহলে লাখ পঞ্চাশেক টাকা লাভ করতে পারবেন।

আজহার উদ্দিন খাঁ’র ভুরু কুঁচকে গেল। বোঝাই যাচ্ছে লোকটা ঠকবাজ। তিনি ঠকবাজের সাহস দেখে চমৎকৃত হলেন। তার মত ঘাগু লোককে ঠক খাওয়াতে এসেছে। সে জানে না তিনি তাকে সাতঘাটের পানি খাইয়ে ছেড়ে দিতে পারেন।

-কি বিক্রি করতে চান?

-আমার কাছে একটা হীরা আছে- পায়রার ডিমের চেয়ে খানিকটা বড়। এটা বিক্রি করব।

আজহার সাহেব মনে মনে হাসলেন। ঠকবাজদের ঘোল খাইয়ে দেওয়াতেও আনন্দ আছে। তিনি এই আনন্দের লোভ সামলাতে পারলেন না। গম্ভীর গলায় বললেন, আমার কাছে পায়রার ডিমের মত সাইজের হীরা বিক্রি করতে এসেছেন?

-জি, স্যার।

-শুনে সুখী হলাম। এটা কি কোহিনুর হীরা না-কি?

-জ্বি-না স্যার। কোহিনুর না। কোহিনুর আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। কোহিনূরের পরের হীরার নাম ‘দি হোপ’। এটা আছে নিউ ইয়র্কে।

আজহার সাহেব আবার মনে মনে হাসলেন। ঠগবাজের লক্ষণ হচ্ছে ভারি ভারি কথা বলে খদ্দেরকে হকচকিয়ে দেয়। ব্যাটা ঘুঘু দেখেছে ফাঁদ দেখেনি।

লোকটি বলল, আপনি বোধহয় আমার হীরার ব্যাপারটি ঠিক বিশ্বাস করছেন না।

-কেন করব না! অবশাই করছি।

-আমার এই হীরার ওজন একশ সাতাশ ক্যারেট। পারিবারিকসূত্রে আমি পেয়েছি।

-বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন কেন?

-বিক্রি করে দিতে চাচ্ছি, কারণ হীরা কোন কাজে আসে না। চোরের ভয়ে সারাক্ষণ লুকিয়ে রাখতে হয়। এর চেয়ে বিক্রি করলে টাকাটা কাজে লাগে।

আজহার সাহেব বললেন, টাকা আবার কি কাজে লাগবে? টাকাও তো সেই ব্যাংকেই রেখে দিতে হয়।

-আমি অবশ্যি টাকা ব্যাংকে রাখার জন্য হীরা বিক্রি করছি না। আমি ঐ টাকায় কিছু সৎ কাজ করতে চাই।

-সৎ কাজ করতে চান মানে?

-আমি একটি অনাথ আশ্রম করতে চাই। বড় ধরনের অনাথ আশ্রম। যে আশ্রমে ছেলেমেয়েরা নিজের বাড়ির মত থাকবে। লেখাপড়া শিখবে।

-তাতে আপনার লাভ কি?

-আমার লাভ কিছুই না। বাচ্চাগুলির লাভ। আমি একটা হাসপাতালও করতে চাই।

-কি বলছেন? এ তো বহু টাকার ব্যাপার!

-হীরাটার দামও তো স্যার অনেক। এক কোটি টাকা।

-ফাজলেমি করছেন নাকি? এক কোটি টাকা দামের হীরা আপনি পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমার সঙ্গে মামদোবাজি করতে চাচ্ছেন? আমি আপনার মত দশটা মামদোকে এক ঢোক পানি দিয়ে গিলে ফেলতে পারি, তা জানেন?

লোকটা হাসতে হাসতে বলল, আমি স্যার হীরাটা রেখে যাচ্ছি। আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়ে যাচাই করুন। আমি সাত দিন পরে আসব।

-কোন দরকার নেই। আসল হীরা হলেও আমি কিনব না। এত টাকা আমার নেই।

-না কিনলেও জিনিসটা এক সপ্তাহ আপনার কাছে থাকুক। আপনার সন্দেহ দূর হোক।

-এক কোটি টাকা দামের জিনিস আপনি আমার কাছে রেখে যাবেন?

-জি। কারণ, কৃপণ হলেও আপনি মানুষ হিসেবে সৎ। আমি খোঁজখবর নিয়েই এসেছি, স্যার।

লোকটা পকেটে হাত দিয়ে কাঠের একটি ছোট্ট কালো বাক্স বের করে আজহার সাহেবের হাতের দিকে বাড়িয়ে দিল। আজহার সাহেব হাতে নিলেন। বাক্স খুলে জিনিসটা একবার দেখতে তো কোন ক্ষতি নেই। দেখা যাক।

-স্যার, আমি তাহলে যাই।

-যাবেন মানে? আপনার হীরা নিয়ে যান।

-আমি আসব এক সপ্তাহ পরে।

লোকটি আজহার সাহেবকে আর কিছু বলার সুযোগ দিল না। লম্বা লম্বা পা ফেলে অতি দ্রুত রাস্তায় নেমে পড়ল। -আরে আরে, এই এ্যাই, বলে আজহার সাহেব পিছু পিছু গিয়েও লোকটির নাগাল পেলেন না।

তিনি বক্স খুললেন। পায়রার ডিমের মতই ঝকঝকে একটা কি যেন দেখাচ্ছে। খাজ কাটা কাঁচের টুকরা, বলাই বাহুল্য। জার্মান ক্রিস্টাল হবে। তবে জিনিসটা বানিয়েছে সুন্দর।

তিনি টুকরাটা হাতে নিলেন। যদি হীরা হয় তাহলে এটা দিয়ে কাচ কাটা যাবে।

ঘরের আয়নায় একটা আঁচড় দিয়ে দেখবেন না-কি? কোন মানে হয় না যদিও।

তিনি আয়নায় একটা আঁচড় দিলেন। আয়না নিমিষে দু’টুকরা হয়ে গেল। এ কি কাণ্ড! সত্যি কি হীরা? তা কি করে হয়? এত বড় একটা হীরা অচেনা-অজানা একজন মানুষ তার হাতে দিয়ে উধাও হয়ে যাবেন? মানুষ এমন বোকা এখনো হয়নি। নিশ্চয়ই কোথাও কোন চালাকি আছে। চালাকিটা কি?

জিনিসটা বেশ ভারি। আলো পড়লে জ্বলন্ত অঙ্গারের মত ঝিকমিকিয়ে উঠে। আসল হীরা কেমন হয় তিনি জানেন না। তিনি হীরা আগে কখনো দেখেন নি। হীরা কি অন্ধকারেও জ্বলে? জ্বলার তো কথা। এত দামী একটা জিনিস।

তিনি ঘরের বাতি নিভিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে দিলেন। না তো, হীরা থেকে আলো বেরুচ্ছে না। একটা বাতি জ্বালাতেই হাতের জিনিসটা ঝকমক করে উঠল। সারা রাত তার ঘুম হল না। বিছানায় এপাশ-ওপাশ করলেন।

আজহার সাহেবের একজন ম্যানেজার হচ্ছেন মইনুদ্দিন। লেখাপড়া জানা ছেলে। ফিজিক্সে এম এস সি। কোথাও চাকরি না পেয়ে আজহার সাহেবের গেঞ্জির কারখানায় ঢুকেছে। ভাল ছেলে, সৎ এবং কর্মঠ। আজহার সাহেব পরদিন তাকে ডেকে পাঠালেন।

-কেমন আছ, মইনুদ্দিন?

-জ্বি স্যার, ভাল।

-আচ্ছা, তুমি হীরা দেখেছ কোনদিন?

-জি-না স্যার।

-হীরা চেনার উপায় কি বল তো?

-হীরা দিয়ে কাচের উপর দাগ কাটা যায়, স্যার। খুব শক্ত তো, এ জনেই।

-আরে, এটা তো সবাই জানে। তুমি এছাড়া আর কি জান?

-হীরার একটা বিশেষ স্পেসিফিক গ্র্যাভিটি আছে। ঠিক কত মনে পড়ছে না। বই দেখে বলতে পারি।

-বই দেখে বলার দরকার নেই। আর কিছু জান কি-না বল। আচ্ছা শোন, হীরা কি অন্ধকারে জ্বলে?

-জ্বি-না স্যার। কোন মনিমুক্তাই অন্ধকারে জ্বলে না। আলো পড়লেই ঝলমল করে উঠে। এতসব জিজ্ঞেস করছেন কেন, স্যার?

-ইচ্ছা হচ্ছে, তাই জিজ্ঞেস করছি। এতে কি তোমার কোন অসুবিধা হচ্ছে?

-জ্বি-না স্যার।

আজহার সাহেব খুবই বিমর্ষ হয়ে গেলেন। জিনিসটা কি কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কারো কাছে নিয়ে যেতে ভরসা হচ্ছে না। বাংলাদেশ হচ্ছে ঠকবাজদের জায়গা। কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।

এক সপ্তাহ হতে চলল। আজহার সাহের ক্রমে ক্রমেই বেশি পরিমাণে বিমর্ষ হতে শুরু করলেন। জিনিসটার উপর তার মায়া পড়ে গেছে। হাতছাড়া করতে খুব কষ্ট হবে। তিনি এখন রোজ রাতে জিনিসটা হাতে নিয়ে খেলা করেন। বালিশের নিচে রেখে ঘুমুতে যান। এটা হাতছাড়া করলে মনে হচ্ছে তিনি বাঁচবেন না। কিন্তু উপায় কি? ঐ লোক আসবে। তাকে দিয়ে দিতে হবে।

লোক আসল না।

দু’সপ্তাহ পার হল।

তিন সপ্তাহ গেল।

এক মাস গেল।

কারো কোন খোঁজ নেই।

দু’মাস পার হবার পর আজহার সাহেবের মত কৃপণ মানুষও পত্রিকায় টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিলেনঃ

সন্ধান প্রার্থী

জনৈক যুবক আমার নিকট একটি বস্তু বিক্রয় করিবার জন্য দিয়াছিলেন। এক সপ্তাহের ভিতর তাঁহার আসিবার কথা। তিনি আসেন নাই। অতি সতুর তাহাকে যোগাযোগ করিতে বলা হইতেছে।

বিজ্ঞাপন বের হবার পরেও দুমাস কেটে গেল। কারো কোন পাত্র নেই। আজহার সাহেব ঠিক করলেন জিনিসটা হীরা হোক বা কাচই হোক, তিনি রেখে দেবেন। দাম যা চাচ্ছে তাই দেবেন। উপায় কি!

এক বছর কেটে গেল। আজহার সাহেবের মনে হল লোকটা বোধহয় শেষ পর্যন্ত আসবে না। তিনি অন্যের একটা জিনিস রেখে দিতে পারেন না। কাজেই ঠিক করলেন ‘হীরা বিক্রির টাকায় ঐ লোক যা করতে চাচ্ছিল তাই করবেন। অনাথ আশ্রম, হাসপাতাল। যদিও এসব করার কোন মানে হয় না।

তিনি তার ম্যানেজারকে ডেকে পাঠালেন।

-কেমন আছ, মইনুদ্দিন?

-জি স্যার, ভাল।

-একটা বিশেষ কাজে তোমাকে ডাকলাম।

-স্যার, বলুন।

-একটা অনাথ আশ্রম করতে চাই।

-কি বললেন, স্যার!

-অনাথ আশ্রম। বেশ বড়। অনেক ছেলেপুলে যেখানে থাকবে। পড়াশোনা করবে।

মইনুদ্দিন এসে আজহার সাহেবের পা ছুঁয়ে সালাম করে ফেলল। আজহার সাহেব বিরক্ত হয়ে বললেন, এসব কি?

-আপনাকে খুব খারাপ মানুষ ভাবতাম, স্যার। আপনার ভেতরে যে এই জিনিস আছে তা স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি আপনার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করছি, স্যার আপনি একজন মহাপুরুষ।

-আজেবাজে কথা বন্ধ কর তো।

-জ্বি সচ্ছা, স্যার।

-কাজ শুরু করো।

-আজ থেকেই কাজ শুরু করব, স্যার। কি যে ভাল লাগছে আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারব না।

মইনুদ্দিন চোখ মুছতে লাগল।

আজহার সাহেব মহাবিরক্ত হয়ে বললেন, কাঁদছ কেন? এখানে কান্নার কি হল?

-আনন্দে কাদছি, স্যার। আমি আমার এই জীবনে এত আনন্দ পাইনি।

অনাথ আশ্রম তৈরি হল। আজহার সাহেব আবার মইনুদ্দিনকে ডেকে পাঠালেন।

-কেমন আছ, মইনুদ্দিন?

-জ্বি স্যার, ভাল।

একটা হাসপাতাল তৈরি করব বলে মনস্থ করেছি।

মইনুদ্দিনের চোখে আবার পানি এসে গেল। সে আবার পা ছুঁয়ে সালাম করতে এগিয়ে এল। আজহার সাহেব মহাবিরক্ত হলেন।

-কাঁদছ কেন, মইনুদ্দিন?”

-বড় আনন্দ হচ্ছে, স্যার আনন্দে কাদছি।

-এসব ফাজলামি আমার একেবারে পছন্দ না!

হাসপাতাল তৈরি হল গ্রামের দিকে। বহু টাকা চলে গেল। আজহার সাহেব প্রাণপণে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। আগে দু’বেলা খেতেন, এখন এক বেলা খান। ভাড়া বাড়ি থেকে তিনি উঠে গেছেন দু’কামরার ফ্ল্যাট বাড়িতে। তবে তাঁর ব্যবসা ভাল চলছে।

হাসপাতাল তৈরির পর তার কেমন যেন নেশা ধরে গেল। তিনি স্কুল বানালেন, রাস্তাঘাট বানালেন, দাতব্য চিকিৎসালয় করলেন।

দশ বছর পর এক বর্ষার রাতে দরজায় কলিংবেল বাজল। আজহার সাহেব দরজা খুললেন। চাদর গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকটি বলল, স্যার, আমাকে চিনতে পারছেন?

-হা, পারছি।

-আমি স্যার আমার জিনিসটা নিতে এসেছি।

-বুঝতে পারছি।

আপনার যদি পছন্দ হয় রেখে দিতে পারেন। জিনিসটার পুরো দাম আপনি দিয়েছেন। তবে আমাকে ফেরত দিলে আমি এটা আবার ব্যবহার করতে পারি। আপনার মত মানুষ তো আরো আছে।

-তা আছে। আপনি নিয়ে যান।

আজহার সাহেব কালো বাক্সটা ফেরত দিয়ে বললেন, আপনাকে ধন্যবাদ। এই জিনিসটার কারণে এখন মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার একটা অর্থ খুঁজে পাচ্ছি।

-আপনি আনন্দে আছেন তো স্যার?

-হ্যা, আনন্দে আছি। খুব আনন্দে আছি। তবে আমার আরো টাকা দরকার। প্রচুর টাকা- ঐ নিয়ে দুশ্চিন্তা। মাথার মধ্যে বিরাট একটা প্রজেক্ট আছে…. মেয়েদের জন্যে কিছু করা। এই সমাজে মেয়েরা…।

-যাই স্যার। ভাল থাকুন। তবে আপনার এই প্রজেক্টও হবে।

লোকটি অন্ধকারে মিশে গেল। আজহার সাহেব তার প্রজেক্ট নিয়ে চিন্তা করতে বসলেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *