তোমাদের এই নগরে পর্ব:০৩ হুমায়ূন আহমেদ

তোমাদের এই নগরে পর্ব:০৩

আপনি বরঞ্চ চলে যান। ইহাই হবে উভয় পক্ষের জন্যে কল্যাণকর। আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম, খালা সরবত খেতে বললেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এক্ষুনি মরজিনাকে ডেকে সরবতের কথা বলবেন। আমি তার জন্যে অপেক্ষা করছি।সরবত খেতে বলবেন কেন?

এটাই উনার নিয়ম। অনেকক্ষণ রাগারগি করে তারপর স্বাভাবিক হয়ে যান। ভালো কথা তুমি কে? আমি আপনার খালার দূর সম্পর্কের নিস। আমার নাম আশা।তুমি কি দেশের বাইরে থাক? জি। আমি নিউজার্সিতে থাকি। এবার হাইস্কুল পাস করেছি। ইউনিৰ্ভাসিটিতে ঢুকবো। ইউসিএল এ সুযোগ পেয়েছি।প্ৰথম বাংলাদেশে এসেছ?

খুব ছোটবেলায় একবার এসেছিলাম। কিছু মনে নেই। আপনি কথা বলে সময়ের অপচয় না করে অতি দ্রুত নিষ্কৃতি হয়ে যান। আমার ভয় লাগছে! অতি দ্রুত নিষ্কৃতি হয়ে যাবার কোনোই দরকার নেই। দেখবে এক্ষুনি সব ঠিক হয়ে যাবে।কথা শেষ হবার আগেই খালা বের হলেন। তার মাথা ভেজা। অর্থাৎ মাথায় পানি দেওয়া হয়েছে। মাথায় পানি দেওয়ায় তেমন লাভ হয়েছে বলে। মনে হল না। মুখ থম থম করছে। চোখ লাল। খালা আগের মতোই হুঙ্কার দিয়ে বললেন— তোকে খুব কম করে হলেও দশবার বলেছি।

সকাল আটটার আগে আসিবি। আমার খুব জরুরি দরকার। যেহেতু সকাল আটটায় আসতে বলেছি–তুই ইচ্ছা করে এলি সাড়ে এগারোটায়। আর কিছু না একটা ভাব দেখালি। যদি বলতাম দুপুরে আসিস তা হলে আসতি সকাল সাতটায়। ভাব না ধরলে আলাদা হওয়া যায় না। প্রমাণ করতে হবে না— আলাদা। আমাদের বিখ্যাত হিমু সাহেব। ঢাকার রাজপথ পর্যটক। রামছাগলের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাথা নাড়িস না। তুই ল্যাম্পপোস্ট না যে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। বোস। সরবত খাবি?

না।তা কেন খাবি? শরীরের উপকার হয় এমন কিছু খেলে তুই যে আলাদা একটা প্রমাণ হবে কেন? শরীর পুরোপুরি নষ্ট হয় এমন কিছু খা। গাজটাজা খা। গাজা ধরেছিস না? এখনো ধরি নি।দেরি করছিস কোন ধরে ফেল; আর ধরার দরকার ও নেই। গাজাখোরদের আশপাশেই তো থাকিস। ওতেই ভোজন হয়ে যায়।খালা আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আশার দিকে তাকিয়ে বললেন— হিমুকে বেশি করে লেবু দিয়ে একগ্লাস লেবুর সরবত বানিয়ে দে। রোদে রোদে ঘুরে, ওর ভিটামিন সি খুবই দরকার }

আশা বিস্মিত চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছে। তার ঠোঁটের কোণায় চাপা। হাসির আভাস। তাকে দেখে মনে হচ্ছে প্ৰচণ্ড ভয়ে সে অস্থির হয়েছিল। হঠাৎ সব ভয় কেটে গেছে। অন্ধকার ঘরে ঢুকে পড়েছে ঝলমলে সূর্যের আলো।আমি বেতের সোফায় বসেছি। খালা বসেছেন। আমার সামনে। টাওয়েল দিয়ে মাথার ভেজা চুল শুষছেন। তার চোেখ মুখ স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তিনি বললেন–আসতে দেরি করলি কেন?

রাতে ঘুম ভালো হয় নি। ঘরে চোর ঢুকে পড়েছিল। চোরের সঙ্গে গল্পগুজব করতে গিয়ে দেরি হয়ে গেল।চোরের সঙ্গে গল্পগুজব করতে দেরি হল? হ্যাঁ।ওকে চা বিসকিট খাওয়ালি।চা খাওয়াই নি বিসকিট খাইয়েছি।উদ্ভট অজুহাত আমাকে দিবি না হিমু। অসহ্য।আচ্ছা যাও দেব না।আটটার সময় তোর আসার কথা। তুই আসছিস না। আশা হয়ে গেল অস্থির। বাঙালি মেয়ে হলেও সারাজীবন মানুষ হয়েছে বিদেশে। ঘড়ির কাঁটা ধরে চলা হল এদের অভ্যাস।আমার আসার সঙ্গে এই বিদেশিনীর অস্থির হবার সম্পর্কটা কী?

সম্পর্ক আছে। এই মেয়ে এক মাসের জন্যে বাংলাদেশে এসেছে। এই একমাস সে বাংলাদেশে ঘুরবে। ছবিটবি তুলবে তারপর ফিরে গিয়ে বই লিখবে। বই এর নামও ঠিক হয়ে আছে Discovering Bangla! তায় বই লেখার দরকার কী? তার বই লেখার দরকার কী সেটা সে জানে। আমি সেটা তাকে জিজ্ঞেস করি নি। বেচারি শখ করে এসেছে শখটা মিটলেই হল।আমাকে কী করতে হবে? তাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশ দেখাতে হবে? হ্যাঁ। তাতে কোনো অসুবিধা আছে?

না অসুবিধা কী? আমি নিজেও বাংলাদেশ দেখি নি। তার সঙ্গে থেকে থেকে আমিও যদি বাংলাদেশ দেখে ফেলি তা হলেতো ভালোই। এক ঢিলে দুই পাখি। One stone two birds. তোর এই কথার মানে কী? তুই বাংলাদেশ দেখিস নি?

না।

না মানে?

যে পোকা আমের ভেতর জন্মে সে কী করে বুঝবে আম কী? আমি তো বাংলাদেশেই ঘোরাফিরা করছি। বুঝব কী করে বাংলাদেশ কী? খালা কঠিন কোনো কথা বলতে যাচ্ছিলেন। বলতে পারলেন না। তার আগেই আশা লেবুর সরবত নিয়ে উপস্থিত হল। খালা বললেন– আশা এই ছেলের নাম হিমালয়। ডাক নাম হিমু। তুমি যা যা দেখতে চাও এ দেখাবে। তার সঙ্গে তুমি নিশ্চিত মনে ঘুরতে পোর। কোনো সমস্যা নেই।আশা আমার দিকে তাকিয়ে বলল— ধন্যবাদ।

ধন্যবাদটা তেমন জোরালো হল না। মনে হল সে ঠিক ভরসা পাচ্ছে না।আমি বললাম, চল বের হয়ে পড়ি। সময় নষ্ট করে লাভ নেই।আশা খালার দিকে তাকিয়ে বলল, উনার সঙ্গে পেমেন্টের ব্যাপারটা শুরুতেই ঠিক করে ফেলা উচিত না? উনি তাঁর সার্ভিসের জন্যে কত চার্জ করবেন এবং মুড অব পেমেন্ট কেমন হবে সেটা জানলে ভালো হত।খালা বিরক্ত হয়ে বললেন, পেমেন্ট আবার কী? ও তোকে নিয়ে ঘুরবে—যেখানে যেখানে যেতে বলবি নিয়ে যাবে এর আবার পেমেন্ট কী?

শুধু শুধু উনার সার্ভিস নেব?

অবশ্যই নিবি।

উনি তার কাজকর্ম ফেলে আমার সঙ্গে ঘুরবেন?

ওর আবার কাজকর্ম আছে নাকি? ওর কাজই হচ্ছে ঘোরা।আশা বলল, আমি একটা বাজেট করে রেখেছি প্রতিদিন একশ ইউএস ডলার।খালার মুখ আবারো রাগি রাগি হয়ে গেল। তিনি মাথা বাঁকিয়ে বললেন— এটা আমেরিকা না। এটা বাংলাদেশ। আর হিমু জীবনে কোনোদিন এক শ ডলার চোখে দেখেছে কিনা সন্দেহ। রিকশা করে বের হলে রিকশা ভাড়া দিবি। ট্যাক্সি করে বের হলে দিবি ট্যাক্সি ভাড়া। ব্যাস ফুরিয়ে গেল।

আশা কিছু বলল না। চুপ করে গেল। তবে মনে হল খালার কথাটা তার ঠিক মনে ধরে নি। সে এক শ ডলারের ব্যাপারটা ফয়সালা না করে বের হবে না। আমি আশার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম— তুমি কি ডেইলি পেমেন্ট করবে? না মাসের শেষে একসঙ্গে করবে?

আপনার জন্যে যেটা ভালো হয় সেটাই করব।দুপুরে লাঞ্চ, তারপর ধর সন্ধ্যায় চা বিসকিট এই সব খরচ কিন্তু তোমার।অবশ্যই। আমি দশটা-পাঁচটা ডিউটি করব। এরচে বেশি হলে ওভারটাইম দেবে।অবশ্যই। ওভারটাইম কত হবে সেটা কি আমরা ঠিক করে নেব? ঘণ্টা হিসেবে ওভারটাইম হোক। প্ৰতি ঘণ্টীয় দশ ডলার কি তোমার কাছে খুব বেশি মনে হচ্ছে?

না বেশি মনে হচ্ছে না।খালা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছেন। মনে হচ্ছে আমার কথাবার্তায় তিনি এতই অবাক হয়েছেন যে নিজে কথা বলতে ভুলে গেছেন। তাকে দেখাচ্ছে মাছের মতো। চোখে পলক পড়ছে না। আমি আশার দিকে তাকিয়ে সহজ ভঙ্গিতে বললাম, আজ ফেহেতু প্রথম দিন— তা ছাড়া এসেছিও দেরি করে আজ ফ্রি। আজকের জন্যে কোনো চার্জ দিতে হবে না।

আশা বলল, ধন্যবাদ।এবারের ধন্যবাদটা জোরালো। আগের মতো অস্পষ্ট না। খালা এখনো একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। তিনি মনে মনে কি ভাবছেন কে জানে।আশা বলল, আমি কি তা হলে তৈরি হয়ে আসবো? আমি বললাম, অবশ্যই।সঙ্গে কী কী জিনিস নেব?

নোট করার জন্যে খাতা কলম, ছবি তোলার জন্যে ক্যামেরা। তাৎক্ষণিকভাবে কথাবার্তা রেকর্ড করার জন্যে ক্যাসেট রেকর্ডার। ছাতা। পানির বোতল। বাসার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্যে একটা মোবাইল টেলিফোন। ফাস্ট এইড বক্স কি আছে? একটা ফাস্ট এইড বক্স থাকা দরকার। সুইস নাইফ থাকলে ভালো হয়; নাইলনের দড়ি অবশ্যই নিতে হবে। পৃথিবীতে দড়ির সবচে বেশি ব্যবহার হয় বাংলাদেশে।

দেশলাই, মোমবাতি, টর্চ লাইটও নেবে কখন কোনটা কাজে লাগে। কে জানে। ও আর একটা ফ্লাস্ক। ফ্লাস্ক ভর্তি গরম চা।আশা বলল, আমি দশ মিনিটের মধ্যে সব গুছিয়ে নিয়ে আসছি।আশা ঘর থেকে বের হবার পর খালা মনে হয় তার কথা বলায় ক্ষমতা ফিরে পেলেন। আমার দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বললেন– তুই কী শুরু করেছিস। সত্যি সত্যি তুই টাকা নিবি?

আমি বললাম, হ্যাঁ।

পারিবি টাকা নিতে?

অবশ্যই পারব।

অতি সহজ। সাধারণ একটা মেয়ে, তুই তো এই মেয়ের মাথা পুরা আউলায়ে দিবি। দরকার নেই। আশাকে আমি তোর সঙ্গে ছাড়ব না। দরকার হলে আমি ওকে বাংলাদেশ দেখাব।তাহলে আমি বিদেয় হই।খালা দুঃখিত গলায় বললেন–বিদেয় হতে চাইলে বিদেয় হ। শুধু এই মেয়েটা যে কত ভালো এটা শুনে যা। সারাজীবন Aপ্রাস পাওয়া স্টুডেন্ট।

Aপ্রাস পাওয়া স্টুডেন্ট যে কী জিনিস এটা তুই কোনোদিনও বুঝবি না। বোঝার দরকারও নেই। মেয়েটার এক বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। মেয়ের মা এক আমেরিকানকে বিয়ে করেন। এখন শুনতে পাচ্ছি। সেই বিয়েও ভেঙে গেছে কিংবা যাচ্ছে।মহিলা কি তৃতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?

হু।বল কী এমন ওস্তাদ মহিলাষ্ট্র গর্ভে এমন সাদামাটা সন্তান।সাদামাটা সন্তান মানে? কী বললা এতক্ষণ এ প্লাস স্টুডেন্ট।ঐ আর কী ওস্তাদ মহিলার গর্ভে পড়ুয়া সন্তান।শুধু পড়ুয়া না, আশা ছবি আঁকতে পারে, গান গাইতে পারে, ফটোগ্রাফিতে প্রাইজ পেয়েছে…

বল কী গুণাবলি তো ঝরে ঝরে পড়ছে।

ঠাট্টা করছিস?

ঠাট্টা করব কেন?

যার যে সম্মান প্রাপ্য তাকে সে সম্মানটা দিতে হয়। মেয়েটাকে তুই সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে পারছিস এটাই তোর ভাগ্য।তুমি যে সব কথা বলছি আমার তো খালা ভয় ভয় লাগছে আমি মেয়েটার প্ৰেমে পড়ে যাব।খালা গম্ভীর গলায় বললেন—তোর সেই ভয় নেই। আমি ভয় পাচ্ছি মেয়েটাকে নিয়ে। অতি নরম মনের মেয়ে তোর পাগলামি দেখে তার মাথা আউলায় যেতে পারে। মেয়েটার মাথা আউলায় এমন কিছুই করবি না। খবরদার।

অবশ্যই করব না।খালা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে বললেন– আমি চাচ্ছি। খুব ভালো কোনো ছেলে পেলে মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে দিতে। ওর মার উপর আমার আর ভরসা নেই? তোর সন্ধানে ভালো ছেলে আছে নাকি রে? ভালো ছেলে অবশ্যই আছে। তবে গাঁজাখোর টাইপ। অন্তর অত্যন্ত ভালো তবে গাঁজা টাজা খায়…

খালা বড় করে নিশ্বাস নিলেন। কঠিন ধমক দেওয়ার প্রস্তুতি। ধমক দিতে পারলেন না–তার আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে আশা উপস্থিত হয়েছে। একটু আগের আশার সঙ্গে এই আশার কোনো মিল নেই। কোথায় আগরতলা কোথায় চকিরতলা টাইপ বেমিল। জিনসের প্যান্ট, লাল শার্ট। মাথায় ক্রিকেটারদের টুপির মতো টুপি। তবে টুপির রং সাদা না, নীল। পিঠে হ্যাভারস্যাক ব্যাগ। চুলেও মনে হয় কিছু করেছে যে কারণে বাঙালি মেয়ে বলে এখন আর তাকে মনেই হচ্ছে না। আশা আমার দিকে তাকিয়ে ইংরেজিতে—Let us move.

আমি খালার দিকে তাকিয়ে মোটামুটি খুদিরামের মতো বললাম—বিদায় দে খালা ঘুরে আসি।আশা শোন, আমরা বাংলাদেশ দেখতে বের হয়েছি। অনেক কিছুই আমি তোমাকে দেখাব। তুমি নোট করবে, ছবি তুলবে, চিন্তা-ভাবনা করবে। এর থেকে এক সময় হয়তো তুমি বাংলাদেশ বের করে ফেলতে পারবে।আশা বলল, আপনি শিক্ষকের মতো কথা বলছেন কেন? সাধারণভাবে কথা বলুন।

আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমাকে নিয়ে ক্লাস করতে বের হয়েছেন।ক্লাস করতে বের হয়েছি তো বটেই। আশা শোন একজন পেইন্টারের কথা ভাব। এই পেইন্টারের হাতে সাতটা রঙ আছে। পেইন্টার সাতটা রঙ দিয়ে ছবি এঁকেছেন। মনে করা যাক এই সাতটা রঙের মধ্যে একটা বিশেষ রং হল বাংলাদেশ। মনে করা যাক সেই বিশেষ রংটা লাল; আমার কথা কি ফলো করছ? অবশ্যই করছি?

পেইন্টার ছবি আঁকতে গিয়ে অনেক রঙের সঙ্গে লাল রংটাও ব্যবহার করবেন। কখনো এই রং নীলের সঙ্গে হবে খয়েরি, কখনো সবুজের সঙ্গে মিশে নীল। তোমাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে পেইন্টিং থেকে লাল রং আলাদা করতে হবে। বের করতে হবে কোথায় কোথায় লাল রং অর্থাৎ বাংলাদেশ আছে। কাজটা সহজ না।

আপনার বক্তৃতা কি শেষ হয়েছে?

হ্যাঁ শেষ হয়েছে।

প্ৰথমে আমরা কী দেখতে যাচ্ছি।

প্ৰথমে আমরা শশা খাওয়া দেখব।

শশা খাওয়া দেখব মানে? শশা কি?

শশার ইংরেজি আমি যতদূর জানি কুকুমবার। আমরা সেই কুকুমবার খাওয়ার দৃশ্য দেখব।বাংলাদেশে এই শশা কি বিশেষভাবে খাওয়া হয়? চল গিয়ে দেখি কীভাবে খাওয়া হয়। তারপর তুমিই বের করবে। এর কোনো বিশেষত্ব আছে কি না।আমি আপনার কথাবার্তা কিছুই বুঝতে পারছি না; আমার ধারণা। আপনি গাইড হিসেবে কাজ করতে পারবেন না। You are trying to be funny কিন্তু I mean busincss. আমি তাকে গুলিস্তানের সামনে নিয়ে এলাম; এখানেই শশা কেটে কেটে বিক্রি হচ্ছে। লোকজন খাচ্ছে। আমি বললাম, আশা শশা খাওয়া দেখলে?

হ্যাঁ দেখলাম।

মনে হচ্ছে দৃশ্যটা দেখে তেমন মজা পাও নি।

মজা পাওয়ার কী আছে?

কিছুই নেই?

না কিছুই নেই। একটা লোক খুবই নোংরা পানিতে শশাটা ধুচ্ছে তারপর পিস করে লবণ মাখিয়ে খেতে দিচ্ছে। এর মধ্যে দেখার কী আছে? আমি হাসলাম। আশা বলল, হাসছেন কেন?

আমার মনে হল মেয়েটা রেগে যাচ্ছে। শুরুতে মেয়েটিকে অশ্রুকন্যা বলে মনে হয়ছিল। এখন মনে হচ্ছে সে অশ্রুকন্যা না।আশা বলল, কিছু মনে করবেন না। শশা খাবার দৃশ্য দেখা হয়েছে এখন আমি ঘরে ফিরে যেতে চাই। Enough is enough.

 

Read more

তোমাদের এই নগরে পর্ব:০৪ হুমায়ূন আহমেদ

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *