বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত আলীর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

শওকত আলীর জীবনী

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক প্রথিতযশা শিক্ষক শওকত আলী বর্তমান দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ জন্মগ্রহণ করেন। শওকত আলী ছিলেন ডাক্তার পিতা খোরশেদ আলী সরকার ও  সালমা খাতুনের তৃতীয় সন্তান। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন প্রভৃতি বিষয়গুলো তুলে এনেছেন তাঁর রচনায়।

  • কথাসাহিত্যিক শওকত আলী জন্মগ্রহণ করেন – ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ সালে।
  • সাহিত্যিক শওকত আলীর শিক্ষা জীবন- রায়গঞ্জ করনেশন ইংলিশ হাই স্কুল এবং সুরন্দ্রনাথ কলেজ থেকে যথাক্রমে এস. এস. সি ও এইচ. এস. সি এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাতে এম.এ. সম্পন্ন করেন।
  • ব্যক্তি জীবনে শওকত আলী যে রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে সম্পক্ত ছিলেন – কমিউনিস্ট পার্টি।
  • তিনি যে পত্রিকায় লেখা-লেখির মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন – দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায়।
  • ১৯৫৯ সালে-তিনি ঠাকুরগাঁও কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন ।

শওকত আলীর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

  • তিনি সরকারি সঙ্গীত কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন -১৯৮৯ সালে।
  • তিনি জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষকতা করেন – (১৯৬২-৬৭) সাল পর্যন্ত।
  • শওকত আলীর ‘উন্মুল বাসনা’ নামক প্রথম প্রকাশিত ছোট গল্পটি প্রকাশিত হয় – ‘নতুন সাহিত্য’ নামক পত্রিকায় (১৯৬৮) সালে।
  • তাঁর বিরচিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসাবে বিবেচনা করা হয় – ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ উপন্যাসটিকে।
  • সেন রাজাদের রাজত্বকালে সামন্তগণ বাংলা মানুষের উপর যে শোষণ, অত্যাচার করেছিল এবং তুর্কি আক্রমণের ফলে বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিব জীবন ধারায় যে পরিবর্তন ঘটে তাঁর বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে – ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ উপন্যাসের মাধ্যমে।
  • তাঁর রচিত ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় – ১৯৮৫ সালে।
  • তাঁর রচিত ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ যে শ্রেণির রচনা – ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস (সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত)।
  • “এই কি মানুষের জীবন? এর শেষ কোথায়? এই জীবন কি যাপন করা যায়?” কথাগুলো শওকত আলীর যে উপন্যাসে বিবৃত হয়েছে – ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ উপন্যাসে।
  • ষাটের দশকে মানুষের মধ্যে চিন্তাভাবনায় যে আমূল পরিবর্তন ‍শুরু হয়েছিল তারই ভাবধারায় রচিত- শওকত আলীর ‘দক্ষিণায়নের দিন’ উপন্যাসটি।

Shawkat Ali-শওকত আলীর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

  • ‘দক্ষিণায়নের দিন’ উপন্যাটি প্রকাশিত হয় – ১৯৮৫ সালে।
  • তাঁর রচিত ‘দক্ষিণায়নের দিন’ উপন্যাসটি যে পত্রিকায় প্রকাশিত হয় – সাপ্তাহিক বিচিত্রা নামক পত্রিকায় ১৯৮৫ সালে।
  • মানুষের চিন্তা-চেতনায়, সর্বপরি সামাজিক জীবনব্যবস্থায় পরিবর্তের যে সুর বেজে উঠেছে তার চিত্রয়ণ ঘটেছে – শওকত আলী ‘কুলায় কালস্রোত’ উপন্যাসে।
  • তাঁর রচিত ‘কুলায় কালস্রোত’ উপন্যাটি প্রকাশিত হয় – ১৯৮৬ সালে।
  • সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, মানুষের চাল-চলনে পরিবর্তনের হাওয়া শুরু হওয়ার বিষয়াবলি ফুটে উঠেছে – শওকত আলীর ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’ উপন্যাসে।
  • প্রখ্যাত উপন্যাসিক শওকত আলীর যে উপন্যাসগুলোকে একতে ত্রয়ী উপন্যাস বলা হয়- দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত ও পূর্বরাত্রি পূর্বদিন উপন্যাস তিনটিকে।
  • এয়ী এই উপন্যাসগুলির জন্য শওকত আলী যে সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন – ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬) সালে।
  • ভবিষ্যৎ বর্তমান হয়, বর্তমান অতীত এ যেমন সত্য, তেমনি এও সত্য যে, অতীত থেকে বর্তমান হযে ভবিষ্যতের দিকে যেতে হয় – জীবন যাপনের এই আত্ন আবিস্কারের কাহিণী নিয়ে রচিত- শওকত আলীর ‘ওয়ারিশ’ উপন্যাসটি।
  • গদ্যশৈলীর অনবদ্য সৃষ্টি শওকত আলীর ‘ওয়ারিশ’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়- ১৯৮৯ সালে।

শওকত আলীর জীবনী

  • তাঁর রচিত ‘যাত্রা’ যে শ্রেণির রচনা – মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস।
  • মুক্তিযুদ্ধের জীবন কাহিণী নিয়ে রচিত ‘যাত্রা’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় -১৯৭৬ সালে।
  • ‘হায়দার ও মরিয়ম’ শওকত আলীর যে উপন্যাসের নায়ক নায়িকা – ‘উত্তরের খেপ’ উপন্যাসের।
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক শওকত আলীর যে উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে – ‘উত্তরের ‍খেপ’ (পরিচালক – শাহজাহান চৌধুরী)।
  • ‘উত্তরের খেপ’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় – ১৯৯১ সালে (চলচ্চিত্রয়িত হয়- ২০০০ সালে)।

Shawkat Ali-শওকত আলীর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

  • তাঁর রচিত অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য – অপেক্ষা (১৯৮৪), সম্বল (১৯৮৬), ভালোবাসা কারে কয় (১৯৮৮), বাসার ও মধুচন্দ্রিমা (১৯৯০), জননী ও জাতিকা (২০০১), স্ববাসে প্রবাসে (২০০১), শেয় বিকেলের রোদ (২০০১), মাদার ডাঙার কথা(২০১১), ত্রিপদী (২০০১), ছবির ওপরে ছাপ (২০০২) প্রভৃতি।
  • লেলিহান সাধ, শুনহে লখিন্দর, দিন গুজরান তাঁর যে শ্রেণীর রচনা – ছোট গল্প।
  • তিন বন্ধু ও প্রচীন রাজবাড়ী, নীল পাহাড়ের গান শিশু সাহিত্যমূলক রচনাগুলোর লেখক – শওকত আলী।
  • বাংলা সাহিত্যে অবদান স্বরূপ তিনি যে পুরস্কার লাভ করেন – বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮), একুশে পদক (১৯৯০), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯) প্রভৃতি।
  • বাংলা সাহিত্যের এই কথাসাহিত্যিক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন – ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি।

Read More

শওকত ওসমান এর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *