-গুড ইভিনিং স্যার। আমি অভিষেক রাওয়াত, আপনাকে গত কাল ফোন করেছিলাম।
কথাগুলো শুনে জবাব দেওয়ার আগে তন্ময় ঘড়িটার দিকে একবার তাকিয়ে উত্তর দিল,‘এখন আর ইভিনিং আছে?’
-স্যার আপনি যতক্ষণ না শুতে যাচ্ছেন ততক্ষণ রাত্রি নয়। এইসময় জেগে আছেন মানেই সন্ধ্যা।
-বেশ ভালো বললেন তো।
-থ্যাঁঙ্ক ইউ স্যার।
-আপনি কাল বিকেলের দিকে ফোন করেছিলেন তো?
-ইয়েস স্যার, সাড়ে পাঁচটার সময়।
-বলুন কি বলছিলেন ?
-স্যার আমি কি ভিতরে আসতে পারি?
-ও সিয়(র), প্লিস ডু কাম।
শেষের কথাগুলো বলবার পরেই অভিষেক জুতোজোড়াটা দরজার বাইরে রেখে ভিতরে এসে সোফাতে বসল। তন্ময় দরজাটা বন্ধ করে বসল উল্টোদিকের চেয়ারে। ছেলেটা ঘরের চারদিকটা দেখে তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বলল,‘স্যার, আর ইউ রেডি টু হিয়ার?’
-নিশ্চয় নিশ্চয়, বলুন আপনি।
-থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। আমি স্যার এস.এস.এ. কম্পানি থেকে এসেছি। সুপার সাপ্লিমেন্ট ফর অল।
কথার মাঝে অভিষেকের ফোনটা বেজে উঠতেই ‘ও এক্সকিউস মি।’ বলে সোফা ছেড়ে দরজার কাছে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করল। অভিষেক ফোনে ব্যস্ত হয়ে গেলে তন্ময় চেয়ারে বসে মোবাইল বের করে মেল চেক করতে আরম্ভ করল।
তন্ময় সেন একটা বিদেশি কম্পানির সিনিয়র ম্যানেজার। এই সিনিয়ারিটি তার বয়সে নয়, এখন সাঁইত্রিশ প্লাস। তবে দেখলে আটচল্লিশ মনে হয়। সামনের দিকে কোল বালিশের মত পেট আর পিছনটা বাইকের একটা সিট। অফিসের কর্মচারীরা বিশেষ করে মহিলা কর্মচারীরা আড়ালে মটু, ভদকা, কুমড়ো বলে ডাকে। পার্সোনাল আসিসটেন্ট তনয়া, সিলিণ্ডার বলে। কয়েকদিন আগেই বাসে তন্ময়ের কাছ থেকে ডবল ভাড়া চাওয়ার জন্য রীতিমত যুদ্ধ বেঁধে যায়। মাথার সামনের দিকের কয়েকটা চুল একদিকে যেমন নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, তেমনি পিছনের দিকটাতে দিব্যি আলো প্রতিবিম্বিত হয়। তবে এই সব নিয়ে তন্ময় বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। ঘরে একটা ট্রেডমিল ইতিমধ্যে কিনে ফেলেছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে পারলেই কেল্লাফতে, আরম্ভ করে দেবে। তন্ময়ের সমস্যা হল ঘুম এবং তার থেকে ওঠা। শনিবার ছাড়া এমনি দিনে শুতে শুতেই রাত্রি একটা, তারপর আবার পাঁচটাতে ওঠা,বাপরে বাপ্ হরিবেল। মাঝে মাঝে আবার রাতে ফোন চলে আসে। অফিসের কড়া হুকুম,‘ফোন কিন্তু চব্বিশ ঘন্টাই চালু রাখতে হবে। ফোনের কিছু হলে নতুন ফোন দেওয়া হবে, কিন্তু ফোন বন্ধ রাখলে তার জন্য কম্পানির কোন ক্ষতি হলে তার দায় পুরোটাই আপনার।’
কয়েকটা দিন অবশ্য রত্না জোর করে ছটার সময় ঘুম থেকে তুলে হাঁটতে পাঠিয়ে ছিল, সেখানেও এক সমস্যা। পার্কের বেঞ্চেই দুদিন ঘুমিয়ে গেছিল। রত্না নিজে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসে। তারপরের দিন চোখ কান মুলে বলে,‘এই আজকেই শেষ আর কোনদিন ডাকব না, তাতে তোমার যা হয় হোক। আমার পর্যন্ত লজ্জাতে নাক কেটে গেল।’
তন্ময় সব শোনে, বোঝেও, কিন্তু করবার কিছু নেই। রাত্রি একটাতে শুয়ে কেউ সকাল ছটাতে উঠতে পারেনা। ফ্যামিলি ডাক্তার সব কথা শুনে একটা নিদান দেন, ‘রাতে ভালো ভাবে না ঘুমিয়ে ভোরের দিকে হাঁটতে গেলে কাজের কাজ কিছুই হবে না, বরং সুগার বেড়ে যাবে। তার থেকে অফিসের জিমে কিছু সময় কাটাও, না হলে লিফ্ট ছেড়ে সিঁডি ব্যবহার কর।’
-ন’তলা প্রতিদিন সিঁড়ি ভেঙে উঠবো? ফুসফুস বাইরে বেরিয়ে চলে আসবে।
-তাহলে উপায় ? রত্না জিজ্ঞেস করে।
– নেই, যেমন চলছে, তেমনি চলবে।
তন্ময়েরও সব কিছু যেমন চলছিল তেমনি চলতও, কিন্তু বাধ সাধল রত্নার মা। এক রবিবারের সন্ধ্যা বেলায় সটান হাজির। চায়ে চুমুক দিয়েই রত্না ও শ্বশুরের সামনেই জামাইকে বলে বসলেন,‘তুমি এত ওয়ার্ক লোড নিওনা, তাছাড়া খুব ওবেস হয়ে যাচ্ছ, টেক কেয়ার, শরীর নষ্ট হয়ে যাবে, সেক্স কমে যাবে।’
শাশুড়ি বলে কি! এমনিতেই বিয়ের চারবছর পরেও ঘরে তৃতীয় জনের আগমন না হওয়াতে মনের মধ্যে মেঘ বেশ ভালোই জমে উঠেছিল। অবশ্য তন্ময় অফিসের ছুটি নিয়ে রত্নাকে ডাক্তার দেখিয়ে এনেছে। কিছু টেস্টও হয়েছে, মোটামুটি নর্মাল, তাহলে!
শেষবার ডাক্তার দেখানোর সময় উনি বলেও দিলেন, ‘মিস্টার সেন ইউর ওয়াইফ ইস কোয়াইট নর্মাল, সি ডাসনট হ্যাভ এনি প্রবলেম। নাও ইউ হ্যাভ টু গো থ্রু সাম মেডিক্যাল টেস্টস।’
-মেডিক্যাল টেস্টস!
-ইয়েস স্যার। ভেরি নর্মাল। সুগার, থাইরয়েড, মোস্ট ইম্পমর্টেন্ট সিমেন টেস্ট।
-ও সিট।
বাড়ি ফিরে সেদিন একটা হৈচৈ হল। তন্ময় রত্নার উপর রেগে কয়েকটা দিন কথা বলাও বন্ধ করে দিল। কয়েকদিন পরে রত্না কথা বলা আরম্ভ করলে তন্ময় বলে ওঠে ‘তুমি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও।’
-আবার একথা হচ্ছে কেন?
-না সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্ট পাবে।
-বাজে বোকো না। আমি তো কোন কিছুতে পিছিয়ে আসিনি। ইউ.এস.জি. গুচ্ছের ব্লাড টেস্ট।
-তোমার ব্যাপারটা আলাদা।
-কেন?
-তুমি বুঝবে না।
-তুমি বলেই দেখ না।
-জানো, আগেকার দিনে যে’সব ছেলের পেচ্ছাপে ফেনা হত না, বা বীর্জে শুক্রানু থাকত না তাদের পুরুষ বলা হত না।
-তো………….!
-ধর আমারও যদি স্পার্ম না থাকে ?
– না থাকবে। কিন্তু তার আগে তো তোমাকে টেস্ট করাতে হবে।
তিন চার দিন পরেই অফিস থেকে ফিরে হাসি হাসি মুখ করে তন্ময় বলে,‘ডাক্তারের সাথে কথা বলে এলাম। ওয়েট কমালেই সব কিছু নর্মাল হয়ে যাবে।’
-তুমি ওয়েটটা কমাবে কি করে, এটা কি মুদিখানার মাল, যে ওজন বেশি হলেই কমিয়ে দেবে। হাত, পা, মাথা ছাড়া ওজন করবে ?
-না, না তা কেন, ওজন কমানোর জন্যে যা যা করতে হয় করব।হাঁটা, চলা ব্যায়াম, ডায়েট কন্ট্রোল সব।
-তবেই হয়েছে আর কি। তাছাড়া তুমি তো টেস্ট করাতেই গেলে না।
-ঠাট্টা করছ, পারব না বলছ ?
-নিশ্চয় পারবে। এই চার বছর যে’ভাবে পেরেছ, সে ভাবেই পারবে।
শেষের কথাগুলো তন্ময়ের মনে চড়াম চড়াম করে লাগল। তারপরের দিন খুব ভোরে উঠেই হাঁটতে চলে গেছিল। তবে মাত্র চারদিন। পাঁচদিনের দিন রত্নাকে বলে,‘আমাকে সাড়ে পাঁচটার সময় ঘুম থেকে ডেকে দেবে তো।’ রত্না প্রথম কয়েকদিন ডেকে দিলেও তৃতীয় দিন থেকে সেই একই সমস্যা। ডান দিকে ডাকলে তন্ময় বাঁ দিক ফিরে শুয়ে পড়ে আর বাঁদিকে ডাকলে ডানদিক ফেরে। শেষে রত্না ডাকা বন্ধ করে দেয়। তবে প্রতিরাতে শোওয়ার সময় তন্ময় ভোরে হাঁটবার কথা বলে, ব্যায়ামের কথা বলে। এটা অবশ্য রাতের কথা, ভোরবেলা ঘুম দুটো চোখ ছাড়তে চায় না। তন্ময়ের তাতে কি দোষ ?
-সরি স্যার, আপনাকে অপেক্ষা করতে হল।
-না, না, ঠিক আছে। আপনার ফোন এলে আপনি আর কি করবেন।
-তাহলে স্যার যা বলছিলাম। আমি এসেছিলাম এস.এস.এ কম্পানি মিনস্ সুপার সাপ্লিমেন্ট ফর অল। আজকের এই হেসেল ফুল লাইফে আমরা না পাই গুড ফুড, না গুড কনডিসন ফর লিভিং। ইভেন আপনি যখন ভালো ফুড, হেলদি ফুড নিতে যাবেন, দেখবেন হয় সেটাতে ভেজাল বা কেমিক্যাল। এই জায়গা থেকেই আমাদের কম্পানি একটা অদ্ভুত রকমের ফুড-সাপ্লিমেন্ট নিয়ে এসেছে। ইট ইস ভেরি গুড ফর ইয়র ফ্যামিলি। আপনি যদি বলেন আমি এলাবরেটলি ডেসক্রাইব করব।
-নিশ্চয় নিশ্চয়।
-তার আগে স্যার আপনার লাইফস্টাইলটা যদি বলেন, মানে কখন ঘুম থেকে ওঠেন, ব্রেকফাস্ট, এই সব। সেই অনুযাযী আমরা আপনার জন্য সাপ্লিমেন্টের ডোস ঠিক করব।
-ঘুম থেকে ওঠার টাইমটা ঠিক ফিকস্ড নয়। সেটা নির্ভর করে আগের রাতে কখন শুতে যাচ্ছি এবং পরেরদিন ঠিক কি কি কাজ থাকছে তার উপর।
-তারমানে আপনি কতক্ষণ ঘুমাবেন সেটা ঠিক করবে আপনার কম্পানি, তাই তো ?
-হ্যাঁ…..। আপনি বলতে পারেন।
-ওকে ফাইন।
-তারপর..?
-তারপর মানে টার্গেট কিছু না থাকলে সকালে চা, ব্রেকফাস্ট খেয়ে অফিস।
-কটার সময় ?
-বিফোর নাইন, বায়োমেট্রিক তো।
-লাঞ্চ?
-ঠিক নেই, তাও একটা থেকে চারটের মধ্যে। মাঝে কফি স্ন্যাকস্ বা টুকটাক চলে।
– ইভিনিংয়ে ?
-একই, কিছু আনিয়ে নেওয়া হয়।
-ডিনার ?
-আফটার টুয়েলভ।
-সরি টু আক্স, ডু ইউ স্মোক?
-ইয়া বাট নট ইন দ্য হোম। অফিসে কাজের খুব প্রেসার থাকলে একটু বাড়ে।
-ড্রিকন্স ?
-ওয়ান্স ইন আ উইক। মোস্টলি অন স্যাটারডে।
-স্যার আপনার ফ্যামিলি মেম্বারস ?
-মি এবং মাই ওয়াইফ। আমাদের এখনো কোন ইস্যু হয়নি। শেষের কথাগুলো বলে মাথাটা নিচু করে দিল।
-সরি স্যার।কিন্তু আপনি যা বললেন তা এখন নাইনটি ফাইভ পার্সেন্ট মানুষের ডেলি রুটিন। ফুল ওয়ার্ক, নো টাইম ফর রেস্ট অর রেসপাইট। আমাদের কম্পানি আপনাদের জন্যেই এই প্রোডাক্টটা এনেছে, অনলি পর ইউ। আমাদের একই প্রোডাক্ট মাল্টিডাইমেনসনাল। সকালে খালি পেটে গরম দুধের সাথে মাত্র দু’চা চামচ গুলে খেয়ে নিলেন, তারপর মুখ ধুলেন। ফাইভ মিনিটসের মধ্যে আপনার সিস্টেম ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তারপর চা বিস্কুট খেলেন, আবার গরম দুধে চার চা চামচ দিয়ে খেয়ে নিলেন, আপনাকে আর ব্রেকফাস্ট করতে হবে না। লাঞ্চের সময় আপনি চা বা কফিতে গুলে ছয় চামচ, সন্ধে বেলা আবার দুই, রাতে চার চা চামচ। ঠিক নিডেড ক্যালোরি পেয়ে যাবেন।
তন্ময়ের চোখমুখটা জ্বলজ্বল করে উঠল। কথাগুলো শুনতে শুনতে একটা ঘোর এসে গেছিল। কথা বন্ধ হলেও ঘোরটা আরো কিছু সময়ের জন্যে থাকল। তারপরে বলে উঠল,‘তারমানে আমাকে কিছু খাবার খেতে হবে না।’
-এইখানেই একটা ম্যাজিক আছে। ধরুন আপনি এই সাপ্লিমেন্টটি খাওয়ার আধ ঘন্টার মধ্যে কিছু খেয়ে নিলেন, মানে কোন সলিড ফুড, এই সাপ্লিমেন্টটা তখন হেল্থ ড্রিঙ্কসের মত কাজ করবে। যেমন কমপ্ল্যান হরলিক্স এইসব।এনার্জি বুস্টার। আধঘন্টার মধ্যে কিছু না খেলে এটাই তখন সলিড ফুডের মত কাজ করবে। সব থেকে বড় কথা হল এটা ফ্যাট রিডিউসার।
-বাঃ, বিরাট ব্যাপার তো।
-আরো আছে।
অভিষেক তন্ময়ের দিকে ঘাডটা নামিয়ে ফিস ফিস করে বলে উঠল,‘এটা সেক্স স্টিমুলেটার। এমনকি লো’স্পার্ম বা নো’স্পার্মের কোন সমস্যা থাকলে এটা দারুন হেল্প-ফুল। আমি রেফারেন্স নম্বর পর্যন্ত দিয়ে দেব।’
তন্ময় কিছুসময় কোন কথা বলতে পারল না। কিছুসময় পরে অভিষেকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,‘আপনার কাছে স্যাম্পেল আছে? ’
-নিশ্চয়, দিচ্ছি।
একটা প্রশ্ন আছে।
-করুন, একটা কেন হাজারটা করুন।
-এটার কোনো সাইড এফেক্ট নেই তো ?
-আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন স্যার। আমরা সেই সব অর্গানাইজেসনের মত বলব না একশ শতাংশ ভারতীয়, পদ্ম পাতার কন্ডোমের মত।
-মানে ?
-এটা স্যার এক্সপ্লেন করতে বলবেন না। বিজনেস এথিক্স ক্ল্যাস করবে। তবে আমাদের প্রোডাক্ট ইন্ডিয়ান ও ওয়েস্টার্ন গাছগাছড়া থেকেই তৈরী। কোন কেমিক্যাল নেই আমি নিজে ব্যবহার করেছি।
তন্ময়ের শরীর তখন ছুটছে। ‘তাহলে আর কোন সমস্যা থাকবে না। অফিসে আর কোন টিটকারি হজম করতে হবে না, নো তনয়া কেশ নো তানপুরা। রত্নার সাথেও সমস্যা মিটে যাবে। রত্না মা হবে, আমি বাবা? বাঃ বেশ বেশ।’
কিছুসময় চুপ থেকে অভিষেকের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,‘তাহলে আমি দুধ গরম করতে বলি, স্যাম্পল তো খেতে হবে, কি বলেন ?’
-নিশ্চয়। এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে আসুন। আমি দু’চামচ গুলে দিচ্ছি, খেয়ে এফেক্টটা বুঝুন।
কথাটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তন্ময় জোরে জোরে, ‘রত্না রত্না’ বলে ডাকতে আরম্ভ করল। কিছুসময়ের মধ্যেই রত্না খুব রেগে এসে জিজ্ঞেস করল,‘কি হল এত চেল্লাচ্ছ কেন?’
-এক’কাপ গরম দুধ দাও তো। এখন গরম দুধ নিয়ে কি করবে ?
-আরে ঐ যে ছেলেটা এসেছে না, অভিষেক, ওর থেকে একটা স্যাম্পেল খাবো।
-কিসের স্যাম্পেল, কে দেবে ? মাথাটা গেছে নাকি বয়সের সাথে ভিমরতি হচ্ছে ?
-একথা বলছ কেন ? আমি তো শুধু গরম দুধ দিতে বলেছি।
-ওঠো, সাড়ে নটা বাজছে, ডাক্তারের কাছে দশটার সময় নাম লেখানো রয়েছে।
-কিসের নাম ?
-ডাক্তারের।
-কেন ?
-কেন তুমি জানো না ?
-আমি তো সাপ্লিমেন্ট কিনছি, এই তো অভিষেক, জিজ্ঞেস কর ওকে। এই তো ছেলেটা।
তন্ময় ডান বাঁ দিক দেখে অভিষেককে খোঁজার চেষ্টা করল। কাউকে দেখতে না পেয়ে বলে উঠল,‘ছেলেটা কই ? এই তো সোফাতে বসে ছিল।’
-কোন ছেলে ? কেউ তো আসে নি, তুমি তো এতক্ষণ নাক ডেকে ঘুমালে।
-ঘুমালাম!তাহলে অভিষেক, সাপ্লিমেন্ট?
********************************************************************************